কোম্পানীগঞ্জের পর এবার টার্গেট জাফলং, হচ্ছে পাথর লুট

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রের পাথর লুটের পর এবার জাফলংয়েও চলছে পাথর লুট। গত কয়েকদিন ধরে রাতের আঁধারে এই অপকর্ম করছে পাথরখেকোরা। দিনের বেলাতেও পাথর লুটের চেষ্টা করছে তারা।
জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে এরইমধ্যে বড় বড় পাথর তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে পর্যটন কেন্দ্রটি যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে তেমনি হুমকির মুখে পরিবেশ। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষোভ জানিয়েছেন পর্যটকরা।
তবে প্রশাসনের দাবি, পাথর লুট ঠেকাতে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরেক পর্যটন কেন্দ্র সাদাপাথর প্রকাশ্য লুটপাটে অনেকটা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, সিলেট সাদাপাথরে ভয়াবহ লুটপাটের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে দুদকের নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সাদাপাথর পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শন করে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে লুটপাটের বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন তারা। দুদকের পাশাপাশি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারাও।
কোনো ব্যক্তি বা দলের বক্তব্যে নির্বাচন বন্ধ হবে না : অর্থ উপদেষ্টা

কারো ব্যক্তিগত মত বা কোনো দলের কথায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ হবে না বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (১৩ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয়ে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ‘ইউ পেনশন অ্যাপ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করছে উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উপযুক্ত লজিস্টিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কেউ কিছু বললেই নির্বাচন থেমে যাবে না। নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হবে।
নির্বাচন মানেই কালোটাকার ছড়াছড়ি। বিশেষ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার কালো টাকার ব্যবহার বন্ধে কোনো উদ্যোগ নেবে কি না এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এ জন্য কালো টাকার উৎস বন্ধ করতে হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। এটি নিশ্চিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ও সহায়তা করবে। তবে এ জন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতিতেও পরিবর্তন প্রয়োজন।’
সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই স্কিমে এখনো চাকরিজীবী, শিক্ষকসহ অনেক পেশার মানুষ অংশ নিচ্ছেন না।
এটা কেন হচ্ছে এবং মানুষের আগ্রহ না থাকার কারণগুলো অনুসন্ধান করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্কিমে যদি কোনো ভুল বা সমস্যা থাকে, তা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের এই পেনশন স্কিমের আওতায় আনতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি সর্বজনীন পেনশন সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা জোরদার করার কথা বলেন তিনি।’
সরকার থেকে সরে গিয়ে কোন দলে যোগ দিচ্ছেন আসিফ মাহমুদ ?

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা পদে থাকছেন না। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসে তিনি এ তথ্য জানান।
অর্থাৎ, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই যে নাহিদ ইসলামের মতো উপদেষ্টার পদ ছেড়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন আসিফ মাহমুদ, তেমনটাই ইঙ্গিত রয়েছে তার কথায়।
সরকার থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ২০১৮ সাল থেকে আমি রাজনীতিতে যুক্ত। তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাব।
রাজনীতিতে আছেন এমন কয়েকজন সরকারেও আছেন; মাহফুজ আলমসহ আরও কেউ যদি থাকেন এমন কারও নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা উচিত নয় বলেও মনে করছেন এই উপদেষ্টা।
কারণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা দেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে সেরা নির্বাচন উপহার দিতে চান। তাই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের প্রশ্ন যেন না আসে।
আসিফ মাহমুদের মুখ থেকে এমন ঘোষণা আসার আগে থেকে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন ছিল— ভোটের আগে দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ ইসলাম সরকার থেকে সরে এসে এনসিপিতে যোগ দিতে পারেন।
তবে আসিফ মাহমুদ উপদেষ্টা পদ ছেড়ে এনসিপিতেই যোগ দেবেন কি না, তা পরিষ্কার করেননি এই টকশোতে। এছাড়া, আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, সে বিষয়টিও স্পষ্ট করেননি তিনি।
এর আগে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠনকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) তৎকালীন কয়েকজন নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সংগঠনটির কার্যালয়ে, অর্থাৎ ঢাকার বাংলামোটরে রূপায়ন সেন্টারে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ ওঠে এবং আলোচনা চলে।
তবে এ নিয়ে আসিফ মাহমুদের পক্ষ থেকে পরিস্কার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, কার্যক্রম স্থগিত হওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে ছিলেন। সেই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন আখতার হোসেন, আর নাহিদ ইসলাম সদস্য সচিব ছিলেন। ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ছিলেন আসিফ মাহমুদ।
তারা সকলেই ছাত্রশক্তি গঠনের পূর্বে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাথে যুক্ত ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে ২০২৩ সালে ছাত্রশক্তি গঠন করেন।
এদিকে, গুঞ্জন রয়েছে, কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে ভোট করতে পারেন আসিফ মাহমুদ। এজন্য বিএনপি নেতা ও অতীতে আসনটিতে একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সাথে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলেও গুঞ্জন আছে রাজনৈতিক মহলে।
এ নিয়ে আসিফ মাহমুদ বলছিলেন, কেউ কেউ মনে করছেন তিনি মুরাদনগর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। এটা ঠিক নয় বলে দাবি তার।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, আমি জাতীয়পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। সেক্ষেত্রে স্থানীয় স্তরে গিয়ে নির্বাচন করা, রাজনীতি করা সুবিধাজনক হবে না। জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবে ঢাকা শহরই আমার জন্য সুবিধাজনক স্থান।
এছাড়া, কুমিল্লার মুরাদনগরে মবের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড, শিক্ষক নিপীড়ন, চাঁদাবাজি— এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেন; কিছুদিন ধরে এমন আলোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
এগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ‘অপপ্রচার’ বলে দাবি আসিফ মাহমুদের। এসবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাব: আসিফ মাহমুদ

আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক খালেদ মুহিউদ্দীনের টকশোতে তিনি এ কথা জানান।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘২০১৮ সাল থেকে আমি রাজনীতিতে আছি। আমার মতে, নির্বাচনের সময় রাজনীতিতে যারা আছে, তারা সরকারে থাকা উচিত না। তাই তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাবো।’
তবে তিনি এখনও স্পষ্ট করেননি, রাজনীতিতে যুক্ত থাকার পর আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা বা জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দেবেন কি-না।
টকশোতে একক অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুলাই আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে থাকা আসিফ মাহমুদ। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও এক বছরের কার্যক্রম, সামরিক বাহিনীর ভূমিকা, জুলাই আন্দোলনের মিত্র দলের বিভাজন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, নিজের রাজনৈতিক গন্তব্য এবং মুরাদনগরের সাম্প্রতিক ঘটনাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।
তিনি দাবি করেন, ‘আমি পতাকাবাহী গাড়ি বা ক্ষমতার মোহে নয়, বরং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে সোচ্চার থাকার জন্যই সরকারে আছি।’
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে। যার মধ্যে বড় মাইলফলক হলো জুলাই ঘোষণাপত্র। এছাড়া জুলাই সনদ, স্থানীয় সরকার সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা বাকি আছে। এই দায়িত্ব শেষ না করলে ঐতিহাসিক দায় থেকে যাবে।’
গত কয়েক মাস আগে এমন একটি ভিডিও বক্তব্য দিয়েছিলেন যেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রথমে মেনে নিতে চাননি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘এটি সরকার গঠনের আগের ঘটনা। একটি বৈঠকে সেনাপ্রধান ইউনূসের বিরুদ্ধে মত দেন, কারণ আওয়ামী লীগ তার সমর্থক নয়। পরে মানলেও ‘বুকে পাথর চাপা’ শব্দটি ব্যবহার করেন।’
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে আমার বা সরকারের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। ৫ আগস্টের পর বা গণঅভ্যুত্থানের আগে সেনাবাহিনীর অবদান আমরা স্বীকার করি। তবে সেনাপ্রধানের সঙ্গে দ্বিমত শুধু আওয়ামী লীগ বিষয়ক।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় নানা রাজনৈতিক শক্তি সক্রিয় থাকার ইঙ্গিত দিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘একটি মহল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করছে এবং দলটিকে প্রধান বিরোধীদল হিসেবে দাঁড় করাতে চায়। এমনকি কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকে জাতীয় পার্টির হয়ে নির্বাচনে নেয়ার পরিকল্পনা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ড. ইউনূস সরকারের ভেতরও সরকার আছে। একক সরকার নেই, বরং একাধিক সরকার চলছে। ৫ আগস্টের পর সামরিক বাহিনী ক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক শক্তিও আছে। উপদেষ্টারা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন।’
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকার কারণে নাগরিক সেবা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর দায় আমার ওপর পড়ছে, কিন্তু স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আয়োজন করা আমাদের হাতে নেই। সব দল রাজি হলেও বিএনপি ও সহযোগী কিছু দল রাজি হচ্ছে না।’
কুমিল্লার মুরাদনগরে মব লাঞ্চন, শিক্ষক নিপীড়ন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে যারা জড়িত তাদের আশ্রয় দিচ্ছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে নানা আলোচনা চলছে। এসবকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের অপপ্রচার আখ্যায়িত করে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।’
তিনি আরও জানান, ‘কেউ মনে করছেন আমি মুরাদনগর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেব। এটা সত্য নয়।’
আসিফ মাহমুদ যোগ করেন, ‘আমি জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। স্থানীয় স্তরে গিয়ে নির্বাচন ও রাজনীতি করা আমার জন্য সুবিধাজনক নয়। ঢাকা শহরই আমার রাজনৈতিক গন্তব্য।’
ভারত থেকে হু হু করে পানি ঢুকছে বাংলাদেশে, প্লাবিত হতে পারে ৫ জেলা

টানা তিনদিনের ভারী বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া রংপুর, কুড়িগ্রাম নীলফামারী ও গাইবান্ধা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে লালমনিরহাট সদর, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এর মধ্যে পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারী, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী ও ডাউয়াবাড়ী; কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈলমারী ও নোহালী; আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, বাহাদুরপাড়া ও পলাশী; সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নীচু অঞ্চল রয়েছে ।
এদিকে লালমনিরহাটের চরাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট ও আমন ধানের খেত, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বহু পরিবার। অনেকে গবাদি পশু ও মালপত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
বুধবার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি যেভাবে হু হু করে বাড়ছে তাতে যেকোনো সময় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের মানুষজন। এদিকে তিস্তার পানির চাপ সামাল দিতে দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিস্তার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন—টানা কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তার চরাঞ্চলের নিম্নঞ্চলের বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ডুবে গেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে চাষাবাদকৃত ফসলের ক্ষেত। তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান—টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে বুধবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করে ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।পানির চাপ সামাল দিতে ব্যারেজের ৪৪ গেট খুলে রাখা হয়েছে।
তিস্তাপাড়ের গোবর্ধন মনছের আলী বলেন—বুধবার ভোর থেকে ভারতের উজান থেকে পানি হু হু করে আসছে বাংলাদেশের দিকে। এতে ডুবে যাচ্ছে চরাঞ্চলের রাস্তা-ঘাট, পানিবন্দি হচ্ছে মানুষ। আকাশের পানি আর ভারতের পানি একাকার হয়ে গেছে।
তিস্তা সংলগ্ন গড্ডিমারী এলাকার কৃষক জয়নাল আবেদিন জানান—নীচু এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে। পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়ছে। ডুবে গেছে রাস্তা-ঘাট। পশুপাখি, শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি পরিবারগুলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন—বৃষ্টি ও ভারতের উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিস্তা ব্যারেজের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, বুধবার সকাল ৬টায় পানি বিপদসীমা পেরিয়ে ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ সামাল দিতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খোলা রাখা হয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও রাস্তাগুলো পর্যবেক্ষণ করছি।
মন্তব্য