‘জিরো রিটার্ন’ জমা দিলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড: এনবিআর

‘জিরো রিটার্ন’ জমাদানকারী করদাতার পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। এমনটি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
রোববার (১০ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সবকটি তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ।
করদাতার জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নে তার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য দিলে বর্তমান আয়কর আইনের ৩১২ ও ৩১৩ ধারা অনুসারে করদাতাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
একই সঙ্গে, আয়কর আইন অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো প্রকার রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়কর আইন অনুসারে, একজন করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেন। সেখানে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে হয়
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচন : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে না। তফসিল ঘোষণার প্রায় দুই মাস আগে ভোটের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।
শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সিইসি। শুরুতে তিনি সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন। বিকালে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন তিনি।
সেখানে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানের চেয়ে আরো উন্নত করা হবে।
প্রয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের রদবদল করা হবে।’
মানুষের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ কমে যাওয়াকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা ফেরানো এখন সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) অপব্যবহারও বেড়েছে, যা নির্বাচনের জন্য নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন।
বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই তাদের সঙ্গেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করবে বর্তমান কমিশন।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দ্রুত নির্বাচন সম্পন্ন করার আগ্রহের প্রসঙ্গ টেনে সিইসি বলেন, ‘ভোটের সময় সাংবাদিকরা যেন অবাধে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন, সে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’
রংপুরে দিনব্যাপী নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে আগামীকাল তিন দিনের সফর শেষে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের।
নতুন ভোটার যুক্ত ৪৫ লাখ, বাদ ২১ লাখের বেশি

নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার হালনাগাদের জন্য সম্পূরক তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকা অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জন।
আজ রবিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
ইসি সচিব জানান, ২ মার্চের হিসেবে দেশে ভোটার সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। এরপর বাদ পড়া ভোটারদের তালিকাভুক্তির জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ চালানো হয়। এই হালনাগাদ প্রক্রিয়ায় নতুন ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জন, আর বাদ দেওয়া হয়েছে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জনকে। ফলে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে।
তিনি আরও জানান, সম্পূরক খসড়া তালিকা আজ নির্বাচন কমিশনের অফিসগুলোতে প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকা নিয়ে কোনো সংশোধনের প্রয়োজন হলে ভোটাররা তা জানাতে পারবেন এবং সংশোধনের পর ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা হবে। এছাড়া, চলতি বছর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যেসব ভোটার ১৮ বছর পূর্ণ করবেন, তাদের জন্য আলাদা একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে। সুতরাং এবারে মোট তিনটি ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচনে ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা ব্যবহার করবে পুলিশ

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করতে ৪০ হাজার বডি-ওয়্যার ক্যামেরা রাখবে পুলিশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্যামেরাগুলো সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ তৈয়ব আহমেদ।
শনিবার (৯ আগস্ট) ঢাকার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এই পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস চৌধুরী এবং ফয়েজ তৈয়ব আহমেদ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ক্যামেরা সংগ্রহের জন্য জার্মানি, চীন এবং থাইল্যান্ডের তিনটি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ। পুলিশ অফিসার এবং কনস্টেবলরা নির্বাচনের সময় ডিভাইসগুলো তাদের বুকে পরবেন।
ফয়েজ তৈয়ব আহমেদ বলেন, ৪০ হাজার বডি ক্যামেরা, যা সাধারণত বডিক্যাম নামে পরিচিত, সংগ্রহের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই ডিভাইসগুলো হাজার হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করবে।
পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিতে আগেভাগেই ক্যামেরাগুলো আনতে চায় সরকার। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ বলেছেন, ‘অক্টোবরের মধ্যে বডিক্যামগুলো সংগ্রহ করতে চাই। যেন পুলিশ বাহিনী এসকল বডিক্যামের এআই সক্ষমতাসহ মূল বৈশিষ্ট্যগুলির ওপর পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ পেতে পারেন।’
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এ সময় কর্মকর্তাদের বডিক্যামগুলো দ্রুত ক্রয় এবং হাজার হাজার পুলিশ কর্মীর জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সমস্ত ভোটকেন্দ্রে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। খরচ যাই হোক না কেন! আমাদের লক্ষ্য হলো ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ করা।’
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী আসন্ন ভোটের জন্য একটি নির্বাচনী অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনার কথাও জানান। অ্যাপটি ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ওপর বিশদ তথ্য প্রদান করবে, এর মধ্যে প্রার্থীর বিবরণ, ভোটকেন্দ্রের আপডেট এবং অভিযোগ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা কর্মকর্তাদের অ্যাপটি দ্রুত চালু করার এবং দেশের ১০ কোটিরও বেশি ভোটারের জন্য এটি ব্যবহার-বান্ধব কিনা তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন।
নতুন ভোটার ২৪ লাখ ৩৮ হাজার: ইসি

বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, নতুন ভোটার বেড়েছে ২৪ লাখ ৩৮ হাজার ৬২৬ জন।
রোববার বাদ পড়া সাড়ে ৪৪ লাখ ভোটারের সম্পূরক হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করে ইসি। এতে কারো তথ্যে ভুল থাকলে সংশোধনের সুযোগ মিলছে ১২ দিন।
ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম বলেন, সারাদেশে উপজেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্ব স্ব এলাকার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে কারো ভুল থাকলে সংশোধন করে নিতে পারবেন।
সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ হওয়ায় যোগ্য ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্তি, মৃত্যুজনিত বা অন্তর্ভুক্তি হওয়ার অযোগ্য ব্যক্তির নাম কর্তন, ভোটার স্থানান্তর এবং কোনো সংশোধন বা ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য দরখাস্ত (ফরম-২, ফরম-১২, ফরম-১৩ ও ফরম-১৪ এর মাধ্যমে দরখাস্ত করতে হবে) দাখিল করা যাবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত।
দাখিলকৃত দরখাস্তসমূহ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসার ও রেজিস্ট্রেশন অফিসার কর্তৃক নিষ্পত্তি করা হবে ২৪ আগস্টের মধ্যে। এরপর অন্যান্য কাজ শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ৩১ আগস্ট।
বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছে ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। এদিকে যাদের বয়স ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তারাও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন।
মন্তব্য