শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে: চিফ প্রসিকিউটর

ভারতের সাথে বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রধান অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে। এমন মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। রোববার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলে তিনি।
তাজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিংবা আইজিপি সবাইকে একই পর্যায়ের আসামি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। তদন্তে প্রয়োজন সাপেক্ষে গুরুতর আসামিদের গ্রেফতার চাওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, গণহত্যার প্রমাণ সংগ্রহ করা প্রধান চ্যালেঞ্জ। সারাদেশে আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজ তথ্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এ সময় গণহত্যার তথ্য প্রমাণ কারও কাছে থাকলে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জানানোর অনুরোধও করেন তিনি।
আওয়ামী লীগের আমলে সিস্টেমেটিক অপরাধ সংগঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণহত্যার বিচারের জন্যই প্রসিকিউশন টিম পুনর্গঠন করা হয়েছে। এটি ক্রমান্বয়ে বাড়বে। আগে যেভাবে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছিল, তা যাতে আর না হয় সেদিকে লক্ষ্য থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
৩৪ বছর পর ২০ টাকা ঘুসের শাস্তি পেলেন সাবেক এক পুলিশ কনস্টেবল

৩৪ বছর পর ২০ টাকা ঘুসের শাস্তি পেলেন সাবেক এক পুলিশ কনস্টেবল। ১৯৯০ সালে ভারতের সহরসা স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন সবজি বিক্রেতা সীতা দেবী। সঙ্গে ছিল এক ঝুড়ি সবজি। সেই সময় পুলিশ কনস্টেবল সুরেশ তাকে দেখে থামতে বলেন। ২০ টাকা ঘুস নেন তিনি। এ ঘটনার দীর্ঘ ৩৪ বছর পর সুরেশকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেন বিশেষ ভিজিল্যান্স বিচারক।
ভারতের জনপ্রিয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার প্রতিবেদনের খবরে জানা যায়, বারাহিয়ার বাসিন্দা সাবেক পুলিশ কনস্টেবল সুরেশ প্রসাদ সিংহ ১৯৯০ সালের ৬ মে বিহারের সহরসা রেলস্টেশনে কর্মরত ছিলেন। এ সময় স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন সবজি বিক্রেতা সীতা দেবী। সঙ্গে ছিল এক ঝুড়ি সবজি। এ সময় সুরেশ তাকে দেখে থামতে বলেন। সীতার কানে কানে কিছু বলেন। সঙ্গে সঙ্গে শাড়ির আঁচল থেকে ২০ টাকা বের করে সুরেশের হাতে তুলে দেন সীতা।
পুরো বিষয়টি নজরে পড়ে সহরসার স্টেশন মাস্টারের। সুরেশকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তিনি। অভিযোগ দায়ের হয় সুরেশের বিরুদ্ধে। তবে অগ্রিম জামিনও পেয়ে যান এ পুলিশ কনস্টেবল। এর পর ১৯৯৯ সাল থেকে সুরেশ পলাতক ছিলেন তিনি। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয় তার বিরুদ্ধে। অনেক চেষ্টা করেও তার খোঁজ মেলেনি।
এর মধ্যেই তদন্ত চলাকালীন দেখা যায়, সুরেশ সরকারি দপ্তরে নিজের যে ঠিকানা দিয়েছিলেন, তা ভুয়া। এর পর গত বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) সুরেশকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেন বিশেষ ভিজিল্যান্স বিচারক সুদেশ শ্রীবাস্তব। সুরেশকে গ্রেফতারের দায়িত্ব ডিজিপি-কে দেন তিনি।
তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলেন বিহার আদালত। অবিশ্বাস্য মনে হলেও ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। বারাহিয়ার বাসিন্দা সাবেক পুলিশ কনস্টেবল সুরেশ প্রসাদ সিংহ। ১৯৯০ সালে তিনি বিহারের সহরসা রেলস্টেশনে কর্তব্যরত ছিলেন।
মনিরুলের স্ত্রী অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা ওএসডি

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। সায়লা সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ও বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলামের স্ত্রী। মনিরুলকে ইতোমধ্যে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকার।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিসিএস ১৭ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা সায়লা ফারজানা বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের মহাসচিব।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পর পতনের পর ১৩ আগস্ট প্রথম অফিসে যান ‘গোপালগঞ্জ কোটায়’ নিয়োগ পাওয়া প্রভাবশালী এই কর্মকর্তা। এ সময় বিগত দিনের পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের একটি দল তার কক্ষে প্রবেশ করে তিনি কেন এসেছেন তা জানতে চান। তাকে আটকে রেখে ক্ষোভ ঝারতে থাকেন বঞ্চিতরা।
খবর পেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মাসুদুল হাসান কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিজের দফতরে নিয়ে যান। বঞ্চিতরা তখন তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে না আসার জন্য হুঁশিয়ারি দেন। পরে তাকে পুলিশি পাহারায় গাড়িতে করে সচিবালয়ের বাইরে পাঠানো হয়। এরপর তিনি আর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যাননি।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি সাবেক সেনাপ্রধান মইনের

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে নতুন তথ্য দিয়েছেন তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদ। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে মইন ইউ আহমেদ নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ২৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। এতে ১৫ বছর আগে বিডিআর বিদ্রোহের দিন কী কী হয়েছিল সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন এই সাবেক সেনাপ্রধান।
বিডিআর বিদ্রোহ চলাকালে সাংবাদিক মুন্নী সাহার লাইভ রিপোর্টিং নিয়েও কথা বলেছেন মইন ইউ আহমেদ।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, পিলখানার ভেতরে কী হচ্ছে, তারা কি অফিসারকে জিম্মি করছে, না হত্যা করছে? শুধু আমরা গুলির আওয়াজ শুনছি এবং এই গুলির আওয়াজ ওই এলাকার চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে। গোয়েন্দার থেকে আমরা কোনো তথ্যই পাচ্ছিলাম না। শুধু ইলেকট্রনিক মিডিয়ার লোকজন (সাংবাদিক) ওখানে লাইভ প্রোগ্রাম কাভার করছিল। তার মধ্যে ছিল আমার যা স্মরণ পড়ে, মুন্নী সাহা টেলিকাস্ট করছিল লাইভ এবং বিদ্রোহীরা অফিসার সম্বন্ধে বিভিন্ন ভুল বক্তব্য, মিথ্যা বক্তব্য তুলে ধরছিল জনগণের সামনে। এর মাধ্যমে একটি ভুল ধারণা সৃষ্টি হচ্ছিল অফিসার সম্বন্ধে। এ ছাড়াও বিডিআরের অন্যান্য ক্যাম্পেও এই বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করছে।
ভিডিওর শুরুতে জুলাই-আগস্ট মাসে নিহতদের মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থ কামনা এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দোয়া করে মইন ইউ আহমেদ বলেন, সরকার ও ছাত্র-জনতা যেভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা অফিসার হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহ ঘটনার আমি যখন তদন্তের আদেশ দেই, তখন আমাকে বলা হয় যখন সরকার এ বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী? এই তদন্ত করতে সরকারের কাছ থেকে যে সাহায্য প্রয়োজন তা আমরা পাইনি।
সাবেক এই সেনাপ্রধান বলেন, সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী (বর্তমান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা)। তিনি তার কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারেননি, কারণ অনেকে জেলে ছিল, অনেককে প্রশ্ন করা সম্ভব হয়নি। আমার কাছে এসে বেশ কয়েকবার তার সমস্যার কথা তুলে ধরেন। আমি আশা করি, তিনি এখন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হয়েছেন, তিনি এই তদন্ত কমিটি পুনর্গঠিত করে জড়িতদের বের করতে সক্ষম হবেন। আমি সরকার গঠনের পর তাকে এ বিষয়ে অনুরোধ করেছি।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সেদিন (২০০৯ সালের) ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে সাড়ে ৭টায় সেনাসদরের প্রতিদিনের মতো কাজ শুরু হয়। সকালে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ছিল, যেখানে সেনাবাহিনীর পরবর্তী বছরের কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সকালে আমি সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় সিজিএস লেফটেন্যান্ট জেনারেল সিনহা আমার কাছে এসে বলেন, আমাদের কাছে কিছু মর্টার আছে, যা সেনাবাহিনী ব্যবহার করে না। এর গুদামজাত এবং রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের জন্য কঠিন। বিডিআর এগুলো ব্যবহার করে। এগুলো তারা নিয়ে গেলে আমাদের উপকার হবে। এরপর আমি বিডিআরের ডিজির জেনারেল শাকিলের সঙ্গে কথা বললে তিনি এগুলো নিতে রাজি হন। আমার বিশ্বাস তিনি তখন পর্যন্ত এই বিদ্রোহ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। এরপর আমি সিজিএস মিটিংয়ের জন্য যাই। ৯টায় সেই মিটিং শুরু হয়। আমরা সবাই তখন ব্যস্ত হয়ে পড়ি সেখানে। সাড়ে ৯টায় তার দিকে আমার প্রিন্সিপল সেক্রেটারি কর্নেল ফিরোজ রুমে প্রবেশ করেন এবং আমাকে বলেন, পিলখানায় গণ্ডগোল হচ্ছে। আপনার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। কিছুক্ষণ পর আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করি কিন্তু তাদের ফোন ব্যস্ত পাই।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, সামরিক গোয়েন্দারা তখন আমাকে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানায়। পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করে আমি তখন সময় বাঁচাতে কারও নির্দেশ ছাড়া আরেকটি ব্রিগেডকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত হতে নির্দেশ দিই। তারা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে শুরু করে, যার নামকরণ করা হয় অপারেশন রেস্টোর অর্ডার। এ সম্পর্কে পিএসও এফডি জেনারেল মবিনকে অবহিত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ৯টা ৪৭ মিনিটে ডিজি বিডিআরকে ফোনে পাওয়া যায়। তিনি আমাকে জানান, দরবার চলাকালীন দুইজন সশস্ত্র সৈনিক প্রবেশ করে একজন আমার পেছনে দাঁড়ায়। এরপরই বাইরে থেকে গুলির শব্দ আসে। সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে থাকা সৈনিকরা দরবার হল থেকে বের হয়ে যান। এগুলো সবই মনে হয় প্ল্যান করা এবং প্ল্যান অনুযায়ী সব চলছে। তিনি (বিডিআর ডিজি) বলেন, আমি সেক্টর কমান্ডার এবং ব্যাটালিয়ন কমান্ডারদেরকে পাঠিয়েছি তাদের ফেরত আনার জন্য। তখন আমি তাকে অপারেশনের কথা জানাই।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, ৯টা ৫৪ মিনিটে আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে সক্ষম হই। এর মধ্যে তিনি বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়ে গিয়েছিলেন। এসময় আমি তাকে অপারেশনের কথা জানালে তিনি জানতে চান, কতক্ষণ সময় লাগবে এই ব্রিগেড তৈরি করতে? আমি সময় জানিয়ে ব্রিগেডকে পিলাখানায় যাওয়ার জন্য তার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দেন। এক্ষেত্রে অনেক সময় লাগলেও ৪৬ ব্রিগেড ১ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রা শুরু করে। ব্রিগেড কমান্ডারের নেতৃত্বে ১০ জন অফিসার এবং ৬৫৫ জন অফিসার যাত্রা শুরু করেন।
তিনি বলেন, এদিকে বিদ্রোহীরা বিডিআর গেটগুলোর সামনে আক্রমণ প্রতিহত করতে রকেট লাঞ্চার, মর্টারসহ অন্যান্য অস্ত্র মোতায়েন করে। বেলা ১১টায় ৪৬ ব্রিগেডের প্রথম গাড়িটি মেইন গেটের কাছাকাছি পৌঁছালে বিদ্রোহীরা একটি পিকআপ লক্ষ করে রকেট হামলা চালায়। এতে চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান। লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসের ধারণা অনুযায়ী সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যেই ডিজি, ডিডিজি, কর্নেল আনিস, কর্নেল কায়সারসহ অনেক অফিসারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আমাদের টিম পৌঁছায় ১১টার পরে।
সাবেক সেনাপ্রধান জানান, ক্যাপ্টেন শফিক তার নেতৃত্বে ৩৫৫ জন র্যাব সদস্য নিয়ে পিলখানায় পৌঁছান ১০টার আগেই। এ সময় তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পিলখানায় প্রবেশের অনুমতি চাইলেও তা পাননি। তিনি অনুমতি পেলে হয়ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সুবিধা হতো এবং এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
তিনি জানান, ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে পিএসও এএফডি জানায়, সরকার রাজনৈতিকভাবে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, কোনো আলোচনার আগে সেনাবাহিনীকে এ এলাকা থেকে চলে যেতে হবে। তাদের সঙ্গে সমঝোতা না হলে তখন সামরিক অভিযান পরিচালনা করা হবে। বেলা ১২টায় তিনি আমাকে ফোন করে জরুরিভিত্তিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যমুনায় দেখা করতে বলেন। বেলা ১টার দিকে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং হুইপ মির্জা আজম আলোচনার জন্য পিলখানায় যান।
তিনি আরও বলেন, আমি যমুনায় যাওয়ারও ঘণ্টাখানেক পর বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধান সেখানে আসেন। অর্থাৎ তাদের আমার পরে ফোন করে আসতে বলা হয়েছে। অনেকক্ষণ পর তারা সেখানে এলে আমাদের জানানো হয়, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং হুইপ মির্জা আজম বিদ্রোহীদের একটি দল নিয়ে যমুনাতে আসছেন এবং তারা সাধারণ ক্ষমা চায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্রোহীদের কিছু বলার থাকলে আমরা যেন তাদের বলি। তখন আমি তাকে বলি, অনেকে নিহত হয়েছেন। তাদের কোনো দাবি মানা যাবে না। আপনি তাদের বলবেন প্রথমত, অফিসার হত্যা এই মুহূর্তে বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, যাদের আটক করা হয়েছে তাদের সবাইকে এখনই মুক্তি দিতে হবে। তৃতীয়ত, অস্ত্রসহ বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে এবং চতুর্থত, সাধারণ ক্ষমা দেওয়ার প্রশ্নই নেই।
১৪ জন বিদ্রোহী ৩টা ৪৮ মিনিটে ডিএডি তৌহিদের নেতৃত্বে যমুনাতে আসেন। তাদের একটি বড় রুমে রাখা হয়। আমি তখন আমার এডিসি জুনায়েদকে বিদ্রোহীদের নেতাকে নিয়ে আসতে বলি। ডিএডি তৌহিদ যখন আসেন তখন আমি পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সকাল ৯টায় বিদ্রোহীরা আমাকে একটি রুমে তালা মেরে রাখে। মাত্রই তালা খুলে আমাকে নিয়ে আসা হয়। আমি কিছুই জানি না।
মইন ইউ আহমেদ বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। তখন আমি তাকে বলি, আপনি জানেন না, এখানে বাকি যারা আছেন তারা তো জানেন। তাদের গিয়ে জিজ্ঞাসা করেন এবং আমাকে জানান।
ভিডিওতে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন মইন ইউ আহমেদ। এ সময় বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে তার লেখা বই খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
সীমান্তে পিঠ দেখাবেন না, অর্পিত দায়িত্ব পালন করুন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্ত সুরক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধ বিজিবি’র মূল দায়িত্ব। তিনি এ সময় বিজিবি’কে পেশাদারিত্বের সঙ্গে নিজেদের দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানান। ফেলানীর মতো হত্যাকাণ্ড আর দেখতে চাই না উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘সীমান্তে পিঠ প্রদর্শন করবেন না। নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করুন।’
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিজিবির সদর দফতর রাজধানীর পিলখানায় সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ নির্দেশনা দেন।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘দুর্নীতিকে কোনও অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না। যারা ঘুষ ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিজিবি’কে আইন অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী-সহ বিজিবি সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ভিডিও টেলি কনফারেন্সের (ভিটিসি) মাধ্যমে বিজিবির সব রিজিয়ন কমান্ডার, সেক্টর কমান্ডার, ব্যাটালিয়ন কমান্ডারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য