সাত কলেজ নিয়ে হচ্ছে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে এর কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
রোববার (১৬) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইউজিসি ভবনে শিক্ষার্থীদের ৩২ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রতিনিধি দলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। তাদের মধ্যে ১৭ জন ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সি’ নামের পক্ষে ছিলেন, অন্যরা ‘ফেডারেল ইউনিভার্সিটি’ নাম প্রস্তাব করেন। পরে ইউজিসির পরামর্শে শিক্ষার্থীরা নিজেরা আলোচনা করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে একমত হন।
এর আগে, গত ১৩ মার্চ ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক মো. জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সাত কলেজের জন্য স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের কাঠামো নির্ধারণ এবং নামকরণের বিষয়ে মতবিনিময় সভার ঘোষণা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং সরকারি বাঙলা কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে এই সাত কলেজ স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কাঠামোর অধীনে পরিচালিত হবে।
মাভাবিপ্রবি যেন মশার রাজ্য

মো.জাহিদ হোসেন: টাঙ্গাইলের অবস্থিত মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। আবাসিক হল, শ্রেণিকক্ষ, বিজয়াঙ্গন,ক্যাফেটেরিয়া খাবারের দোকানসহ সর্বত্র মশার উপদ্রব।
শিক্ষার্থীরা জানান, দিনের বেলায় ক্যাম্পাসে মশার প্রকোপ আগে থেকে অনেক বেড়েছে। এছাড়া বিকাল থেকে রাত অবধি ঝাঁকে ঝাঁকে মশার উৎপাতে শান্তিতে বসে থাকা যায় না। সন্ধ্যার পর পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে। আবাসিক হলগুলাতেও অবস্থা আরো বেশি খারাপ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো:হাবিবুল্লাহ বলেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় মশা বেড়েছে। ফলে শান্তিতে বসার মতো পরিস্থিতি নেই। টং দোকান, ক্যাফে, একাডেমিক ভবনের নিচতলা এবং এর উপরে সব জায়গাতেই মশা উৎপাত করছে। এটা একই সঙ্গে যেমন অস্বস্তির, তেমন ভীতিরও।
কয়েকমাস সারাদেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছিল চিকনগুনিয়া ও ডেঙ্গু আমাদেরকে অনেক ভুগিয়েছে। যদি আমরা সতর্ক না হই, মশা নিধন না করি, তাহলে মশাবাহিত রোগব্যাধি বেড়ে যেতে পারে।”কর্তৃপক্ষ কাজ করছে, তবে এটা কার্যকরী হচ্ছে না; এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের আরও জোড়ালো ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন এই শিক্ষার্থী।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তোয়ানূর নাহার রিয়া বলেন, “মশার উৎপাত বেড়েই চলেছে। এইভাবে চলতে থাকলে আমরা অসুস্থ হয়ে যাব। মশারী ছাড়া ঘুমানোটা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না।”একই কথা বলেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম হলের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য বনিকসহ আরও অনেকেরই।
ঐশ্বর্য বনিক বলেন, আগে মশা তেমন ছিল না, এখন অনেক বেড়েছে। মশারি আর কয়েল ছাড়া রুমে ঘুমানো যায় না। মশা কানের কাছে ভনভন করে। বিশেষ করে হলের নিচতলায় মশা তুলনামূলক বেশি।মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে বাধ্য হয়ে মশারি টাঙিয়ে পড়াশোনা করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, স্থিরভাবে বসাই যায় না, একটু বসলেই মশার কামড়।
এ কারণ হিসেবে ক্যাম্পাসের ময়লা আবর্জনাকে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।
মশকনিধনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না অভিযোগ করে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, যত্রতত্র বেড়ে ওঠা ঝোপঝাড় ও আগাছা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পয়োনিষ্কাশনের নর্দমা ও ময়লা ফেলার জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার না করা এবং মশকনিধনে ওষুধ না ছিটানোয় মশার উপদ্রব বাড়ছে।
সমাপ্তি খান নামের একনারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশাসনের অবহেলা ও অসচেতনতার কারণেই মশার উপদ্রব বেড়েছে। হলরুম, লাইব্রেরি কিংবা আড্ডার স্থান কোথাও মশা থেকে রেহাই নেই। যেখানেই যাই চারিদিকে শুধু মশা আর মশা।
শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো:আসিফ হোসেন বলেন, ‘মশার লার্ভা নিধনে হলে এ পর্যন্ত একবারও ফগার মেশিন ব্যবহার করতে দেখি নাই । সন্ধ্যার পর কয়েল ছাড়া কক্ষে টেকাই যাচ্ছে না।’
সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, দিনের বেলা কম হলেও সন্ধ্যা নামার আগে আগে মশার উৎপাত ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সন্ধ্যার পর মুক্তমঞ্চ, সেন্ট্রাল ফিল্ড ও তৃতীয় একাডেমিক সহ ক্যাম্পাসের কোথাও বসা মুশকিল। ক্যাম্পাসের হল গুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা অনেক খারাপ,নোংরা পানি জমে রয়েছে । এছাড়া ক্যাম্পাসে যত্রতত্র ময়লা-আর্বজনার স্তূপের কারণেই মশার প্রকোপ বাড়ছে।হলের চারপাশ ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ঝোপঝাড় তো রয়েছে। মশা নিধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশেষ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
মশক নিধনে কি কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের পরিচালক ড. মোঃ আশরাফ আলী আমাদের জানান, বিশ্ববিদ্যালয় একটি খোলামেলা জায়গা চারদিকে খাল বেষ্টিত যা সচল নহে, এখানে পশু হাসপাতালসহ খাল সংলগ্ন অত্র এলাকার জনসাধারণ ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে মশার উৎপত্তি হয় তাছাড়াও বর্তমানে আবহাওয়াগত সিজনাল কারণে সারা বাংলাদেশে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। তদুপরি পৌরসভা জনবলের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে ক্যাম্পাসে মশা মারার স্প্রে করা অব্যাহত আছে। এছাড়াও এস্টেট অফিসের উদ্যোগে পৌরসভার জনবল দিয়ে বিভিন্ন অফিস ও হলের চাহিদার প্রেক্ষিতে মশা ও অন্যান্য বিষাক্ত কীট পতঙ্গ নিধনের ওষুধ স্প্রে করা হয়। উল্লেখ্য যে এস্টেট অফিসের মশক নিধনে স্প্রে করার অভিজ্ঞ জনবল নেই।
সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের ইফতার

মুজাহিদুল ইসলাম, রাজশাহী কলেজ: রমজান মাস মানে রোজা রাখার প্রস্তুতির সঙ্গে নিজেদের দৈনন্দিন কার্যাবলির সময়সূচির মধ্যেও নানা পরিবর্তনের ছোঁয়া। তবে রমজান মাসের দিনগুলো পরিবার থেকে দুরে থাকা ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের জন্য কিছুটা ভিন্ন। পরিবার থেকে দুরে থাকার শূন্যতা যেমন রয়েছে, তেমনি ক্যাম্পাসে ইফতার আয়োজনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণের মানুষের একজনের সঙ্গে আরেকজনের সম্প্রীতির বন্ধনে সম্পর্ক হয়ে ওঠে ভ্রাতৃত্বের।
সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন কে অটুট রাখতে পবিত্র মাহে-রমজান উপলক্ষে রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ মার্চ) রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের মাঠে এই ইফতারির আয়োজন করা হয়। ছাত্রাবাস কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার মাধ্যমে ইফতারি আয়োজনটি সম্পূর্ণ হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন পর এই আয়োজনের মাধ্যমে সবাই একত্রিত হতে পেরে সবাই অনেক উৎসাহিত। এমন আয়োজন ছাত্রাবাসে অবস্থারত সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন বন্ধন তৈরি করবে। ভবিষ্যতে এমন আয়োজন বজায় থাকবে এটাই শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা।
দোয়া ও ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী, মুসলিম ছাত্রাবাসের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর মো. মনিরুল ইসলামসহ দায়িত্বরত শিক্ষকরা।
১৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের সময় বাড়লো ১৭ মার্চ পর্যন্ত

মো. জাহিদ হোসেন, মাভাবিপ্রবি প্রতিনিধি: দেশের ১৯ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে জিএসটি অ্যাডমিশন সিস্টেম বা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের সময় আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনপত্র সোমবার দিবাগত রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত পূরণ করতে পারবে। গুচ্ছ ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আখন্দ আমার সংবাদকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আজ (শনিবার) বিকাল ৩ টায় জুম মিটিং এ গুচ্ছ অধিভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সাথে আলোচনা করে ২ দিন সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
গত ৫ মার্চ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। গুচ্ছ ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন পত্র গ্রহণের সময়সীমা ছিল ১৫ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার জন্য ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও সমমান এবং ২০২৩ ও ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান, ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (ভোকেশনাল), 'এ' লেভেল এবং অন্যান্য সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে।
মানবিক ও বাণিজ্য শাখা থেকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে যথাক্রমে 'এ', 'বি' ও 'সি' ইউনিটে আবেদন করতে পারবে।
আগামী ২৫ এপ্রিল 'সি' ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ১৯বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। এরপর ২ মে 'বি’ ইউনিটের (মানবিক) এবং ৯ এপ্রিল 'এ' ইউনিটের (বিজ্ঞান) শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দিবে।
উল্লেখ্য, জিএসটি অ্যাডমিশন সিস্টেম বা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হলো বাংলাদেশের একটি বার্ষিক সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি। গুচ্ছ পদ্ধতির মাধ্যমে দেশের ৭ টি সাধারণ, ১১টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ১টি ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তির যোগ্যতা নিরূপণ করা হয়।
গুচ্ছ প্রক্রিয়া ছাড়াও দেশের ৭টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের জন্য পৃথক গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা এবং তিনটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়। ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের অধীনে পরিচালিত চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েট ছাড়াও কয়েকটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় এই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার আওতাধীন নয়।
সেদিন আছিয়াদের বাড়িতে কী ঘটেছিল, জানালেন সারজিস

ডেস্ক রিপোর্ট: ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া গত বৃহস্পতিবার মারা যাওয়ার পর তার জানাজা পড়তে মাগুরায় যান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। পরে সেখানে মোবাইলে নোটিফিকেশন চেক করেন সারজিস। আর এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে নেটিজেনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
আর এই বিষয়টি নিয়ে শনিবার দুপুরে সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেছেন। পোস্টটি দ্যা রাইজিং ক্যাম্পাস পাঠকদের হুবহু তুলে ধরা হলো।
সারজিস আলম তার পোস্টে লেখেন, চলেন সোজাসাপ্টা কিছু আলাপ করি। ওই যে- যেটা নিয়ে আপনারা আলাপ করছেন সেই ফুটেজ নিয়ে। বোন আছিয়ার সঙ্গে নৃশংস একটা ঘটনা ঘটলো। আমি আমার জায়গা থেকে সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনকে জানালাম দ্রুত আসামি গ্রেফতার করার কথা।
‘আবার- হাইকোর্ট থেকে ঘোষণা আসলো ১৮০ দিনের মধ্যে ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। আমি আমার জায়গা থেকে দায়িত্বশীল একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আমার মতামত জানালাম। ১৮০ দিন অনেক বেশি হয়ে যায়। এটা ১-২ মাসের মধ্যে করা উচিত। নাহলে মানুষের মাথা থেকে ঘটনাটা অনেকটাই মুছে যায় এবং সেই অপরাধের শাস্তি আদতে সমাজে অপরাধ দমনে তেমন প্রভাব রাখতে পারে না।’
তিনি বলেন, ব্যাপারটা এমন নয় যে আমি একাই জানিয়েছি কিংবা আমার জানানোর জন্যই গ্রেফতার হয়েছে বা আইন পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমার জায়গা থেকে মনে হয়েছে এটা আমার করা উচিত তাই আমি করেছি। তবে সে বিষয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি।
‘এরপর আছিয়াকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হলো। আমিও ঢাকা মেডিকেলে গেলাম। যখন জানলাম ICUতে আছে তখন আর ICUতে দেখতে যাইনি। কারণ বাইরে থেকে ICUতে দেখতে গেলে ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে। মেডিকেলের বাইরে থেকে খোঁজখবর নিয়ে চলে এসেছি। ছবি পোস্ট করিনি। ’
সারজিস আলম বলেন, এরপর যখন জরুরি অবস্থায় CMH নেওয়া হলো তখন সেদিনই সন্ধ্যায় নাগরিক পার্টির কয়েকজন সহ CMH গিয়েছি। সেখানেও ICUতে ছিল আছিয়া। দেখতে যাওয়া সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল বলে CMH এর সামনে থেকে ডিউটিরত ডাক্তারের সাথে কথা বলে সার্বিক খোঁজখবর নিয়ে বাসায় ফিরেছি। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি। এরপর CMH এ থাকা আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের থেকে খোঁজ নিয়েছি।
এনসিপির এই নেতা বলেন, সবশেষে যখন শুনলাম আছিয়া আর নেই তখন সিএমএইচে ছুটে গিয়েছি। সেনাবাহিনী, র্যাব থেকে পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত হেলিকপ্টারে যখনই একাধিক সিট খালি থাকার কথা শুনেছি তখনই মাগুরায় গিয়ে আছিয়ার জানাযায় অংশগ্রহণ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছি এবং জানাযা পড়ে আবার ঢাকায় ব্যাক করেছি।
‘এই পুরো ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ অংশটুকু আমি ফেসবুকে দিয়েছি এবং ফেইসবুকে দেয়া অংশটুকু কে ‘সামগ্রিক’ মনে করে মিডিয়া এবং কিছু পাবলিক জাজমেন্ট করা শুরু করলো ।’
তিনি আরও লেখেন, তার মানে আমরা যতটুকু সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা গণমাধ্যমে প্রকাশ করি ততটুকুই হচ্ছে বলে আপনারা মনে করেন এবং সেটাকে পুরো ঘটনা ধরে জাজমেন্ট শুরু করে। অর্থাৎ আপনারাও আসলে ফুটেজের দিকেই তাকিয়ে থাকেন । আবার যদি কোনো কিছু না দেই তখন মনে করেন কিছুই করা হয়নি ! কি অদ্ভুত !
উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, দিলে বলেন ফুটেজমুখী আর না দিলে বলেন কিছুই করেনি। আপনাদের এই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কবে একটা সিঙ্গেল স্ট্যান্ডার্ডে পরিণত হবে ?
আবার আরেকটা ঘটনা লক্ষ্য করেন। আছিয়ার জানাজা ছিল সন্ধ্যা সাতটায়। আমরা পৌঁছেছি সাড়ে পাঁচটায়। এই দেড় ঘন্টা একটা ওয়েটিং রুমে অপেক্ষা করেছি। তার মধ্যে কয়েক মিনিট হয়তো ফোনের নোটিফিকেশন চেক করেছি। ঠিক ওই সময়ে কেউ ছবি তুললো এবং কালের কন্ঠ একাধিক বারের মতো এবারও অপেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে তাদের অনলাইন পোস্টারে সেটা প্রকাশ করলো। পাশাপাশি এমনভাবে দেখালো যে আমরা মনে হয় পুরো সময় বসে শুধু ফোনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। চাইলেই কিন্তু তারা ওখানে বসে থাকার অন্য সময়ের নরমাল কোন ছবি ব্যবহার করতে পারতো। কিন্তু কিছু রিয়াকশন বেশি পাওয়ার আশায় সেটা তারা করেনি।
আচ্ছা নিজের বিবেককে জিজ্ঞাসা করেন- দেড় ঘন্টা কোথাও বসে থাকলে অন্তত কয়েক মিনিট আপনারা ফোনের নোটিফিকেশন চেক করতেন কিনা? যদি করেন তাহলে আপনাদের এই ভিউখোর মনোভাব বন্ধ হবে কবে? কবে পেশাদারিত্বের পরিচয় দেওয়া শুরু করবেন ?যোগ করেন সারজিস।
‘শুনেন, ঘরে বসে থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় জাজমেন্টের বড় বড় এনালাইসিস কপচানো যায়। কিন্তু যাদেরকে আপনারা সুযোগ পেলেই নানা বিশেষণে বিশেষায়িত করেন- যেকোনো ফরমেটে, যেকোনো সীমাবদ্ধতা নিয়েই হোক না কেন; দিনশেষে তারাই মাঠে দৌড়ায়। ’
‘এরপর থেকে অনলাইনে এসব এনালাইসিস দেওয়ার আগে অফলাইনে আমাদের জন্য অনুগ্রহ করে কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। আমরা আপনার ভালো কাজগুলো অনুসরণ করার অপেক্ষায় থাকবো।’
সবশেষ তিনি লেখেন-Take care.
মন্তব্য