উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রপতিকে খোলা চিঠি

সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ চেয়ে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য্য মো. আব্দুল হামিদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি পাঠ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাত ১১টার দিকে উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে আন্দোলনরত অবস্থায় এ চিঠি পাঠ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
খোলা চিঠিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছি। ১৯৭১ সালে ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ বীরাঙ্গনার ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের বিধি মোতাবেক, আপনি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য আপনি সাংবিধানিক বিধি মোতাবেক আপনার প্রতিনিধিস্বরূপ উপাচার্য নিয়োগ করে থাকেন। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেশের কল্যাণে নিজেদের প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে অধ্যয়নে নিবেদিত আছি।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) শাবিপ্রবির ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনের সামনে নিরাপদ আবাসন পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য ৩ দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বিনা উস্কানিতে সুপরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে পুলিশ নিষ্ঠুর হামলা চালায়। এ সময় বাংলাদেশের জনগণের টাকায় ক্রয়কৃত আধুনিক অস্ত্রসজ্জিত পুলিশের নির্বিচার লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের স্বীকার হন নিরস্ত্র শিক্ষার্থীরা।
এতে গুরুতর আহত হয়েছে অন্তত ৪০ জন শিক্ষার্থী, যাদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ২০ এর বেশি। কারো মাথা ফেটেছে, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়ে মারাত্মক আহত হয়েছেন অনেকে । ছাত্রীদের ওপর নিষ্ঠুর ভাবে পুরুষ পুলিশ সদস্যরা লাঠি চার্জ করেছে। ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক পুলিশ ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের ওপর এমন নৃশংস হামলার ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
দাবি না মেনে উল্টো পুলিশী হামলায় শিক্ষার্থীদের মৃত্যু ঝুঁকিতে ফেলার ঘটনায় শাবিপ্রবির উপাচার্য যেভাবে মূল কুশীলবের ভূমিকা পালন করেছেন তা সরাসরি সংবিধান বিরোধী এবং আপনার (রাষ্ট্রপতি) কর্তৃক জনাব ফরিদ উদ্দিন আহমদের ওপর অর্পিত দ্বায়িত্বের সরাসরি বরখেলাপ।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় শাবিপ্রবির সাবেক ও বর্তমান সব শিক্ষার্থী হতবাক এবং ক্ষুদ্ধ। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে, আমাদের আচার্য তার জীবন অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু বুঝতে পারেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ, দশ ও নিজেদের ভালোমন্দ অনুধাবন করার সক্ষমতা রাখেন। এ দিনের মত পরিষ্কার যে আপনার প্রতিনিধি হিসেবে জনাব ফরিদ উদ্দিন আহমদ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের দ্বায়িত্ব পালনের সকল নৈতিক, যৌক্তিক ও সাংবিধানিক যোগ্যতা হারিয়েছেন। এ ঘটনা আমাদের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করেছে, এই অথর্ব, অযোগ্য ও স্বৈরাচারী ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী ক্ষমতায় বহাল রাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলমন্ত্রের পরিপন্থি। বর্তমানে কোনো শিক্ষার্থীই এই উপাচার্যের দায়িত্বে থাকাকালে ক্যাম্পাসে নিরাপদ বোধ করছে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে গতদিনের হামলার পর আজ (সোমবার) সারাদিন ক্যাম্পাসে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে জলকামান ও রায়টকারসহ পুলিশের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিরাপত্তার পরিবেশ তৈরি করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা আমাদের আচার্যর কাছে আবেদন করছি অবিলম্বে ক্যাম্পাসে মোতায়েনকৃত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়ে আমাদের নিরাপত্তা বিধান করুন। এ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে, শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা উপচার্যের পদ থেকে গতকালের হামলার মূল মদদদাতা জনাব ফরিদ উদ্দিন আহমদের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করে তাকে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হিসেবে মহামান্য আচার্যের কাছে আমাদের আবেদন, আপনার সরাসরি হস্তক্ষেপে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্যের পদত্যাগ নিশ্চিত করে, একজন সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে উপাচার্য হিসেবে অতিসত্ত্বর নিয়োগ দিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে উদ্যোগ নিন।
দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে

দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আয়োজন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিগগিরই পরীক্ষার চূড়ান্ত তারিখ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সভায় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম বাদল সভাপতিত্ব করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ এইচএম এনায়েত হোসেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবীব উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির বলেন, এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ সংক্রান্ত দিক নির্দেশনা খুব দ্রুতই প্রকাশ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, কত নম্বরে ভর্তি পরীক্ষা হবে, জিপিএ নম্বর কত থাকবে, আসন সংখ্যাসহ সব বিষয় জানিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারীর মধ্যে গত বছরের ২ এপ্রিল সারাদেশে একযোগে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেবার ৩৭টি সরকারি মেডিকেলে ৪ হাজার ৩৫০টি আসনের বিপরীতে ১ লাখ ২২ হাজার ৮৭৪ জন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন করেছিলেন। পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন ১ লাখ ১৬ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।
ভর্তি পরীক্ষার একদিন পর ৪ এপ্রিল ফল প্রকাশ করা হয়। এতে পাস করেন ৪৮ হাজার ৪৮ হাজার ৯৭৫ জন।
ঢাবিতে শাবিপ্রবি ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শাবিপ্রবি ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় তারা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে।
সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘আপনারা কি চান যে ছাত্ররা আপনাদের গদি ধরে টান দিক? ছাত্ররা নিজেদের পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চায়, আপনাদের গদি ধরে টান দিতে চায় না।’
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছাত্রদের এভাবে ক্ষেপিয়ে তুললে যে কোনো সময় বিস্ফোরণ হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি-দাওয়া মেনে নিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাবিপ্রবি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীনকে পদত্যাগ করতে হবে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড ও পুলিশি হামলার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায়, ঢাবি, চবিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারি দেন তিনি।
সমাবেশে তারা শাবিপ্রবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে সব দাবি-দাওয়া পূরণ করার জন্য জোর দাবি জানান।
ইউনিক আইডির ডাটা এন্ট্রি শুরু

দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর জন্য একটি ‘ইউনিক আইডি’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মৌলিক ও শিক্ষাসংক্রান্ত সব তথ্য থাকবে।
করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ইউনিক আইডি তৈরির কাজ কিছুটা পিছিয়ে গেলেও এখন তা আবার পুরোদমে শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আজ থেকে ইউনিক আইডির সফটওয়্যারে শুরু হয়েছে ডাটা এন্টির কাজ।
রোববার রাতে ইউনিক আইডির প্রকল্প পরিচালক শামসুল আলমের সই করা এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জানতে চাইলে শামসুল আলম বলেন, সফটওয়্যারে এন্ট্রি দেয়ার মাধ্যমে আজ থেকে ইউনিক আইডি তৈরির সর্বশেষ ধাপের কাজ শুরু হলো। যে সব শিক্ষার্থীর তথ্য এন্ট্রি দেয়া শেষ হবে তারা পর্যায়ক্রমে ইউনিক আইডি পেতে থাকবে।
অফিস আদেশে বলা হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যানবেইস কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন IEIMS প্রকল্পের আওতায় CRVS ব্যবস্থার আলোকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের (ষষ্ঠ- দ্বাদশ শ্রেণি) শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল ডাটাবেইজ তৈরি ও ইউআইডি প্রদানের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে তথ্যছক পূরণের কার্যক্রম চলমান আছে। আজ থেকে সফটওয়্যারে ডাটা এন্ট্রি ও আপলোড শুরু হবে। যা আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার অনুরোধ করা হলো।
আরও বলা হয়, সফটওয়্যারে শিক্ষার্থীর পিতা/মাতা/ অভিভাবকের জন্ম নিবন্ধন ১৭ ডিজিটে দিতে হবে। অর্থ্যাৎ এই জন্মসনদ নম্বর ১৩ ডিজিট বিশিষ্ট হলে এন্ট্রি দেয়ার সময় জন্মসাল যুক্ত করতে হবে।
যেভাবে ডাটা এন্ট্রি দিতে হবে
ব্যানবেইজ এর ওয়েবসাইট থেকে (www.banbeis.gov.bd) থেকে IEIMS মেন্যুতে গিয়ে ইউনিক আইডির লাইভ সার্ভার এ ক্লিক করে CRVS Institution Login page এ যেতে হবে। অথবা http://crvs-institute.banbeis.gov.bd/ এ ক্লিক করে CRVS Institution Login page এ যেতে হবে।
সফটওয়্যারে এন্ট্রি ও আপলোড করার কাজে দায়িত্বপালকারী শিক্ষকদের ইউজার আইডি ও পাসওর্য়াড তৈরি করতে হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধান পাসওয়ার্ড পরির্বতন করতে পারবেন। এ্যাডমিন হিসেবে প্রতিষ্ঠান প্রধান সর্বোচ্চ পাঁচটি ইউজার আইডি তৈরি করতে পারবে। তবে ইউজার আইডি ও পাসওর্য়াড দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক ছাড়া হস্তান্তরযোগ্য নয়।
ভেরিফিকেশন চলবে, সুপারিশপত্র দেয়া হবে

অবশেষে লাঘব হচ্ছে ৩২ হাজার শিক্ষকের দুঃখ। দীর্ঘ সময় পর এসব শিক্ষকের সুপারিশ দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের পাশাপাশি এসব শিক্ষককে নিয়োগের জন্য সুপারিশ দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) ফৌজিয়া জাফরীন।
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তিকে নিয়োগের পর যদি তার বিরুদ্ধে পুলিশ ভেরিফিকেশনে আপত্তিকর কিছু আসে, তবে তাদের নিয়োগ বাতিল হবে। মূলত যে কারণে ভেরিফিকেশন করা হয়ে থাকে। শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এনটিআরসিএকে বলা হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়া শিক্ষকদের পুলিশ ভেরিফিকেশন কার্যক্রম চলছে। শিক্ষকদের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে ভেরিফিকেশনে সময় লাগছে। একারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ভেরিফিকেশন কার্যক্রম চলমান থাকবে। একই সাথে সুপারিশপত্রও দেবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। শিগগিরই এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হবে।
জানা যায়, গত বছরের ৩০ মার্চ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫৪ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। বিভিন্ন নিবন্ধনের রিটকারীদের জন্য ২ হাজার ২০০টি পদ সংরক্ষণ করে বাকি পদগুলোতে নিয়োগের উদ্যোগ নেয় সরকার।
গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও নিয়োগ প্রত্যাশী শান্ত আহমেদ বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিবের প্রতি অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ৩৮ হাজার শিক্ষিত বেকারের কষ্ট অনুধাবন করার জন্য। সেই সঙ্গে আমাদের অন্যতম অভিভাবক এনটিআরসিএর কাছেও কৃতজ্ঞ আমরা। নিয়োগের পরবর্তী ধাপ যেন সুষ্ঠু ও সুন্দর হয় সেই প্রত্যাশা করি।
এর আগে শিক্ষক নিয়োগের ভেরিফিকেশন ফরম দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে পাঠানো হয়। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় লাগার ইঙ্গিত দিয়েছিলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩২ হাজার ২৮৩ জন শিক্ষক নিয়োগের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম চট্টগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের ডিএসবি এবং এনএসআইয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য বিভাগেও ধারাবাহিকভাবে ফরম পাঠানো হচ্ছে। এরপর মূল কার্যক্রম শুরু হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব (নিরাপত্তা-২ এবং ৩ শাখা) সাগরিকা নাসরিন বলেছিলেন, ‘৩২ হাজারেরও বেশি ফরমের কার্যক্রম সময়সাপেক্ষ বিষয়। তবে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ফরমগুলো বিভাগীয় পর্যায়ে পাঠানোর চেষ্টা করছি। শুধু এই কাজের জন্যই আমাদের বড় একটি টিম কাজ করছে। তবে পুরো প্রক্রিয়া পর্যায়ক্রমে শেষ করা হবে।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, ‘আমরা চাই শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে এই মহান পেশায় আসুক শিক্ষকরা। তাই প্রথমবারের মতো ভেরিফিকেশনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনেক শিক্ষক সঙ্কট রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এ অবস্থায় সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়াকে কতটা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চেষ্টা করছি দ্রুতই যেন শিক্ষক সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা যায়। এটি মাথায় নিয়েই আমরা ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করি। সেখান থেকে যোগ্য ৩৮ হাজার শিক্ষককে নেয়া হয়েছে।’
এর আগে চলতি বছরের ৩০ মার্চ ৫৪ হাজার শূন্যপদের বিপরীতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। তবে বিভিন্ন নিবন্ধনের রিটকারীদের জন্য দুই হাজার ২০০টি পদ সংরক্ষণ করে বাকি পদগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়।
তবে আবেদন না পাওয়ায় এবং মহিলা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না থাকায় ১৫ হাজার ৩২৫টি পদ ফাঁকা রেখে ৩৮ হাজার ২৮৬ পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু ছয় হাজার তিনজন প্রার্থী পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফরম পূরণ করে না পাঠানোয় ৩২ হাজার ২৮৩ জনের পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হচ্ছে।
মন্তব্য