জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় জাতীয় পার্টি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পেটান এবং ধাওয়া দেন পার্টির নেতাকর্মীরা।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে শিক্ষার্থীরা ওই এলাকায় জড়ো হলে সেখানে জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে সরে যান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিজয়নগর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, ‘জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে। এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত।’
কিছুক্ষণ পরে আরেকটি পোস্টে তিনি রাজু ভাস্কর্য মিছিল নিয়ে বিজয়নগরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ওই পোস্টে তিনি বলেন, ‘জাতীয় বেইমানদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে।’
অন্য বিষয়ে নয়, ফোকাস নির্বাচনের দিকে রাখুন: সরকারকে ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে বলেছেন যে, তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও সম্মান যেন নষ্ট না হয় সেদিকে তিনি যেন সজাগ দৃষ্টি রাখেন।
তিনি বলেন, সরকারের নেতৃত্বে যিনি আছেন তিনি সারা পৃথিবীতে সমাদৃত। ড. ইউনূসের কাছে বলতে চাই বাংলাদেশের মানুষ আপনাকে ভালোবাসে। সম্মান দিয়েছে, দেবে ও দিতে চায়। আপনার এই জায়গা যেন নষ্ট না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন, ঢাকায় এক আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিরবার রাজধানীর নয়াপল্টন কার্যালয়ে দলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব সরকারের উদ্দেশে আরও বলেন, অন্য বিষয়ে নজর না দিয়ে ফোকাসটা ওই দিকে করবেন- ইলেকশন। এটার কোনো বিকল্প নেই। রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে হলে, জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে হলে সবার অংশগ্রহণে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। সে কারণেই এতো প্রাণ গেছে। এতো মানুষ দীর্ঘকাল সংগ্রাম করেছে, কারাগারে গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার একদম কিছু করেনি (নির্বাচনের বিষয়ে) সেটিও সঠিক নয় বলেই মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, সর্বশেষ একটা সার্চ কমিটি গঠন করেছে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল সার্চ কমিটি গঠনের আগে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন। তারপরেও এটাকে আমরা বড় সমস্যা মনে করছি না। দ্রুত নির্বাচন কমিশন হোক। এরপর দ্রুততার সঙ্গে তাদের যে কাজ নির্বাচন করা সেটি তারা করুক।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় অব্যাহতি পেলেন পিনাকী ভট্টাচার্য

ডেস্ক রিপোর্ট: শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনামলে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় আলোচিত অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য ও ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিককে অব্যাহতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নূরে আলম মামলাটির অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণ না করে এ আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. রফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, গত ৯ অক্টোবর এ মামলাটির অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। তবে বিচারক অভিযোগপত্র পর্যালোচনা শেষে অপরাধ আমলে গ্রহণ না করে পিনাকীসহ দুজনকে অব্যাহতি দেন।
এর আগে ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় পিনাকী ভট্টাচার্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের উপপরিদর্শক এম আব্দুল্লাহিল মারুফ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এ মামলায় মফিজুর রহমান ও মুশফিকুল ফজল আনসারী নামের অপর দুজনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে গত ৭ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিটিটিসির উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাত হোসেন পিনাকীসহ দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপ প্রেসসচিব মুশফিকুল ফজল আনসারীকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্ট ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর নজরে আসে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের। ওই পোস্টে পুলিশ সদস্যদের সম্পর্কে বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়। ফেসবুকে ওই পোস্টের সূত্র ধরে ওই বছরের ১৫ অক্টোবর পল্লবীর বাসা থেকে মফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে পুলিশ মফিজুরের দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করে। সিটিটিসির সিটি ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগের উপপরিদর্শক কে এম আবদুল্লাহ হিল মারুফ মামলায় অভিযোগ করেন, আসামি মফিজুর রহমান তার ভুয়া ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই তালিকায় আছেন পিনাকী ভট্টাচার্য ও মুশফিকুল ফজল আনসারী। মিরপুরে পুলিশ বাহিনীর একটি অভিযানের ঘটনাকে বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়। সেই তথ্য ও ছবি পাঠানো হয় পিনাকী ভট্টাচার্যের ফেসবুক মেসেঞ্জারে।
কেউ ধাক্কাধাক্কি করবেন না; পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় সাবেক কৃষিমন্ত্রী

সাবেক কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদকে রাজধানীর উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর দুই নম্বর সড়ক ৩৫ নম্বর বাড়ি থেকে তাকে আটক করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। এ সময় বাড়িটির আশপাশে সাধারণ মানুষসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা ভিড় জমায়।
প্রায় চার ঘণ্টা পর আব্দুস শহীদকে বাসা থেকে বের করে পুলিশ। পুলিশের গাড়িতে ওঠানোর সময় আব্দুস শহীদ বলেন, কেউ ধাক্কাধাক্কি করবেন না।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার উত্তরা বাসায় আমরা রাত ১১টায় অভিযান পরিচালনা করি। প্রায় ৪ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করে রাত সাড়ে ৩টায় তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়।’
উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর দুই নম্বর সড়ক ৩৫ নম্বর বাড়ি থেকে আব্দুস শহীদকে বের করার সময় দুটি লাগেজ পুলিশ ভ্যানে উঠানো হয়। এর আগে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নিরাপত্তা বিভাগের সহকারী কমান্ডার আবুল কালামসহ আরও দুইজন নিরাপত্তা কর্মীকে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায় পুলিশ।
সেখান থেকে বের হয়ে আবুল কালাম জানান, পুলিশ দুটি লাগেজ খুলে আমাদেরকে দেখিয়েছেন। সেখানে তিন কোটির অধিক টাকা, বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা, চারটি স্বর্ণের বার, অসংখ্য অলংকার রয়েছে। পুলিশ এসব দেখিয়ে আমাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে।
প্রকাশ্যে এল জাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি, সেক্রেটারি

জাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এবার প্রকাশ্যে এসেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ( জাবি) শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি, সেক্রেটারি ও প্রচার সম্পাদক।
মঙ্গলবার ( ২৯ অক্টোবর) রাতে ১০ টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রচার সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন সাকি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। বিবৃতিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে হারুনুর রশিদ রাফি ও সেক্রেটারি মহিবুর রহমান মুহিব এর নাম পাওয়া যায়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয় জাবিতে ছাত্রশিবির সর্বদা প্রস্তুত। আবাসিক হলগুলোতে কোন ধরনের দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, মাদকের বিস্তার রোধে ছাত্রশিবির অঙ্গীকারবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ আনয়ন, গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তবায়ন, সুস্থ ধারার সংস্কৃতির বিকাশ ও নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতে ছাত্রশিবির কাজ করে যাবে। ছাত্রশিবির চায় ছাত্র সংসদ কেন্দ্রীক সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসুক।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ছাত্রশিবিরকে আদর্শিক ভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে নিষিদ্ধের একটি বয়ান তৈরি করে এসেছে। আদতে এই বয়ানের কোনো সত্যতা নেই। ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৪২তম সভায় শিবির নিষিদ্ধের প্রস্তাবনা আসলেও এরকম কোনো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। বরং সভার সিদ্ধান্ত ছিল 'বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাবহির্ভূত বিধায় এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়'। কোনো মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারেনা। ক্যাম্পাসে ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধকরণ ও ট্যাগিং রাজনীতি মূলত ফ্যাসিবাদ কায়েমের সহায়ক শক্তি হিসেবেই কাজ করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ১৫ বছরে ধরে আওয়ামী দুঃশাসনের দরূন রাজনীতির সংজ্ঞাই পাল্টে গেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের রাজনীতি চাই। চব্বিশের শহীদদের আশা-আকাঙ্ক্ষার আলোকে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক সংস্কার হোক। ছাত্ররাজনীতির এ যৌক্তিক সংস্কারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য