ভারত ও তাদের এজেন্টদের মিথ্যা প্রচারণার বিষয়ে যে সতর্কবার্তা দিলেন আযমী

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেছেন, আজ ২২ আগস্ট – এই দিনটি আমার ও আমার পরিবারের জন্য একটি ভয়াল দিন। ২০১৬ সালের এই দিনে ভারতের নির্দেশে ভারতের গোলাম সরকারের হুকুমে ডিজিএফআই এর লোক সাদা পোষাকে আমাকে আমার বাসা থেকে অপহরণ করে নিয়ে দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর তথাকথিত ‘আয়নাঘরে’ বন্দি করে রেখেছিল।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
আযমী বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হলে ৭ আগস্ট রাতে আমাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি আধিপত্যবাদী ভারত ও তাদের দেশ-বিদেশের এজেন্টরা আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ক্রমাগত নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। তাদের এসব নির্লজ্জ মিথ্যা প্রচারণার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার নেই। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিবর্তে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে এ ধরণের নির্লজ্জ মিথ্যাচার হলুদ সাংবাদিকতা ও বিকৃত মানসিকতার প্রতিফলন।
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকা এবং বাংলাদেশে ভারতের এজেন্ট মনজুরুল আলম পান্নার এসব বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই যে, আমার বিরুদ্ধে যা কিছু বলা হয়েছে তা শতভাগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। কোথাও কোনো সূত্র বা ঘটনার সামান্যতম প্রমাণ ছাড়াই এ ধরণের বক্তব্য একদিকে সেনাবাহিনীর মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা এবং অপরদিকে আমার ব্যাপারে জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করার এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ছাড়া এটা আর কিছুই নয়।
তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় ভারত ও তার দালালদের বলতে চাই যে, আমি কোনো দল গঠন করিনি এবং দল করার পরিকল্পনা তো দূরের কথা, দল করার কথা চিন্তাও করিনি। তার বক্তব্য, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে কার্যতঃ নিষ্ক্রিয় করে তিনি একটি ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি আর্মি গঠনের চেষ্টা করছেন। এছাড়া, আনসার আল ইসলামের জঙ্গিদের দিয়ে ভারতে হামলা চালানোর জন্য আত্মঘাতী বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে এসব পাগলের প্রলাপ।
তিনি আরও বলেন, এই মিথ্যাবাদীকে আমি প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, তার বক্তব্যের স্বপক্ষে প্রমাণ হাজির করতে। তা করতে ব্যার্থ হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এই কুলাঙ্গারের বক্তব্য শোনার পূর্বে আনসার আল ইসলাম নামটিই আমি শুনিনি, এবং এখন পর্যন্ত এ ধরণের কোনো সংগঠণ আদৌ আছে কিনা এ ব্যাপারে আমার সামান্যতম ধারণা নেই।
আব্দুল্লাহিল আমান আযমী বলেন, আনন্দ বাজার পত্রিকার বরাত দিয়ে এই কুলাঙ্গার বলছে, সেনাবাহিনীকে ইসলামিকরণের প্রবল চেষ্টা চালাচ্ছে মৌলবাদীরা। … ঐ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে পাকিস্তানপন্থি অবসরপ্রাপ্ত ও বরখাস্ত হওয়া সেনা অফিসারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন আযমী। পাকিস্তানী গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এর অফিসাররা নিয়মিত বাংলাদেশে যাচ্ছেন। তারা ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় একটি অফিস তৈরি করেছেন। এসব বক্তব্য আমার ও আমার প্রাণপ্রিয় সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার ভারতের অপচেষ্টার অংশ বলে নিশ্চিতভাবে বলা যায়।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই যে, আমাকে যারা পাকিস্তানপন্থি বলে অপপ্রচার করে, তারা ভারতের পোষ্য, দালাল, দোসর ও এজেন্ট। আমি খাঁটি বাংলাদেশি – আমার প্রতিটি শিরা, উপশিরা, অণু, পরমানু, লোমকুপ, রক্তবিন্দু খাঁটি দেশপ্রেমিক বাংলাদেশি। সেনাসদর থেকে এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানানো উচিৎ এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। আমি এ ব্যাপারে সেনাপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
তিনি আরও বলেন, ভারতের এই দালাল প্রতিবেদনটি নিয়ে নিজেই সন্দিহান। কারণ সে নিজেই বলেছে, এই রিপোর্ট কতখানি সত্য। উপরন্তু, সে বারবার বলছে, যদি সত্য হয়েও থাকে। সে নিজেই আরও বলছে, আমরা পুরোপুরি সত্য হিসেবে সম্পূর্ণটা হয়তো গ্রহণ করছি না। তার সকল বক্তব্যই যে কল্পিত তা এসবের দ্বারাই প্রমাণিত হয়ে যায়।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, এই পাপিষ্ঠ মনজুরুল আলম ইউটিউবে অপর এক বক্তব্যে ভারতের একই পত্রিকার আরেকটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করে বলেছে, নানা ঘটনার নেপথ্যে সাবেক তিন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা – কোন দিকে নিতে চান তারা বাংলাদেশকে? এই বক্তব্যে আমার সম্পর্কে সামান্যতম কোনো অভিযোগও আনন্দ বাজার বা এই কুলাঙ্গার আনতে পারেনি যার সঙ্গে এই শিরোনামের দূরতম কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে। শুধুমাত্র আমাকে হয়রানি করার জন্য এবং মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভিউ বাড়ানোর জন্য ন্যাক্কারজনকভাবে এই ধরণের মিথ্যা প্রচার করতে ভারতের গোলামদের লজ্জাও করে না।
সর্বশেষ তিনি বলেন, আমার প্রায় ৩০ বছরের সামরিক জীবনে আমার পেশাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা, মানবিক গুণাবলী এবং দেশপ্রেমের যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে এসেছি, তা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল জেনারেলসহ সব অফিসার এবং সর্বস্তরের সেনাদের কাছে জানা আছে। দেশবাসীও আমার দেশপ্রেম সম্পর্কে ভালো করেই জানেন। ভারতের শত্রুসুলভ আচরণের বিরুদ্ধে আমার বলিষ্ঠ অবস্থানই আমি তাদের চক্ষুশূল হবার কারণ। ভারতের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠের আওয়াজ রুখে দেওয়ার জন্যই আমাকে নিয়ে তাদের এই চক্রান্ত।
আমি ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকা কর্তৃপক্ষ এবং মনজুরুল আলম পান্নাকে এই ধরণের নির্লজ্জ মিথ্যাচারের জন্য শর্তহীন ক্ষমা চাইবার জন্য অনুরোধ জানাই। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সর্তবার্তা দিয়েছেন আযমী।
জাতিসংঘের বিশেষ দূতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যান্ড্রুজ। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগে রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সেটিও অ্যান্ড্রুজ স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের আশাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ড. ইউনূস এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি বিশ্ব কৃতজ্ঞ।
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে, জাতিসংঘ সম্মেলন এই দীর্ঘস্থায়ী সংকট সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট পথ প্রদান করবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সাম্প্রতিক আর্থিক সহায়তা হ্রাসের ফলে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সেবায় বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে। তিনি অ্যান্ড্রুজকে পর্যাপ্ত তহবিল নিশ্চিত করতে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে এ সমস্যার সমাধানের পথ বের হবে।
অ্যান্ড্রুজ সংকট সমাধানে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্পৃক্ততার প্রশংসা করেন। তবে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে এবং শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করতে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগটি দুরভিসন্ধিমূলক প্রচারণার কারণে ব্যর্থ হয়েছে।
এমন বিপর্যয় সত্ত্বেও অ্যান্ড্রুজ আশাবাদী, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর অব্যাহত প্রচেষ্টা দ্রুত ও স্থায়ী সমাধান এনে দিতে পারে এবং এ লক্ষ্যে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূমিকা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
আগামী ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে স্টেকহোল্ডার সংলাপে অংশ নিতে অ্যান্ড্রুজ বাংলাদেশ সফর করছেন। প্রধান উপদেষ্টা ওই সংলাপের উদ্বোধন করবেন।
২৫ আগস্ট যে কারণে কক্সবাজার যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে কক্সবাজার যাবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী ২৪ আগস্ট কক্সবাজারে এই সম্মেলন শুরু হবে। পরদিন ২৫ আগস্ট কক্সবাজার যাবেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
প্রেসসচিব বলেন, ‘আগামী ২৪, ২৫ ও ২৬ আগস্ট কক্সবাজারে রোহিঙ্গা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এই বিষয়ে আমরা অনেকের সঙ্গে কাজ করছি। সেই আলোকে রোহিঙ্গা সংকট যাতে আবারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয় হয়, সে জন্য তিনটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার পরিকল্পনা নিয়েছি।
তার প্রথমটি ২৪ আগস্ট শুরু হবে, এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর সবচেয়ে বড় সম্মেলন হবে জাতিসংঘে। সেখানে আশা করছি ১৭০টি দেশ অংশ নেবে। তারপর আমরা আরেকটা বড় সম্মেলন আশা করছি কাতারের দোহাতে।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যে মানবিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে, তাদের কথা আন্তর্জাতিক ফোরামে নিয়ে আসা অনেকটা কষ্টকর।
সে জন্য কক্সবাজারের সম্মেলনে আমরা আশা করছি ৪০টি দেশের প্রতিনিধিরা থাকবেন, অনেক আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এখানে থাকবে। তাদের সঙ্গে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সরাসরি সম্পৃক্ত হতে পারবে, তাদের কথা বলতে পারবেন। ২৪ আগস্ট এই ধরনের একটি আয়োজন রাখা হয়েছে। ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এই সম্মেলন ২৬ আগস্ট শেষ হবে।
অফিশিয়াল পাসপোর্টে ভিসা ছাড়াই পাকিস্তান সফর করা যাবে : প্রেসসচিব

অফিশিয়াল ও কূটনৈতিক পাসপোর্ট পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি সুবিধা পেতে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এদিন দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
প্রেসসচিব বলেন, ‘পাকিস্তানের মতো এ রকম চুক্তি আমরা আরো ৩১টি দেশের সঙ্গে করেছি। এই চুক্তি হবে পাঁচ বছরের জন্য। এর ফলে যারা অফিশিয়াল পাসপোর্ট এবং কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন তারা এখন বিনা ভিসায় পাকিস্তান সফর করতে পারবেন। একইভাবে পাকিস্তানের যারা অফিশিয়াল এবং কূটনৈতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করছেন তারাও বাংলাদেশে সফর করতে পারবেন কোনো ভিসা ছাড়াই।
এটা একটা স্ট্যান্ডার্ড প্র্যাকটিস।’
উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, এই বিষয়ে পাকিস্তান সরকারের সম্মতি পাওয়া গেছে।
নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকি, ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

ঢাকা কর অঞ্চল-৫ এর কর কমিশনার আবু সাঈদ মো. মুস্তাকসহ তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নথি গায়েব করে ১৪৬ কোটি টাকার কর ফাঁকিতে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) কমিশন এই মামলার অনুমোদন দেয়। দুদকের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
শিগগির দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম মামলাটি দায়ের করবেন বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করতে পারে দুদক।
অভিযুক্তরা হলেন- কর অঞ্চল-৫ এর কর কমিশনার আবু সাঈদ মো. মুস্তাক, অতিরিক্ত কর কমিশনার গোলাম কবীর এবং উপ-কর কমিশনার লিংকন রায়।
এর আগে গত ১০ জুলাই একটি করদাতা কোম্পানির আয়কর নথি গায়েব করে সরকারের ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগে ঢাকার কর অঞ্চল-৫, সার্কেল-৯০ (কোম্পানি)-এর অফিসে অভিযান চালায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, অভিযানের সময় ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা কম কর নির্ধারণী আদেশের মূল ফাইলগুলো খুঁজে পায়নি এনফোর্সমেন্ট টিম। এগুলো উদ্দেশ্যমূলক গায়েব করা হয়েছে মর্মে টিমের সদস্যদের কাছে প্রতীয়মান হয়। অভিযানকালে অন্যান্য রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২২-২৩ করবর্ষের মাসিক কর নির্ধারণ রেজিস্ট্রার ৪-এর পৃষ্ঠা নম্বর ৩-এর ৪৪ ও ৪৫ নম্বর ক্রমিকে টিআইএনধারী একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কর মওকুফ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
তাতে দেখা যায়, ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ করবর্ষের দুটি মামলার বিপরীতে কর্তৃপক্ষের নির্ণয় করা আয়ের বিপরীতে কর দাবির পরিমাণ যথাক্রমে ৭২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ও ৭৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সবমিলিয়ে ১৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরে মামলা দুটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অডিটের জন্য নির্বাচিত হয়। এরপর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নথিতে রক্ষিত কর নির্ধারণী আদেশ অনুযায়ী কর মামলা দুটিতে করদাবির পরিমাণ নির্ধারণ করেন যথাক্রমে শূন্য টাকা ও ১ হাজার ২৯৯ টাকা, যা অস্বাভাবিক।
মন্তব্য