বাংলাদেশ সরকারের ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-শিক্ষামন্ত্রী

যবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেছেন, দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে। তবে বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, জ্বালানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ অনেক কিছুরই ভিত্তি রচনা করে দিয়ে গেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন হওয়ার পর যে ৩ বছর ৭ মাস সময়ে তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রুপরেখা তৈরি করে দেন।
শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণের দিনব্যাপী কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি এসব কথা বলেন। কর্মসূচির শুরুতে শিক্ষামন্ত্রী যবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপরে তিনি শেখ রাসেল জিমনেসিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক মদিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন হওয়ার পর যে ৩ বছর ৭ মাস সময় পেয়েছেন সে সময়ে তিনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রুপরেখা তৈরি করে দেন। সংবিধানে চার মূলনীতি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এর কোনটিই বিদেশ থেকে ধার করা নীতি ছিল না। সবই ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, এই মাটি ও সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে তৈরি করা। বঙ্গবন্ধু পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদীদের বিরুদ্ধে যে বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন, তা যদি আজ বাস্তবায়ন হতো তাহলে আজ বাংলাদেশ তথা বিশ্বের চেহারা বদলে যেতো। কিন্তু পাকিস্থানি ও তাদের দোসররা তা মেনে নিতে পারেনি, যার কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু সহ তার পরিবারকে হত্যা করা হয়।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ডা. দীপু মনি এমপি বলেন, ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য যারা কুম্ভিরাশ্রু বিসর্জন দিচ্ছে, নিজে যারা আজ মানবাধিকারের কথা বলছে, যারা আজ গণতন্ত্রের কথা বলছে তারাই গণতন্ত্রের হত্যাকারী, তারাই মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লংঘনকারী, নিকৃষ্ট লঙ্ঘণকারী। আমরা কি তাদের মায়া কান্নায় ভুলব? না দেশ যে এগিয়ে চলেছে, তা অব্যাহত রাখব। আমরা কী একদিনে একশ সড়ক উদ্বোধন চাই? একদিনে একশ সেতু উদ্বোধন চাই? না কি পাঁচশ বোমা চাই? সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে। আমি আশা করি, আমরা সকলেই ভাববো, চিন্তা করবো এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেব। আমরা নিশ্চয় উন্নয়নের পথে হাঁটবো, মানবাধিকারের পথে হাঁটবো, স্বাধীনতার পক্ষে হাঁটবো এবং নিশ্চয় নৌকার পক্ষে রায় দেব। যে নৌকা আমাদের ভাষার অধিকার দিয়েছে, যে নৌকা আমাদের গণতন্ত্র, উন্নয়ন দিয়েছে। আমরা তাকে নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাব। আসুন একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি। জাতির পিতার শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণের মতো ব্যতীক্রম আয়োজন করায় যবিপ্রবিকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এরপর ডা. দীপু মনি যবিপ্রবির ডা. এম আর খান মেডিকেল সেন্টারে যান। তিনি সেখানে কয়েক জন রোগীকে দেখে ব্যবস্থাপত্রও দেন।
সভাপতির বক্তব্যে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে, বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ শোধ করতে যবিপ্রবি পরিবার সব সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথেই থাকবে। এ ধরনের আয়োজন যবিপ্রবি অব্যাহত রাখবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে, বক্তব্য দিয়েছেন তার তীব্র নিন্দাও জানান তিনি। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে যাঁরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান যবিপ্রবি উপাচার্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. এইচ এম আহসান হাবীব, যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় একটি শিশুর আঁকা ছবি শিক্ষামন্ত্রীকে তুলে দেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গালিব। অনুষ্ঠানে যবিপ্রবির ডিন ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, ড. মো. মুনিবুর রহমান, ড. মো. তানভীর ইসলাম, ড. মো. হাফিজ উদ্দিন, ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, যশোর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অমল কুমার বিশ্বাস, যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা, সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সালসহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, দপ্তর প্রধানসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ আশরাফুজ্জামান জাহিদ।
এই হেলথ ক্যাম্পে বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ৬০ জন ডাক্তার প্রায় দুই হাজার রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেন। একই সঙ্গে কমিউনিটি সার্ভিসের অংশ হিসেবে বিশ^বিদ্যালয়ের আশপাশের অসহায়, দুস্থ ও পিছিয়ে পড়া ৫০০ জনকে বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, পপুলার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, একমি ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, এসিআই ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, ডিবিএল ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, বিলিভ পিটিই লিমিটেড, সিঙ্গাপুর, অপসোনিন ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড, এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড ও ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড রোগীদের বিনামূল্যে ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করে এবং বিআরবি হসপিটালস লিমিটেড রক্তসহ বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে সহযোগিতা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনে তিনটি মডেল ফার্মেসী স্থাপনের মাধ্যমে রোগীদের ঔষধ সরবরাহ করে এবং নানা ধরনের পরামর্শ দেয়।
রাবির অভ্যুদয় সংগঠনের উদ্যোগে গরীব-অসহায় মানুষকে খাবার বিতরণ

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববদ্যালয়ের (রাবি) অভ্যুদয় সংগঠনের প্রথমবারের উদ্যোগে গরীব নারী ও শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। শনিবার (১৯ আগস্ট) রাজশাহীর পদ্মা ঘেঁষা ফুলতলা এলাকায় ৫০ জন অসহায় মানুষকে খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেন তারা ।
অভ্যুদয় একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ১১ জন সদস্য নিয়ে ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই এটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। অভ্যুদয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো মানবতার উন্নয়নে কাজ করা, মানবিকবোধের সৃষ্টি, সুন্দর সমাজ গঠনের প্রচেষ্টা ও অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোটানো।
এবিষয়ে অভ্যুদয়ের সভাপতি সৌমেন চক্রবর্তী বলেন, আমাদের এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য অসহায় মানুদের সহযোগিতা করা। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী। যার যতটুকু সামর্থ্য আছে সেই অনুযায়ী নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যাবো। আজকের এই কার্যক্রম দিয়ে আমাদের সংগঠনের পথচলা শুরু। মানুষদের জন্য কাজ করে এবং অসহায় মানুষদের পাশে দাড়িয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। ভবিষ্যতে এরকম কাজ আমরা চালিয়ে যাবো এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
এছাড়া অভ্যুদয়ের অন্যান্য সদস্যারা হলেন, সহ সভাপতি সিদরাতুল মুনতাহা ও ইসরাত জাহান তন্বী, সাধারণ সম্পাদক হুসাইন আলমাস আপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কমলেশ রয়, সাংগঠনিক সম্পাদক তামান্না আক্তার ও আররাফি সিরাজী অন্তর, তথ্য ও প্রচার বিষয়ক সম্পাদক সামিহা মেহজাবিন প্রাপ্তি, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক এস এম সিদ্দিকুর রহমান ও উপ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ইসরাত জাহান অবণী।
জাবিতে ঢালাইয়ের সময় নির্মাণাধীন মসজিদের ছাদ ধস

জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম-বরকত ও আ. ফ. ম. কামালউদ্দিন হল সংলগ্ন নির্মাণাধীন মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের সময় ধসে পড়েছে। শনিবার (১৯ আগস্ট) সকালে ঢালাইয়ের কাজ শুরুর কিছুক্ষণ পরেই এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঢালায়ের কাজ চলার সময় কংক্রিট মিক্সার ঢালার পর ভাইব্রেট করতে গেলে ছাদের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশের সাটারিং ধসে পড়ে যায়। এর প্রেক্ষিতে শ্রমিকরা কাজ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ। পরে খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম এবং ওই দুই হলের প্রাধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
নির্মাণশ্রমিক মো. জামাল বলেন, কংক্রিট ঢালার পর ভাইব্রেট করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। বৃষ্টির কারণে সাটারিংয়ের কাজ ড্যামেজ হয়ে গেছে। এজন্য এটি কংক্রিটের ভার নিতে পারেনি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার ও মসজিদ তদারক কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিক মিটিংয়ে সম্পূর্ণ ছাদের সাটারিং খুলে আবার নতুন করে লাগানোর সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান মসজিদটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফরমিলা আক্তার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দাইয়ান বিন শাহজাহান।
তিনি বলেন, 'সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ দুই হলের প্রাধ্যক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সাথে আমাদের মিটিং হয়। মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুরো ছাদের শাটারিং খুলে নতুন করে লাগাতে হবে এবং পরে কাজ শুরুর করার কথা বলা হয়।'
ছাদ ধসে পরার কারণ জানতে চাইলে দাইয়ান বলেন, 'সাটারিং করার পর টানা ১০ দিন বৃষ্টি হয়েছে। এর কারণে পানি জমে কাঠ ভিজে ছিল আর পেরেকের সাথে কাঠের জোড়া লাগানো অংশ ফাঁকা হয়ে থাকতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি। আর এ কারণেই এই ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে।'
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আ.ফ.ম. কামালউদ্দিন হলের প্রাধ্যক্ষ আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, উপাচার্য স্যারসহ আমরা কয়েকজন আজ সকালে ধসে পরা ছাদ পরিদর্শন করেছি। তাদেরকে আবার নতুন করে কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে।'
মশাদের দখলে জবি ক্যাম্পাস, দায়সারা প্রশাসন

সাকিবুল ইসলাম, জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বেড়ে চলেছে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি। অপরিচ্ছন্ম ক্যাম্পাস আর নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থায় পানি জমে পুরো ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে এডিস মশা আর ডেঙ্গুর হটস্পট। বিভিন্ন স্থানের জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবৃদ্ধি করার ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নিয়মিতই শিক্ষার্থীরা ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও এখনও মশা নিধনে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুধুমাত্র সিটি কর্পোরেশনের দিনে একবার ফগার মেশিনে দিনে মশার ওষুধ ছিটিয়েই দায় সারছে প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের নাজেহাল ড্রেনেজ ব্যবস্থায় জমে থাকা পানিতে বংশবিস্তার করছে এডিস মশা। নতুন একাডেমিক ভবনের পেছনে, প্রশাসনিক ভবনের পাশের ড্রেনে, বিজ্ঞান অনুষদ ও ডরমিটরির রাস্তার পাশের ড্রেনগুলোতে পানি জমে থাকায় সেখানে মশা জন্মাচ্ছে। এছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানের ময়লা আবর্জনা ও প্লাস্টিক বর্জ্যে বৃষ্টির পানি জমে থাকছে। কলা অনুষদ ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন স্থানেও দেখা যায় জমে থাকা পানি। বোটানিক্যাল গার্ডেনের ড্রেন ও এর পাশে জমে থাকা আবর্জনা এবং মুজিব মঞ্চের পিছনেও জমে রয়েছে পানি। এসব স্থানে জমে থাকা পানিতে সহজেই বংশবৃদ্ধি করছে এডিস মশা। আর তা পরিণত হচ্ছে মশার আতুড়ঘরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এ পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি থাকলেও নিয়মিত কার্যক্রম না থাকায় তা কাজে আসছেনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন প্রায় ২৫০-২৮০ জনের মতো শিক্ষার্থীমেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা ও ওষুধ নিতে আসছেন। এর মধ্যে প্রায় ২০০-২৫০ জনেরই ডেঙ্গু উপসর্গ থাকছে। এদের মধ্যে অনেকেই ডেঙ্গু পজেটিভ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ৩ আগস্ট নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রুদ্র চন্দ্র সরকার মারা যান। এছাড়াও প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ছাত্রীহল ও আশপাশের মেসেও। কেউ কেউ সুস্থ হয়ে উঠছেন আবার কেউ কেউ সুমনা, ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই এখনও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত থাকায় চলমান ক্লাস-পরীক্ষায়ও অংশ নিতে পারছেন না।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে মশা বংশবৃদ্ধির সুযোগ পেলেও প্রশাসন তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। দিনে একবার করে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও তা যথেষ্ট নয় বলেই এত মশার উপদ্রব হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও নিয়মিত ডাস্টবিন ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজুম মনিরা বলেন, বর্তমান হালকা বৃষ্টি হচ্ছে আর এতে মশাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনও তো ক্লাসের মধ্যেও মশা কামড়ায়। মশার যন্ত্রণায় সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে বসে থাকাও দায়।
গণিত বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী চয়ন কৃষ্ণ বলেন, ক্যাম্পাস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা টা জরুরী। ক্যাম্পাস এখন মশাদের দখলে চলে গেছে। আমাদের নিজেদের সচেতন থাকার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টিও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যেন মশা বংশবৃদ্ধি ঘটাতে না পারে।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নিশাত আরা মজুমদার বলেন, বাইরে ডেঙ্গু টেস্ট করালে ১ হাজার টাকা খরচ হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীরা ফ্রি তে টেস্ট করাতে পারছে। আমাদের মেডিক্যাল সেন্টারেও এমন ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মিতা শবনম বলেন, জ্বর নিয়ে অনেকেই আসছেন। তাদেরকে ডেঙ্গু টেস্ট করানোর পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকেই ডেঙ্গু পজেটিভ হয় কিন্তু পরবর্তীতে মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসে না বলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের কেয়ারটেকার শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী রেজিস্ট্রার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্ন কর্মীর সংকট আছে। হল উদ্বোধনের পর যে কয়েকজনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের স্থানে নতুন নিয়োগ হয়নি। কর্মী সংকটের পাশাপাশি ময়লা ফেলার পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রেনগুলোর ভেতর দিয়ে গ্যাস ও পানির লাইন নিয়ে পরিষ্কার করার ব্যবস্থাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবুও আমরা নিয়মিত ময়লা পরিষ্কার করি।
ড্রেন সংস্কারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ড্রেন পরিষ্কার করার কাজ পরিচ্ছন্নতা কমিটির। ড্রেন পরিচ্ছন্নতা কমিটি ও কেয়ারটেকার শাখার কাজ ড্রেন পরিষ্কার করা। ক্যাম্পাসের দেয়াল ঘেঁষা ড্রেনগুলো ঢেকে অনেক কর্মচারীরাই বসবাস করছেন। এজন্য সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতা কমিটির আহবায়ক এবং ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, সারা বাংলাদেশে ডেঙ্গুর অবস্থা এখন অনেক খারাপ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বাহিরে নয়, আমরা সিটি কর্পোরেশনের সাথে কথা বলে আগে যে হারে ডেঙ্গু লার্ভা ধ্বংস করার জন্য ওষুধ দেয়া হতো তার চেয়ে বেশি হারে যেন ওষুধ ছেটানো হয় সেই কথা বলেছি।
পরিচ্ছন্নতা কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি কর্মকর্তা ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ কামাল হোসেন সরকার বলেন, সিটি করপোরেশনের সহায়তায় ক্যাম্পাসে মশার লার্ভার ওষুধ দিচ্ছি এবং ধোঁয়া স্প্রে করছি। এছাড়া ক্যাম্পাস পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নেয়া হবে।
ইবির মার্কেটিং বিভাগের নতুন সভাপতি সাদিকুল আজাদ

ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মার্কেটিং বিভাগের নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক মোঃ সাদিকুল আজাদ। শনিবার (১৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ. এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক জনাব শাহ আলম কবির প্রামানিক-এর সভাপতির মেয়াদ গত ১৭ আগষ্টে শেষ হওয়ায় মার্কেটিং বিভাগের পরবর্তী সিনিয়র শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক জনাব মোঃ সাদিকুল আজাদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম সংবিধির সংশোধিত ১০ (১) ধারা মোতাবেক ১৮ আগষ্ট থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিয়োগ করা হলো। এ দায়িত্ব পালনকালে তিনি নিয়মানুযায়ী সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন।
এ বিষয়ে নতুন সভাপতি সহকারী অধ্যাপক মো. সাদিকুল আজাদ বলেন, মার্কেটিং বিভাগকে একটি ডায়নামিক ডিপার্টমেন্ট হিসেবে রূপান্তর করতে চাই। বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা পেলে বিভাগের ভিশন ও মিশন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবো বলে প্রত্যাশা করছি।
মন্তব্য