ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫ ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২
 
শিরোনাম

শিশুদের সৃজনশীল চিন্তার বিকাশ ঘটাতে খুবির গবেষণা প্রকল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক
৩ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক
শিশুদের সৃজনশীল চিন্তার বিকাশ ঘটাতে খুবির গবেষণা প্রকল্প

শিশুদের সৃজনশীল ও বিশ্লেষণাত্মক চিন্তার বিকাশ ঘটাতে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সক্রিয় শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নে খুলনার দুই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষণীয় ও সৃজনশীল দেয়াল চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে খুবির নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা (ইউআরপি) ডিসিপ্লিন। আজ সোমবার সকাল ১০টায় খুলনার ৫ নম্বর ঘাট সংলগ্ন এরশাদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শিক্ষণীয় ও সৃজনশীল দেয়াল চিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তীতে বেলা ১১টায় নগরীর লবণচরায় ইসলামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেয়াল চিত্র প্রদর্শিত হয়।

শিশুদের মনজাগতিক বিকাশ ও বিশ্লেষণাত্মক চিন্তার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাসটেইনেবল হেলথদি, লার্নিং সিটিস অ্যান্ড নেইবারহুডসের (এসএইচএলসি) এক আন্তর্দেশীয় গবেষণা প্রকল্পের আওতায় এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানা যায়।

এসএইচএলসি প্রকল্পের ইন-কান্ট্রি কো-ইনভেস্টিগেটর অধ্যাপক তানজিল সওগাত এর সভাপতিত্বে খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

এ সময় খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার খুবির এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, 'শিশুদের সৃজনশীলতা বিকাশের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, কাউকে পেছনে ফেলে নয় বরং সবাইকে সঙ্গে নিয়েই টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করে যেতে হবে।'

প্রকল্প পরিচালক ড. শিল্পী রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সাদিকুর রহমান খান এবং অন্যতম অতিথি হিসেবে এরশাদ আলী স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সামসুল আলম মিয়া স্বপন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, চিত্রকর্ম গুলিতে তাদের এলাকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং নগরায়ণের বিভিন্ন সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া স্কুলগুলোর সীমানাপ্রাচীর, শ্রেণিকক্ষের দেয়াল, ছাদ ও মেঝেজুড়ে বিভিন্ন প্রাণীদের ছবি আঁকা হয়েছে। তার পাশেই বিভিন্ন বর্ণের নাম দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওই বর্ণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া স্কুলের ছাদে বিভিন্ন ধরনের আকৃতির মাধ্যমে সৌরজগতের সকল গ্রহ, ছবির মাধ্যমে প্রকৃতিতে গাছের অবদান এবং পিরামিড একে প্রয়োজনীয় খাদ্যতালিকার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

শ্রাবণী নামের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী আনন্দ প্রকাশ করে বলেন, 'চিত্রাঙ্কন কর্মশালায় অনেক রং দিয়ে ছবি আঁকা অনেক আনন্দের ছিল। আমরা এখন থেকে খেলতে খেলতে শিখব।'

এ বিষয়ে গবেষণা প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের প্রকল্প পরিচালক ও খুবির ইউআরপি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. শিল্পী রায় জানান, 'স্কুল কার্যক্রমে শিশুদের সৃজনশীল অংশগ্রহণ এবং তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্পর্কে মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন প্রশংসাযোগ্য। এ ধরনের কার্যক্রম গবেষণা পরিমণ্ডলকে বিস্তৃত ও সমৃদ্ধ করবে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে টেকসই নগরায়ণের বার্তা পৌঁছে দেবে।'

উল্লেখ্য, এসএইচএলসি একটি আন্তর্দেশীয় গবেষণা প্রকল্প, যার আওতায় খুবির নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিন উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং নগরায়ণের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর টেকসই সমাধান নিয়ে গত চার বছর কাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের খুলনার প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিশুদের স্কুলে সক্রিয় শিক্ষার পরিবেশ আরও উন্নত করার জন্য স্কুলে দেয়াল-চিত্রাঙ্কন এবং শিশুদের জন্য গত দুই মাস ব্যাপী চিত্রাঙ্কন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    প্রয়োজনে ক্লাস বন্ধ করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:৩৫
    নিজস্ব প্রতিবেদক
    প্রয়োজনে ক্লাস বন্ধ করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী

    দেশের করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ক্লাসের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। তবে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন হলে ক্লাসের সংখ্যা কমানো এবং ক্লাস বন্ধ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

    আজ সোমবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী স্মরণে মুক্তিযোদ্ধাদের উৎসর্গ করে সিনেম্যাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।

    শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আগের বছরের তুলনায় ক্লাস বাড়িয়েছি। তবে আমরা সারাক্ষণ করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যদি আমরা মনে করি আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ক্লাসের সংখ্যা কমানো প্রয়োজন তাহলে আমরা সেটা করব। সবই আমরা প্রয়োজন বুঝে করব।’

    শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে আমাদের এখানে করোনা পরিস্থিতি অনেক ভালো আছে। ওমিক্রনের কারণে আমাদের পাশের দেশ বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আমাদের দেশে এখন যে পরিস্থিতি আছে সেটা আশঙ্কাজনক নয়। সংক্রমণের হার খুবই কম এখন শতকরা তিন ভাগের কম। আমাদের সংক্রমণের হার ১ শতাংশের কম ছিল কিন্তু সপ্তাহ দু-এক আগে এটা বেড়ে দুই এর একটু উপরে উঠেছে। কাজেই আমাদের সকলের অনেক সচেতন হতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

    শিক্ষা-কার্যক্রম পুরোদমে শুরুর বিষয়ে তিনি বলেন, গত দুই বছরে মার্চের দিকে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে গিয়েছে। মার্চ মাস না আসা পর্যন্ত আসলে আমাদের পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়। আমাদের বিশেষজ্ঞরা যে পূর্বাভাস দিয়েছেন সেগুলোকে ভুল প্রমাণ করেই আমরা কিন্তু খুব ভালো একটা অবস্থানে আছি। আগামীতে কি হবে সেটার জন্য আমাদের মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। দুই বছরে আমাদের শিক্ষা খাতে কিছুটা ঘাটতি হয়েছে। এই ক্ষতি আমরা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি কিন্তু একটা শিক্ষাবর্ষে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব কিনা তা বলতে পারছি না।

    বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হয়েছে। আমি ইউজিসি এবং যেসব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় গিয়েছে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেছি। তারা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নিতে রাজি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে তারা বলেছে এ বিষয়টি যুক্তিযুক্ত। তবে যে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে আসেনি তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা হয়নি। খুব শিগগিরই তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসব।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      ওমিক্রন: ফের বিধিনিষেধ আসছে

      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ২০:২৯
      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ওমিক্রন: ফের বিধিনিষেধ আসছে

      করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার ফের বেড়ে যাওয়ায় আবারও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

      করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আজ সোমবার সচিবালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।

      মন্ত্রী বলেন, কেউ টিকা না নিলে রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেতে পারবে না। গণপরিবহনে আসন কিছু ফাঁকা রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান সীমিত রাখতে বলা হয়েছে। যাতে করে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফের যাতে লকডাউনে যেতে না হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে সার্কুলার ইস্যু করা হবে।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবার ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৫১ শিক্ষার্থী

        নিজস্ব প্রতিবেদক
        ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ১৩:৩৯
        নিজস্ব প্রতিবেদক
        কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবার ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৫১ শিক্ষার্থী

        স্নাতক পর্যায়ের ১৮ জন ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ৩৩ জনকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।

        কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দেড় দশক পর প্রথমবারের মতো স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ৫১ শিক্ষার্থীকে ডিনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের পুরস্কৃত করেছে। গতকাল প্রশাসনিক ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়।

        বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল বেলা তিনটায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক শেখ মকছেদুর রহমানের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠান হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী।

        স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে এ ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ১৮ শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের রিপা আক্তার, পরিসংখ্যান বিভাগের সোনিয়া আক্তার, অর্থনীতি বিভাগের নয়ন তারা, আইসিটি বিভাগের আমেনা বেগম, মোহাম্মদ কামরুল হাসান, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের সংগীতা বসাক, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগের অরূপা সরকার ও রাবেয়া জামান, পরিসংখ্যান বিভাগের উন্মুল খায়ের সুমী, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের নাসরিন আক্তার ঝুমুর ও তানজিনা ইয়াসমিন, আইসিটি বিভাগের পিন্টু চন্দ্র পাল, অর্থনীতি বিভাগের স্বর্ণা মজুমদার, গণিত বিভাগের ফারহানা ইয়াসমিন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের নয়ন বণিক, ব্যবস্থাপনা বিভাগের শাকিলা ফেরদৌস ও গণিত বিভাগের হুমায়ুরা দিল আফরোজ।

        স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ডিনস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ৩৩ শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন গণিত বিভাগের খাদিজা বেগম, পারভীন আক্তার, মাহিনুর আক্তার, হুমায়রা দিল আফরোজ ও সায়মা তাহের, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সানজিদা হক ও অন্তরা তাজরীন, পরিসংখ্যানের কংকন আচার্য, রসায়ন বিভাগের শারমিন আক্তার রূপা, মো. আলাউদ্দিন হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের মো. মাসুদ রানা, সাইফুল ইসলাম, স্বর্ণা মজুমদার ও সৈয়দা সুরাইয়া সুলতানা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ইসরাত জাহান লিপা, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের জাহিদ হাসান, সংগীতা বসাক, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও শাকিলা ফেরদৌস, এআইএসের ফাহমিদা হোসেন, তৃণা সাহা, ফাহিমুল কাদের সিদ্দিক ও কাউসার খান, মার্কেটিং বিভাগের মো. আওলাদ হোসেন, নাসরিন আক্তার ঝুমুর, খালেদা আক্তার, জাহিদুল ইসলাম পাটোওয়ারী ও তানজিনা ইয়াসমিন, কম্পিউার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মেশকাত জাহান ও তাপসী গোস্বামী, আইসিটি বিভাগের আমেনা বেগম, নাবিলা মেহজাবিন ও মোহাম্মদ কামরুল হাসান।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য

          উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে ইউজিসির ২০ সুপারিশ

          নিজস্ব প্রতিবেদক
          ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ১১:৩
          নিজস্ব প্রতিবেদক
          উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে ইউজিসির ২০ সুপারিশ

          দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মানোন্নয়নে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ট্রেনিং একাডেমি, গবেষণার জন্য সেন্ট্রাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি ও ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশিন (ইউজিসি)। এ ছাড়া দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছাতে সমন্বিত উদ্যোগ ও বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং নির্ধারণী সূচকের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একটি নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশও করা হয়েছে।

          সরকারের “স্ট্র্যাটেজিক প্লান ফর হায়ার এডুকেশন ইন বাংলাদেশ: ২০১৮, ২০৩০”-এর অংশ হিসেবে ইউজিসি’র উদ্যোগে তিনটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে।

          ইউজিসি তাদের ‘৪৭তম বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২০’-এ সুপারিশগুলো করে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে ইউজিসি থেকে সদ্যবিদায়ী ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রতিবেদনটি দেওয়া হয়।

          ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘তিনটি ইনস্টিটিউশন করার যে সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলোর জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডি করছি আমরা। অটোনোমাস বডি না হলে এসব প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো কাজ করতে পারবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের জন্য ইউনিভার্সিটি টিচার্স ট্রেনিং একাডেমি ও গবেষকদের জন্য সেন্ট্রাল রিসার্চ ল্যাবরেটরির সুপারিশ করা হয়েছে। কীভাবে গবেষকদের দেশে ধরে রাখা যায় সে সংক্রান্ত পলিসি তৈরি করা, কীভাবে গবেষকরা সুবিধা পেতে পারেন; এসব নিয়েও কাজ করবে ওই ইনস্টিটিউশন।’

          ইউজিসির সুপারিশে বলা হয়, উচ্চশিক্ষার মান বৃদ্ধি ও সমুন্নত রাখতে দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির অভিন্ন নীতিমালা করতে হবে।

          তালিকার প্রথম সুপারিশে বলা হয়, ‘দেশে পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মোট ১৫৭টি। ইউজিসির দায়িত্ব ও কর্তব্য আগের তুলনায় বেড়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সামগ্রিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে তদারকি করা কমিশনের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। তদারকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিশনের আইনি ক্ষমতার সীমাবদ্ধতাও অনুভূত হচ্ছে। কাজেই, আর্থিক বরাদ্দ ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোসহ কমিশনকে আইনগতভাবে শক্তিশালী করা জরুরি।’

          অন্যান্য সুপারিশ

          চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউনিভার্সিটি ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কোলাবরেশন বাড়ানোতে হবে। এর জন্য চাহিদাভিত্তিক, উদ্দেশ্যমুখী ও ফোকাস নির্ভর প্রোগ্রাম চালুর মাধ্যমে যোগ্যতাসম্পন্ন গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দিতে পারে। উচ্চশিক্ষায় জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামোগত ও গবেষণাগারের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য আর্থিক বরাদ্দ রাখার পাশাপাশি ফলাফলভিত্তিক কারিকুলাম প্রণয়ন করা যেতে পারে। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টিগ্রেটেড ইউনিভার্সিটি ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের আর্থিক বিধি-বিধান অনুসরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন সমুন্নত রেখে একটি ‘সমন্বিত আর্থিক নীতিমালা ও ম্যানুয়েল’ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। দেশে উচ্চশিক্ষা খাতে সরকারি বরাদ্দ জাতীয় বাজেটের মাত্র শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ। যা যেকোনও বিচারেই অপ্রতুল। কাজেই, জাতীয় বাজেটে উচ্চশিক্ষায় খাতওয়ারি বরাদ্দ চিহ্নিত করে অর্থ সংস্থানের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। ২০২২ সালের মধ্যে উচ্চশিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের ২ শতাংশ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৬ শতাংশ বরাদ্দ রাখার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। অস্তিত্বহীন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শাখা ক্যাম্পাসে’ ব্যাচেলর, মাস্টার্স, এমফিল— এমনকি পিএইচডি পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। সাময়িক অনুমতিপত্র বা সনদপত্র নেওয়া ছাড়া বাংলাদেশে কোনও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বা পরিচালনাও অবৈধ। সীমিত পরিসরে স্বনামধন্য বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস স্থাপন ও পরিচালনার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। তবে এদের তদারকির জন্য বিদ্যমান বিধিমালা ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা, ২০১৪'-এর সংশোধন প্রয়োজন। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আলোচনা করে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে। এতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পাবে বিশ্ববিদ্যালয়। যার ফলে পণ্যের উৎকর্ষ বাড়ানো ও তাতে বৈচিত্র্য আনা যাবে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণায় প্লেজিয়ারিজম বা চৌর্যবৃত্তির ঘটনা বাড়ছে। এ নিয়ে কোনও নীতিমালা না থাকায় গবেষণাপত্র চুরির বিষয়টি সংজ্ঞায়িত করা যাচ্ছে না। তাই প্লেজিয়ারিজম বিষয়ক সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি আবশ্যক। তদুপরি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষণাকর্মের মান নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির জন্য সফটওয়্যার (যেমন: Turnitin) ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা এবং বাংলা গবেষণাপত্র ও পুস্তকের জন্যও এ ধরনের সফটওয়্যার তৈরি করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উদ্যোগ নিতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সান্ধ্যকালীন/উইকেন্ড/এক্সিকিউটিভ প্রভৃতি কোর্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ধরনের কোর্স বন্ধ হওয়া জরুরি। তবে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী ইউজিসি’র পূর্বানুমোদনক্রমে ডিপ্লোমা, শর্ট কোর্স, ভোকেশনাল ও ট্রেনিং প্রোগ্রাম পরিচালনা করা যেতে পারে। দেশে উচ্চশিক্ষা স্তরে চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রিকে ‘প্রান্তিক ডিগ্রি হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা এবং যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক না থাকায় ডিগ্রি অর্জনের পর সরাসরি মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ না রেখে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া রাখা যেতে পারে। এ নিয়েও সরকার একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সকল প্রকার যৌন হয়রানি, ইভটিজিং, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, বুলিং, র‍্যাগিং, মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মুক্তবুদ্ধি চর্চার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানো জরুরি। কোনও শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী যাতে সংবিধান পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে না পারে, সেজন্য নীতিমালা প্রণয়নে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দিতে পারে সরকার। সশরীরে ও অনলাইনে উভয় ধারার সমন্বয়ে ‘ব্লেন্ডেড লার্নিং’ নীতিমালা প্রণয়ন করা যেতে পারে। তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিতকল্পে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে।

          প্রাসঙ্গিক
            মন্তব্য
            সর্বশেষ সংবাদ
              সর্বাধিক পঠিত