ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে প্রক্টর বরাবর চবি সাংস্কৃতিক জোটের স্মারকলিপি প্রদান

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রী হেনস্তার প্রতিবাদে প্রক্টর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোট।
বুধবার (২১ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
সাংস্কৃতিক জোটগুলো হলো- অঙ্গন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি মঞ্চ, প্রথম আলো বন্ধু সভা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরায়ণ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদ, লোকজ সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে- সবিনয় নিবেদন এই যে, আমরা "চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোট" চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহের একটি সম্মিলিত পরিষদ ক্যাম্পাসে চলমান যৌন হয়রানি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতায় আমরা উদ্বিগ্ন। তার প্রক্ষিতে আমরা নিম্নলিখিত দাবিগুলো উত্থাপন করছি।
১.যৌন হরানিতে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।
২. ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
৩. শাটল ট্রেনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
৪. কাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৫. পুরো ক্যাম্পাসকে সিসি টিভির আওতায় আনতে হবে এবং তদারকি নিশ্চিত করতে হবে।
৬. পূর্বে সংগঠিত সকল অপরাধমূলক কার্যকলাপের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
রাবিতে ভর্তি পরীক্ষা, যানবাহন চলাচলে বিধিনিষেধ

আগামী ২৫ থেকে ২৭ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসময় ক্যাম্পাসে সুষ্ঠুভাবে চলাচলসহ ভর্তি পরীক্ষা সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষার দিন সকাল ৮টার পর ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ব্যক্তিগত গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন কাজলা ও বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করে মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কৃষি ও চারুকলা অনুষদে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্নুজান হল-বেগম খালেদা জিয়া হল-স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন-তুঁত বাগান সংলগ্ন রাস্তাটি চলাচলের জন্য উম্মুক্ত থাকবে। তবে, শারীরিক প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা সকল রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে।
এছাড়াও, সকাল ৮টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনমুখী সংলগ্ন সংযোগ সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল এবং অটোরিকসাসহ কোনো প্রকার যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত গাড়িসমূহ এই নির্দেশের আওতামুক্ত থাকবে।
২৫ থেকে ২৭ জুলাই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ তাদের ব্যক্তিগত গাড়িসমূহ পার্কিং এর জন্য সাবাস বাংলাদেশ ও জুবেরী ভবনের মাঠ ব্যবহার করবেন।
আগামী ২৫ থেকে ২৭ জুলাই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এসময় ক্যাম্পাসে সুষ্ঠুভাবে চলাচলসহ ভর্তি পরীক্ষা সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষার দিন সকাল ৮টার পর ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। ব্যক্তিগত গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন কাজলা ও বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করে মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। কৃষি ও চারুকলা অনুষদে যাওয়ার ক্ষেত্রে মন্নুজান হল-বেগম খালেদা জিয়া হল-স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন-তুঁত বাগান সংলগ্ন রাস্তাটি চলাচলের জন্য উম্মুক্ত থাকবে। তবে, শারীরিক প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা সকল রাস্তা ব্যবহার করতে পারবে।
এছাড়াও, সকাল ৮টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনমুখী সংলগ্ন সংযোগ সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল এবং অটোরিকসাসহ কোনো প্রকার যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত গাড়িসমূহ এই নির্দেশের আওতামুক্ত থাকবে।
২৫ থেকে ২৭ জুলাই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ তাদের ব্যক্তিগত গাড়িসমূহ পার্কিং এর জন্য সাবাস বাংলাদেশ ও জুবেরী ভবনের মাঠ ব্যবহার করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ ভর্তি পরীক্ষার দিনগুলোতে তাদের আবাসিক এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কাজলা গেট ব্যবহার করতে পারবেন এবং বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্যারিস রোড হয়ে মেইন গেট এবং রোকেয়া হলের পেছনের রাস্তা (ফ্লাই-ওভার সংলগ্ন) ব্যবহার করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকলের একান্ত সহযোগিতা আশা করেছে।
মাদ্রাসায় সহকারি মৌলভী নবসৃষ্ট পদে চাহিদা দিতে সমস্যা নেই

বেসরকারি মাদ্রাসায় সহকারি মৌলভী নবসৃষ্ট পদে চাহিদা দিতে সমস্যা নেই বলে জানিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সহকারি মৌলভী পদের চাহিদা দেওয়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিয়ে স্মারকলিপি জমা দিতে গেলে প্রার্থীদের এ কথা জানায় এনটিআরসিএ’র কর্মকর্তা।
সহকারি মৌলভী নিবন্ধনদারী শিক্ষকদের পক্ষে মো. ইকবাল হোসেন এই স্মারকলিপি জমা দেন।
মো. ইকবাল হোসেন বলেন, অনেক মাদ্রাসা সুপার সহকারি মৌলভীর নবসৃষ্ট পদের চাহিদা প্রদানে অনিহা প্রকাশ করছে। আবার অনেকে ইচ্ছে করে চাহিদা দিচ্ছে না। নবসৃষ্ট পদের চাহিদা দেওয়া যাবে কিনা বা চাহিদা দিলে এমপিও এ কোন সমস্যা হবে কিনা এমন নানা কারণে তারা চাহিদা দিচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা এনটিআরসিএতে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। এনটিআরসিএ’র কর্মকর্তারা আমাদের জানিয়েছেন, সহকারি মৌলভীর নবসৃষ্ট পদের চাহিদা দিতে সমস্যা হবে না। পরবর্তীতে এমপিওভুক্ত হতেও সমস্যা হবে না।
এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান বরাবর জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে প্রার্থীরা জানিয়েছেন, ‘‘সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদরাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা -২০১৮ (২৩ নভেম্বও ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ী প্রত্যেক মাদ্রাসার দাখিল স্তরে সহকারি মৌলভী ১টি নবসৃষ্ট পদসহ মোট ৪টি 'সহকারী মৌলভী' পদ নির্ধারণ করা হয়েছে। যা কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের রাজস্ব বাজেট শাখা থেকে ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ইং তারিখে প্রকাশ করা হয়।
সেখানে সুস্পষ্টভাবে ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে সহকারি মৌলভী নবসৃষ্টপদে চাহিদা প্রদান ও এমপিও হওয়ার ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু কতিপয় প্রতিষ্ঠান প্রধান এ বিষয়ে উদাসীনতা প্রদর্শন করছেন। সহকারি মৌলভী’ পদের নবসৃষ্ট পদসহ মোট ৩+১=৪টি শূন্য পদের চাহিদা প্রদান করে শিক্ষক সংকট দূর করে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার স্বাভাবিক গতি বজায় রেখে বর্তমান সরকারের কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার আধুনিকায়নে যেসকল প্রতিষ্ঠান প্রদান ভূমিকা রাখবেন না উনারা মূলত সরকারেরই বিরোধিতা করার শামিল।
উক্ত বিষয়ে সারাদেশের বিভিন্ন মাদরাসার প্রধানদের সাথে কথা বলে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়। বেশিরভাগ মাদরাসার প্রধানরা বলছেন যে, উনারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। এমন জবাব দেওয়ায় অনেকেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আবার অনেকই বলছেন যে, এখন চাহিদা দিলে এমপিও হতে সমস্যা হবে। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে ২০১৮ সালের সংশোধিত এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সহকারি মৌলভী মোট পদসংখ্যা ৪টি। তাই ১টি নবসৃষ্ট পদ প্রদান করলে এতে এমপিও হতে কোন সমস্যা নেই।
আবার অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে চাহিদা প্রদান না করে বিভিন্ন কলাকৌশলে কিংবা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে নিজেদের পছন্দমত প্রার্থীকে নবসৃষ্ট পদে এমপিও করিয়ে দিতে চেষ্টা-তদবীর চালানোর অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।’’
তাদের দাবি সমূহ ১. প্রতিষ্ঠানের কমিটি না থাকলে বিকল্প ব্যবস্থায় যাতে চাহিদা দিতে পারে তার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা। ২. নবসৃষ্ট পদ মানেই এমপিও পদ, এ পদে চাহিদা দিলে কোন সমস্যা হবেনা। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দ্বিধা থাকার অবকাশ নেই। ৩. সহকারি মৌলভী নবসৃষ্ট পদসহ মোট ৪টি শূন্য পদের চাহিদা প্রদান নিশ্চিত করা।
ভর্তিতে বয়স কেন বাধা হবে?

বাংলাদেশে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স বেঁধে দেয়া আছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও এটি নির্ধারণ করা আছে। শিক্ষামন্ত্রী মনে করেন ভর্তিতে বয়সের বাধা থাকা উচিত নয়। আর বিশ্লেষকেরা পুরোপুরি একমত নন।
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতে হলে ছয় বছরের বেশি বয়স হতে হবে। পরে এটা আরো সংশোধন করে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বয়স বেঁধে দেয়া হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। সেই অনুযায়ী দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য বয়স সাত বছরের বেশি, তৃতীয় শ্রেণিতে আট বছরের বেশি, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১১ বছরের বেশি, সপ্তম শ্রেণিতে ১২, অষ্টম শ্রেণিতে ১৩ ও নবম শ্রেণিতে ভর্তির ন্যূনতম বয়স ১৪ বছর বেঁধে দিয়েছে সরকার।
এই নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তির বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বিদ্যালয়গুলো নির্ধারণ করবে। প্রচলিতভাবে স্কুলগুলো সর্বনিম্ন বয়সের সাথে এক থেকে দেড় বছর যোগ করে ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করে।
অন্যদিকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তির জন্য বয়স সীমা বলে দেয়া না হলেও নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্যই ভর্তির সুযোগ থাকে। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পাস করার পরের ভর্তি পরীক্ষায়ই অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ারও সুযোগ নেই। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যার যার মতো সিদ্ধান্ত নেয়। তবে দুইবারের বেশি ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ কোথাও নেই।
শিক্ষামন্ত্রী যা ভাবেন
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বুধবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘‘ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে অনেক কিছু করার আছে। সারা বিশ্ব যখন সুযোগ অবারিত করার কথা বলছে সবকিছুতে, যখন জীবনব্যাপী শিক্ষার কথা বলা হচ্ছে, তখন সব জায়গায় দেয়াল তোলা হচ্ছে কেন? কেন বলা হচ্ছে, এই বয়সের পর আর ভর্তি হতে পারবে না? কেন বলা হচ্ছে, একবারের পর আর ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে না? কেন বলা হচ্ছে, এ ধরনের পড়ার পর আর ওই ধরনের পড়ায় যেতে পারবে না? এটি বোধগম্য নয়। আজকে কেউ আইন নিয়ে পড়ছেন, তিনি কেন কাল ইঞ্জিনিয়ার বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হতে পারবেন না? যেকোনো শিক্ষায় যাওয়ার সুযোগটি অবারিত হতে হবে।''
তিনি উচ্চ শিক্ষায় আরো বেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পনা তৈরির আহ্বান জানান।
বিশ্লেষকেরা যা মনে করেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান মনে করেন শিক্ষামন্ত্রীর কথা শিক্ষার আদর্শগত জায়গা থেকে ঠিক আছে। শিক্ষার যেমন কোনো বয়স নেই। তেমনি ভর্তিরও কোনো বয়স থাকা উচিত নয়। তবে এটা প্রাথমিকে পুরোপুরি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিকে ভর্তির জন্য একটি বয়সসীমা থাকা দরকার। কিন্তু সেটা যেন এখনকার চেয়ে আরো শিথিল করা হয়। ছয় থেকে সাত বছরের মথ্যে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতেই হবে এরকম যেন না হয়। এই বয়স সীমা আরো বাড়িয়ে দিয়ে আরো একটু সহজ করা দরকার। নানা কারণে কোনো শিশু ওই বয়সে স্কুলে ভর্তি নাও হতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে একই শ্রেণিতে আবার বয়সের পার্থক্য যেন খুব বেশি না হয়। তবে প্রাথমিকে সর্বনিম্ন বয়স সীমা থাকতে হবে। তা না হলে শিশুদের খুব অল্প বয়সে স্কুলে পাঠানোর প্রবণতা তৈরি হতে পারে যা তাদের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য, যেখানে সবাই প্রাপ্তবয়স্ক সেখানে বয়স সীমা থাকার দরকার নেই।
তিনি বলেন, কেউ এইচএসসি পাশ করে পাঁচ বছর চাকরি করতে পারেন। তারপর তিনি উচ্চ শিক্ষা শুরু করতে পারেন। তাকে কেন সুযোগ দেয়া হবেনা? আবার কতবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবেন তা নির্ধারণ করাও ঠিক না। হয়তো আমরা টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এখন একবার এবং সর্বোচ্চ দুইবার সুযোগ দিচ্ছি। কিন্তু এই সুযোগ অবারিত থাকা উচিত।
তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য এবং অষ্ট্রেলিয়ায় এই বয়স সীমা নেই। অন্যদেশে থাকলেও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেক দেশেই নেই ।আবার অনেক দেশ আছে যেখানে স্কুলে পড়তেই হবে তা বাধ্যতামূলক নয়। শিক্ষার্থী তার মত করে পড়াশুনা করে সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন।
শিক্ষাবিদ ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ মনে করেন, প্রাথমিকে একই ধরনের বয়সের শিক্ষার্থী না হলে পড়াশুনা করানো সমস্যা। মানসিক দিকে দিয়েও শিশুদের সমস্যা হয়। আর উচ্চ শিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স বা সময়ের বাধা না থাকলে অসম প্রতিযোগিতা হবে। একজন পাঁচ বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেবেন। আরেকজন উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর দুই-তিন মাস সময় পাবেন ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য। তাহলে তো হয় না।
তার কথা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে অবশ্য বয়সের বা উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তির ব্যাপারে কড়াকড়ি কোনো নিয়ম নাই। যেকোনে বয়সে ভর্তি হতে পারেন। কিন্তু তাদের তো সম্পদ আছে। শিক্ষা অবকাঠামো আছে। সবাইকে তারা সুযোগ দিতে পারে। আমাদের তো সেই অবকাঠামো ও সম্পদ নাই।
তবে তার বিকল্প প্রস্তাব হলো, যদি কেউ উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর বিরতি দিয়ে উচ্চ শিক্ষায় ভর্তি হতে চান তাহলে বছর হিসেব করে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ নম্বর কেটে নিয়ে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেয়া যেতে পারে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমানের কথাও একই রকম। তার কথা, প্রথম শ্রেণিতে একটি ছয় বছরের বাচ্চা এবং একটি ১০ বছরের বাচ্চা একই সঙ্গে পড়াশুনা করলে নানা ধরনের সমস্যা হয়। আর বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য। যদি এটা তুলে দেয়া হয় তাহলে দেখা যাবে নিয়মিত ছাত্রদের সুযোগ কমে যাবে।
তিনি মনে করেন, যারা বেশি বয়সে পড়াশুনা করবেন। অনিয়মিতভাবে উচ্চশিক্ষা নেবেন তাদের জন্য এখন ওপেন ইউনিভার্সিটি আছে। এই ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনে আরো বাড়ানো যেতে পারে। সবাইকে যে কোনো বয়সে শিক্ষার সুযোগ দিতে হলে সেইভাবে অবকাঠামো ও শিক্ষক তৈরি করতে হবে।
মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, এটা অনলাইনেও হতে পারে। আর এখনকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অবকাঠামো ও শিক্ষক বাড়িয়ে আলাদা কোর্স চালু করতে পারে। [সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা]
৫২ উপজেলাকে গৃহহীন–ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে আরও ২৬ হাজার ২২৯টি জমিসহ ঘর হস্তান্তর করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়ালি এই ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের কাছে ঘরের দলিল ও চাবি হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি পাঁচ জেলার পাঁচটি স্থানের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।
দেশে একজন মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না’—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এর মাধ্যমে দেশের ৪৯২টি উপজেলার ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৪৫ জন মানুষ নিজের ঠিকানা পেল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবগুলো উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত উপজেলা হিসেবেও ঘোষণা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস গত সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে দেশব্যাপী মোট ৬৭ হাজার ৮০০টি ঘর দেওয়া হচ্ছে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি ৬৩ হাজার ৯৯৯ গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবার মাথার ওপর ছাদ পায়। আর প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে গত বছরের ২০ জুন ৫৩ হাজার ৩৩০টি পরিবার ঘর পায়।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ে সরকার ঘরগুলোকে অধিকতর টেকসই ও জলবায়ু-সহিষ্ণু করে গড়ে তুলতে নকশা পরিবর্তন করে। এতে ঘরগুলোর নির্মাণ খরচ বেড়ে যায়। এ জন্য এখন গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষেরা দুই শতাংশ জমির ওপর আরও উন্নতমানের টিনশেডের আধা পাকা ঘর পাচ্ছেন।
মন্তব্য