আমাদেরকে রাশিয়ার মুখে একা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে: ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট

রাশিয়ার সর্বাত্মক আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনকে একা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়া কিয়েভে হামলা চালানোর পর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে একথা বলেন তিনি।
কিয়েভে রুশ হামলায় প্রথম দিনে ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এরপর জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার বড় ধরনের হামলার বিপরীতে দেশ রক্ষায় আমাদেরকে একা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমাদের হয়ে লড়ার কে আছে? আমি তো কাউকে দেখি না। ইউক্রেনকে ন্যাটোভূক্ত করার নিশ্চয়তা কে দেবে? সবাই রাশিয়ার আগ্রাসী ভূমিকায় ভীত।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হামলার শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৩৭ জন ইউক্রেনিয়ান নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩১৬ জন। জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার বাহিনী রাজধানী কিয়েভে ঢুকে পড়েছে। তারা নগরবাসীকে ভয় দেখাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি এবং তার পরিবার এখনও ইউক্রেনেই রয়েছেন। রাশিয়া তাকে এক নম্বর টার্গেটে রেখেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘ইউক্রেনকে সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য করতে আমি ২৭ জন ইউরোপীয় নেতাকে অনুরোধ করেছি। কিন্তু কেউই কোনো উত্তর দেননি। সবাই ভীত।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রপথে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় হামলা শুরু করেছে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টির মতো পড়েছে। এছাড়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের চেরনিহিভ, খারকিভ এবং লুহানস্ক সীমান্ত পেরিয়ে হাজার হাজার রুশ সৈন্য স্থলপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েছে।
শুক্রবার ইউক্রেনের বড় বড় স্থাপনায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এদিকে কিয়েভে আরেকটি রুশ বিমান ভূপাতিত করার খবরও পাওয়া গেছে।
এক সঙ্গে স্ত্রীদের তালাক দিলেন তিন ভাই!

অনেক স্বপ্ন নিয়ে শুরু হওয়া রঙিন সংসার অনেক কারণেই ভেঙে যেতে পারে। তাতে খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু যদি একসঙ্গে তিনভাই-ই তাদের স্ত্রীদের তালাক দেয়, তাহলে সেটা অবাক হওয়ার বিষয় বৈকি।
তবে বাস্তবে সেই অবাক করা ঘটনাই ঘটেছে। কয়েক মিনিটের ব্যবধানে তিন ভাই তাদের স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। আর বিচ্ছেদের পিছনের কারণটাও হৃদয়বিদারক বলে গালফ নিউজ রোববার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলজেরিয়ার বাসিন্দা ওই তিনভাই বাড়ি ফিরে দেখেন, তাদের অসুস্থ মাকে পাশের বাসার এক নারী গোসল করিয়ে দিচ্ছেন। স্ত্রীদের অসুস্থ মাকে দেখভাল করতে না দেখে ক্ষেপে যান তিন ভাই-ই। এই কারণে একই সঙ্গে তিনজনই তাদের স্ত্রীকে তালাক দেন।
জানা গেছে, ওই তিনভাইয়ের একটি বোনও আছে। সপ্তাহে দুদিন সেই বোনই এসে মাকে গোসল করিয়ে দিতেন। পাশাপাশি মায়ের দেখভালও করতেন। কিন্তু সম্প্রতি বোনের স্বামীর ক্যান্সার ধরা পড়ায় তিনি আসতে পারছেন না। এদিকে, ওই তিন ভাই মায়ের দেখাশোনা করার জন্য স্ত্রীদের বললেও তারা দেখাশোনা করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। অসুস্থ মাকে প্রতিবেশীদের কাছে দয়া ভিক্ষা করতে দেখে ক্ষেপে গিয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে।
সীমান্তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করছে নিউজিল্যান্ড

দীর্ঘ দুই বছর কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে থাকার পর এবার সব কিছু উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। এমনটি ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডান। এজন্য তিনি পাঁচটি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) তিনি এ কথা জানান।
বিশ্বে নিউজিল্যান্ডই সবেচেয়ে বেশি সীমান্তে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা শিথিলের জন্য আর্ডানের ওপর চাপ তৈরি করা হয়।
জেসিন্ডা আর্ডান বলেন, পরিবার পরিজন ও বন্ধুদের একত্রিত হওয়া প্রয়োজন। আমাদের ব্যবসা বাড়াতে দক্ষতা প্রয়োজন। নতুন যোগাযোগের জন্য রপ্তানিকারকদের অন্যান্য দেশে ভ্রমণ করা দরকার।
আর্ডান আরও বলেন, নিউজিল্যান্ডের মোট জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশ টিকার দুটি ডোজ এবং অনেকেই বুস্টার ডোজ পাওয়ার কারণে এখন পরিবর্তন আনা সম্ভব।
এদিকে, কোয়ারেন্টাইন পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনলেও তা পুরোপুরি তুলে দেওয়া হবে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সূত্র: সিএনএন
বিশ্বে ফের বেড়েছে করোনার সংক্রমণ

বিশ্বে এখনো কমেনি করোনাভাইরাসের প্রকোপ। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নিয়ে বাড়ছে শঙ্কা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩০ লাখ ৪৯ হাজার ৯০৭ জন। গত দিন যা ছিল ৩০ লাখ ১১ হাজার ৪৪৪ জন। করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১১ হাজার ২৫২ জন। যা গত দিন ছিল ১১ হাজার ৬৮৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ব্রাজিলে। শনাক্তের সংখ্যা ২ লাখ ৮৬ হাজার ৫০ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯২৩ জনের। এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ কোটি ৬০ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৫ জনের এবং মারা গেছে ৬ লাখ ৩০ হাজার ১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৩৪২ জনের। শনাক্তের সংখ্যা ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩১।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ ১৯ হাজার ৮৮৯ জনের। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৫৭ লাখ ৩০ হাজার ৫৯৮ জন। এ পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে ৩০ কোটি ৭৭ লাখ ১৫ হাজার ১৫১ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।
চীনা প্রকৌশলী হত্যা: ‘সম্পর্ক বাঁচাতে’ ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে পাকিস্তান

পাকিস্তানে গত বছর সন্ত্রাসী হামলায় চীনের কয়েক ডজন প্রকৌশলী হতাহত হওয়ার ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ১ কোটি ১৬ লাখ ডলার (১০০ কোটি টাকার বেশি) ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইমরান খানের সরকার। পাকিস্তানে নিহত বিদেশিদের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার এমন ঘটনা নজিরবিহীন। মূলত আগামী মাসে বেইজিং সফর সামনে রেখে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী চীনের সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে এ উদ্যোগ নিয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর নিক্কেই এশিয়ার।
পাকিস্তানি মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক সমন্বয় কমিটি (ইসিসি) গত সপ্তাহে ভুক্তভোগী চীনা পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক বিবৃতিতে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, দীর্ঘ আলোচনা ও চীনের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের গভীরতা বিবেচনায় শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে ১ কোটি ১৬ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ইসিসি।
গত বছরের জুলাইয়ে পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় কোহিস্তান প্রদেশে দাসু বাঁধ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত চীনা প্রকৌশলীদের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এত চীনের ১০ প্রকৌশলী নিহত ও ২৬ জন আহত হন। এসময় পাকিস্তানেরও চারজন নিহত ও অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছিলেন। এ ঘটনার পর প্রকল্পটির কাজ স্থগিত করে বাস্তবায়নকারী সংস্থা চায়না গেঝৌবা গ্রুপ।
হতাহত প্রকৌশলীদের জন্য ইসলামাবাদের কাছে ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার (৩২৮ কোটি টাকা প্রায়) দাবি করে চীনা কর্তৃপক্ষ। শেষপর্যন্ত এ ধরনের ঘটনায় চীন যে পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেয়, তার দ্বিগুণ দিতে রাজি হয় পাকিস্তান।
আগামী মাসে বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক ২০২২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সফরে একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পাকিস্তান দাসু বাঁধে হামলাকে দুর্ঘটনা হিসেবে দেখিয়ে বেইজিংকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। পোল্যান্ডের ওয়ার স্টাডিজ ইউনিভার্সিটির এশিয়া রিসার্চ সেন্টারের প্রধান ক্রজিস্টফ ইওয়ানেক বলেন, এটি স্পষ্ট যে, ইসলামাবাদ বেইজিংকে শান্ত করতে প্রাণান্ত চেষ্টা করছে, এতে ইস্যুটিতে চীনের গভীর ক্ষোভ প্রতিফলিত হয়।
তিনি বলেন, আইনি, নৈতিক বা আর্থিক কোনো বাধ্যবাধকতার কারণে নয়, এই ক্ষতিপূরণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্বার্থে।
পাকিস্তানের সারগোদা ইউনিভার্সিটির পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব চায়না স্টাডিজের পরিচালক ফজল রেহমানের মতে, ইসলামাবাদের লক্ষ্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার মাধ্যমে ইমরান খানের বৈঠকের পরিবেশ সহজ করা এবং কর্মরত চীনাদের জন্য পাকিস্তান মাথা ঘামায়, তা দেখানো।
পাকিস্তানে চীনা প্রকল্পে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে বেইজিং। গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ১০ম যৌথ সহায়তা কমিটির বৈঠকেও মূল আলোচ্য বিষয় ছিল এটি।
ক্রজিস্টফ ইওয়ানেক মনে করেন, শঙ্কিত চীনা কর্মীরা স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তানে কাজ করতে খুব একটা আগ্রহ দেখাবেন না, বিশেষ করে পশতু ও বালোচ বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সীমান্ত এলাকাগুলোতে।
ফজল রেহমান বলেন, বিদেশে চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ও বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তবে কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ক্ষতিপূরণ দেওয়া পাকিস্তানের জন্য খারাপ নজির তৈরি করতে পারে। এতে সন্ত্রাসীরা আরও হামলা চালাতে উৎসাহিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইওয়ানেক বলেন, সন্ত্রাস অনেক সময় চাঁদাবাজির রূপ নেয়। এতে উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলোকে আর আক্রমণ না করার জন্য অর্থ দেওয়া হয়। তার মতে, পাকিস্তান যদি হামলার পর চীনকে ক্ষতিপূরণ দেয়, তাহলে সহিংস গোষ্ঠীগুলো পরবর্তী হামলা এড়াতে ইসলামাবাদের কাছে সরাসরি অর্থ দাবি করতে পারে।
মন্তব্য