গোবিপ্রবির ৩ বিভাগে নেই স্নাতকোত্তর

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের অধীনে তিনটি বিভাগে শুধু স্নাতক পর্যায়ে পাঠদান চলছে। তবে আজো স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান চালু হয়নি।
এ বিভাগগুলো হলো- কৃষি, অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন এবং ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স। বর্তমানে কৃষি বিভাগে নবম ব্যাচ, ভেটেরিনারি বিভাগে সপ্তম ব্যাচ এবং ফিশারিজ বিভাগে সপ্তম ব্যাচে শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নরত।
এর মধ্যে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষি বিভাগে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু করা হলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। ফিশারিজ ও ভেটেরিনারি বিভাগে এখনো স্নাতকোত্তর চালু করা সম্ভব হয়নি।
কৃষি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, “একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থার জন্য স্নাতকোত্তর থাকা জরুরি। স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের উচ্চতর জ্ঞান ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর করতে গেলে শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকট, তত্ত্ববধায় সংক্রান্ত সমস্যা ভোগেন। এছাড়া বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সহযোগিতা কম থাকে। আর অযথা সময়ও নষ্ট হয়।”
ফিশারিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নুরুল আলম বলেন, “স্নাতকোত্তর না থাকায় আমাদের উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে যেতে হয়। এতে ভর্তি পরীক্ষা, কাগজপত্র স্থানান্তর, একাডেমিক সমন্বয় ও গবেষণায় নানা জটিলতা দেখা দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সংকট ও সহযোগিতার অভাবেও শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এছাড়া, আবাসন সমস্যা, পারিবারিক চাপ ও নিরাপত্তার অভাব মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, “কৃষি অনুষদে স্নাতকোত্তর চালু করতে হলে ইউজিসির অনুমোদন প্রয়োজন। অনুমোদন ছাড়া আমরা শিক্ষকদের বেতন দিতে পারি না। বর্তমানে ভেটেরিনারি বিভাগে স্থায়ী শিক্ষক মাত্র একজন, বাকি ১৬ জন অনলাইনে পার্টটাইম শিক্ষক।”
তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষক সংকট প্রকট। আবার শতাধিক শিক্ষক বিদেশে চলে গেছেন। অনেকেই ফিরবেন কিনা তা নিশ্চিত নয়। কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার আবেদনও করেছেন। নতুন শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত স্নাতকোত্তর কার্যক্রম চালু সম্ভব নয়।”
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষক নিয়োগের পর ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করছি বর্তমান সমস্যাগুলো, বিশেষ করে করোনাকলের সেশনজট নিরসনের চেষ্টা করছি। ডিসেম্বরের মধ্যে ক্লাস বাড়িয়ে সেশনজট শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
পঙ্গুত্বের পথে শিক্ষার্থী, হল সংস্কারে ব্যর্থতার অভিযোগে প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি

জামালপুর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবিপ্রবি) মির্জা আজম (প্রস্তাবিত বিজয় ২৪) হলের আবাসিক ছাত্র ও ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মাশরুর জামান মোল্লা (রোশান) গোসল করতে গিয়ে পা পিচলে পড়ে আহত হয়ে জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপালের ভর্তি হয়৷ এরপর উন্নতর চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কতৃপক্ষ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন ৷
জানা যায়, শিক্ষার্থী মাশরুর রোশান আজম হলের নিচতলার ১০৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন৷ গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) দুপুরে গোসল করতে ওয়াশরুমে গেলে পা পিচলে পড়ে পায়ের গোড়ালীর রগ কাটা পড়ে।চিকিৎসকরা জানান, ৮২দিন পা নাড়াচাড়া করতে পারবে না মাশরুর। তবে এমন দূর্ঘটনা পঙ্গুত্বের দিকে নিয়ে যেতে পারে মাশরুরকে বলে জানান চিকিৎসকরা৷
নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মাশরুরের বাবা মারা গিয়েছে ২০০৯ সালে৷ মা একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চাকরি করেন। ক্যাম্পাসের সামনে ফটোকপির দোকান দিয়ে কোনমতে নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাতেন তিনি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে জুলাই গনঅভ্যুত্থানে জড়িত মাশরুর অভ্যুত্থান পরবর্তী ক্যাম্পাসের বিভিন্ন দাবি আদায়ের আন্দোলনেও সম্মুখে ছিলেন৷ পারিবারিক আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন ও পড়াশোনায় দেখা দিয়েছে চরম অনিশ্চিয়তা।
এদিকে এমন ঘটনার পর তোলপাড় উঠে নানা সমস্যায় জর্জরিত আজম হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফরহাদ আলীর বিরুদ্ধে৷ প্রভোস্টের পদত্যাগ, হল সংস্কার, রোশানের চিকিৎসা ব্যয়ভার গ্রহণ এবং বড় ধরণের ক্ষতি হলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ ‘জামালপুর সাইন্স এন্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি ফ্যামিলি এবং জাবিপ্রবি শিক্ষার্থী সংসদ’ এ এমন দাবি তোলে শিক্ষার্থীরা৷ শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মিনহাজ লিখেন, ‘হল প্রভোস্টের পদত্যাগ চাই৷ হলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য তাকে অনেকবার বলা হলেও বরাবরই তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। যিনি ছোট্ট একটা হল পরিচালনা করতে পারেনা তাকে আমরা চাই না। শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে দ্রুত ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করার মতো দক্ষ হল প্রভোস্ট চাই।’ শিক্ষার্থী ফারুক আহমেদ লিখেন, ‘একটা মাত্র ছোট হল৷ এই হলের ওয়াশরুমগুলো এতটা বাজে আমি নিজেও ২/৩ বার পড়ে গিয়েছি। আজকে এতবড় একটা দুর্ঘটনা ঘঠে গেলো এসবের দায়ভার কে নিবে? হল প্রভোস্ট এই ছোট্ট একটা হলের ম্যানেজমেন্ট করতে পারেনা। সত্যিই লজ্জাজনক৷’ মনির আহমেদ লিখেন, ‘আমার প্রথম পরীক্ষার দিন আমি পড়ে গিয়ে প্যান্ট ছিঁড়ে গেছে। বেসিনের পাইপ ফেটে গেছে এটা সারতে ও নাকি বাজেট লাগে।’ ফাহাদ আহমেদ লিখেন, ‘আজ এত মাস হয়ে গেল৷ এতবার অভিযোগ সমস্যার কথা বলা হলো৷ যেন মেজর প্রবলেম গুলো সলভ করেন৷ কিন্তু এর বিপরীতে কোনো ইতিবাচক সাড়াই পাওয়া গেল না৷’ আতিকুর রহমান লিখেন, ‘হল প্রভোস্ট এ দায় এড়াতে পারবেন নাহ। তাকে জবাবদিহি করতেই হবে৷ হলের কোন উন্নয়ন দৃশ্যমান নেই।’ ফাহিম হোসেন লিখেন, ‘লিগ্যালি হল এলোটমেন্টের জন্য আমি লিখিত আবেদন দিয়েছিলাম কিন্তু সাড়া পাইনি৷ লজ্জা থাকলে করে ফেলত (পদত্যাগ) এতদিন৷ চরম ব্যর্থ একজন প্রভোস্ট৷’
জাবিপ্রবিতে ছাত্রদের একমাত্র আবাসিক এই হলে দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যায় জর্জরিত বলে জানান একাধিক শিক্ষার্থী৷ নেই লিগ্যাল সিট বরাদ্দ, নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না পানির ট্যাংক, যার জন্য অনেকের চুলকানি হয়। বাথরুমের উপর পাইপ থেকে পানি পড়ে এবং অপরিচ্ছন্ন থাকে৷ নষ্ট খাওয়ার পানির ফিল্টার। নিম্নগতির ওয়াইফাই। নেই ওয়াশরুমে প্রয়জনীয় জিনিসপত্র৷ রুমের ভিতর রঙ খুলে পড়ে৷ হলে নেই ফাস্টএইড ও এম্বুলেন্স সুবিধা ইত্যাদি বলে জানান শিক্ষার্থীরা৷
এ ব্যাপারে আহত শিক্ষার্থী মাশরুর রোশান জানান, ‘প্রভোস্ট প্রচন্ড দায়িত্বহীন লোক৷ হলের বিষয়ে অমনোযোগী৷ খেয়ালই রাখেন না হলের৷ ক্লিনিং তো অন্তত সুন্দরভাবে করতে পারে৷ ক্লিনিংও কর্মচারীদের বকাঝকা করে আমাদের করিয়ে নিতে হয়৷ ঐ ভিসি স্যার যেদিন পরিদর্শনে আসেন কিংবা এখন আমি আহত হওয়ার পর পরিষ্কার করবে৷ পুরো ক্যাম্পাসে একজন মাত্র সুইপার৷’ হল প্রভোস্টের পদত্যাগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাশরুর জানান ‘সিনিয়ররা যদি মনে করেন প্রভোস্টকে সরানো উচিত সরান৷’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফরহাদ আলী বলেন, ‘অনেকেই যেটা লিখেছে ভুল তথ্য লিখেছে৷ তারা কি লিখেছে এটা তাদের বিষয়৷ এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় সিদ্ধান্ত নিবেন৷ রোশান ও তার মায়ের সাথে সার্বক্ষনিক কথা বলছি৷ কাল ভিসি স্যার আসলে তার চিকিৎসার ব্যয়ের ব্যাপারে আলোচনা হবে৷ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে এটা ঠিক৷ আমাদের প্রক্রিয়া চলমান মোজাইক উঠিয়ে টাইলস করা হবে৷ হলে রং করা হবে, রাস্তা ও সাইকেল রাখার শেড নির্মান করা হবে৷ প্রসিডিউর এখনো শেষ তারপর টেন্ডারে গিয়ে কাজ শুরু হবে৷
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান জানান, ‘মাশরুরের সাথে কথা বলেছি৷ এ ব্যাপারে কাল বসবো যথাসম্ভব হেল্প করার চেষ্টা করবো৷ আর হল রিনোবেশনের টেন্ডার এস্টিমেটেড হয়ে গেছে৷ বিশ্ববিদ্যালয় খুললে কয়েকদিনের মধ্যেই ইউজিসিতে যাবে এবং টেন্ডারিং হবে৷ হল মেক্সিমামই রিনোটেড করা হবে৷ টেন্ডারিং হওয়ার আগ পর্যন্ত যথাসম্ভব পরিষ্কার রাখতে বলছি৷ প্রভোস্ট যদি প্রপারলি কাজ না করে সেটাও দেখতে হবে৷’
টেকসই নগর পরিকল্পনা প্রতিযোগিতায় তৃতীয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দল

গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আয়োজিত “টেকসই নগর পরিকল্পনায় তরুণদের ভাবনা-২০২৫” শীর্ষক জাতীয় প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চমৎকার পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি দল তৃতীয় স্থান (সেকেন্ড রানার্সআপ) অর্জন করেছে।
২৮ মে ঢাকায় স্থাপত্য অধিদপ্তরের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত হয় এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা হলেন নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহি মির্জা, মো. হাসান, সুমাইয়া বিনতে ও তাবাসসুম মল্লিক।
প্রতিযোগিতায় থিম-১: নগর ও অঞ্চল/গ্রামীণ পরিকল্পনা এবং থিম-২: আরবান ডিজাইন এই দুটি থিম নির্ধারণ করা হয়। দেশের স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সংশ্লিষ্ট বিভাগে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করেন এবং মোট ৬০টি আইডিয়া উপস্থাপন করা হয়। তিন ধাপে এসব আইডিয়ার উপস্থাপনার ভিত্তিতে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত মূল্যায়ন করেন বিচারকরা। মূল্যায়নের ভিত্তিতে থিম-১ থেকে ৩টি এবং থিম-২ থেকে ৩টি আইডিয়া চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়।
খুবির দলটি শহরের অব্যবহৃত পার্ক ও খেলার মাঠগুলো চিহ্নিত করে দেখিয়েছে যেসব জায়গায় বর্তমানে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে বা ব্যবহৃত হচ্ছে না, সেগুলোকে শিশুদের জন্য কিভাবে সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে সুস্থ ও সক্রিয় নগরজীবনের অংশ করে তোলা যায়। তাদের এই চিন্তাভাবনাই থিম-১-এ তৃতীয় স্থান অর্জনে সহায়ক হয়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, একই থিমে প্রথম স্থান অর্জন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিজা বিনতে হাসান। অন্যদিকে, থিম-২ অর্থাৎ আরবান ডিজাইন বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদুল ইসলাম।
অর্জন সম্পর্কে খুবির দলটি জানায়, “জাতীয় পর্যায়ে এমন স্বীকৃতি আমাদের আরও উৎসাহিত করবে। ভবিষ্যতে আমরা আরও পরিশ্রম করতে চাই এবং সবাইকে এই ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত করবো। আমরা মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের সুনাম বৃদ্ধিতে শিক্ষার্থীদের কার্যকর ভূমিকা রাখা উচিত।”
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “তরুণদের মাধ্যমে একটি সমতাভিত্তিক ও মানবিক নগর গড়ে উঠতে পারে। তরুণ প্রকৌশলী ও নগর পরিকল্পনাবিদদের চিন্তা ও পরিকল্পনা নগরায়নকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই করতে সহায়ক হবে। এরকম প্রতিযোগিতা সে লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মাহমুদ আলী। অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
নেচার ইনডেক্সে ২৩তম বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল 'নেচার'-এর ২০২৫ এর তালিকায় গবেষণার মান ও সংখ্যার ভিত্তিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে বাংলাদেশে ২৩তম স্থান করে নিয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। বৈশ্বিক দিক থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৬৬৬৬তম। একাডেমিক দিক ববির স্থান ২০তম। বৈশ্বিকভাবে একাডেমিক দিক থেকে ববির অবস্থান ৩১৪২ তম।
এই তালিকাটি প্রণয়ন করা হয়েছে ২০২৪ সালের ১ মার্চ থেকে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়কালের গবেষণা তথ্যের ভিত্তিতে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের এবারের অবস্থান সন্তোষজনক। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্য নেপাল ও শ্রীলঙ্কাকে পিছনে ফেলে মালয়েশিয়ার পরই স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। এবারের বাংলাদেশের অবস্থান ৫৯তম। তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে চীন।
গবেষণায় অবদানের মান ও আন্তর্জাতিক মানের জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধের পরিমাণ বিবেচনায় এনে এই র্যাঙ্কিং প্রকাশ করে Nature Index।
তালিকায় বাংলাদেশের শীর্ষে রয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)। এর মধ্য ২৩ নম্বরে উঠে এসেছে দক্ষিণাঞ্চলের বাতিঘর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। বিষয়ভিত্তিক গবেষণার দিক থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান রসায়নে ১০ম এবং মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞানে পঞ্চম। বৈশ্বিকভাবে এই অবস্থান যথাক্রমে ২৮৫৪ তম ও ২০৬০ তম।
রাইজিং ক্যাম্পাস/আরকেএস
নেচার ইনডেক্সের র্যাংকিংয়ে শীর্ষ ১০-এ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

গবেষণা ও প্রকাশনার জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃত গবেষণা মূল্যায়ন সংস্থা নেচার ইনডেক্স-এর ২০২৪ সালের তথ্যানুযায়ী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) দেশের সেরা ১০টি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮ম স্থান অর্জন করেছে।
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি সময়কালের গবেষণা কার্যক্রমের ভিত্তিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক অবস্থান ৪৬৬০তম এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বের মধ্যে অবস্থান ২৫৭৮তম।
এছাড়াও সাইমাগো ইনস্টিটিউশন র্যাংকিংস (এসআইআর)-এ বিশ্ববিদ্যালয়টি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, যা গবেষণার প্রভাব ও উদ্ভাবনী দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রকাশিত তথ্যমতে, রসায়ন বিষয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের মধ্যে অষ্টম এবং বিশ্বে ২৭৫৭তম অবস্থানে রয়েছে। ভৌত বিজ্ঞানে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের মধ্যে তৃতীয় এবং বিশ্বে অবস্থান ২৩৯৬তম।
আরও পড়ুন
এই সময়কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জার্নালে তিনটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে ‘অ্যাপ্লায়েড ফিজিক্স লেটারস’ নামক জার্নালে দুটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে, যার যৌথ শেয়ার (ফ্র্যাকশনাল কন্ট্রিবিউশন) ০.৩৫। অন্যদিকে ‘কেমিক্যাল সায়েন্স’ নামক জার্নালে একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যার শেয়ার ০.০৭। সব মিলিয়ে মোট শেয়ার দাঁড়িয়েছে ০.৪২।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সাফল্যে আনন্দ প্রকাশ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “এই অর্জন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ধারাবাহিকতা ও মান নিশ্চিত করার প্রমাণ। এ অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গবেষণা কাজে আরো উৎসাহী হবে। গবেষণা সংস্কৃতি গড়ে তুলতেই আমরা কাজ করছি। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখতে চাই।”
উল্লেখ্য, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বিগত কয়েক বছর ধরে গবেষণার মানোন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে অবস্থান উন্নয়নের লক্ষ্যে ধারাবাহিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এবারের অর্জন সেই প্রচেষ্টারই একটি গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল।
মন্তব্য