অনলাইনে করা যাবে সাত কলেজের সার্টিফিকেট উত্তোলনের আবেদন

বাঙলা কলেজ প্রতিনিধিঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট ও নম্বরপত্র উত্তোলনের আবেদন করতে আর স্বশরীরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে যেতে হবে না। এখন থেকে অনলাইন আবেদনের মাধ্যমেই সার্টিফিকেট ও নম্বরপত্র তুলতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি বিষয়টি উল্লেখ করে ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীর দপ্তর থেকে কলেজ অধ্যক্ষদের একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের সেবার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট ও নম্বরপত্রের আবেদন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, এই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ‘কলেজের জন্য নির্দেশাবলি’ নামে একটি দিক নির্দেশনা মেইলে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টি অতি জরুরি উল্লেখ করে, সব বিভাগে গুরুত্ব সহকারে জানানোর জন্যও চিঠিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাতটি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ।
ঢাবি-জাবিতে হত্যার ঘটনায় যা জানালেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি প্রতিক্রিয়া জানান।
হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘২২ তারিখ (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলা হচ্ছে। দেশজুড়ে অন্যান্য ক্যাম্পাসও দ্রুত খোলা হবে। শিক্ষার্থীরা কোনও হামলাকারীর সঙ্গে ক্লাস ও পরীক্ষায় বসতে পারে না। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলাকারীদের বিরুদ্ধে এখনও মামলা হয়নি। প্রশাসনিকভাবে কোনও আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ওপর প্রকাশ্যে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৬ বছরে ক্যাম্পাসে অনেকেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার গুণ্ডাবাহিনীর দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন। হাসিনার অত্যাচারী শাসনামলে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির কিংবা অন্যান্য রাজনৈতিক দলে যারা তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন, গণতন্ত্র-ন্যায় এবং সত্যের পক্ষে কথা বলেছেন তারা অনেকেই নির্বিচারে মামলার শিকার হয়েছেন। অতীতে যারা হাসিনার স্বৈরতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে লাঠিয়াল হিসেবে গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলা ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতন করেছেন, সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত তাদের বিচারের আওতায় আনা। বিভিন্ন রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, তাদের মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ট্যাগিংয়ের মাধ্যমে যারা নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়েছেন, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
যেসব শিক্ষক নির্যাতনে সহযোগিতা করেছেন, তাদের বিচারের দাবি জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে যেসব শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপর হওয়া নির্যাতনকে সমর্থন করেছেন বা সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও প্রশাসনের নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা দেখেছি, ক্লাসরুমে বসে যে শিক্ষক নৈতিকতার পাঠ দিয়েছেন, তিনিই আবার স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন। অন্যায়কে পরোক্ষভাবে সমর্থন করেছেন। নতুন বাংলাদেশে আমরা এমন শিক্ষক চাই, যারা তাদের শিরদাঁড়া উঁচু করে কথা বলবেন এবং শিক্ষকের মহান মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক বলেন, ‘মবলিঞ্চিং কোনও অবস্থাতেই কোনও সমাধান হতে পারে না। এটা একটা সুস্পষ্ট অপরাধ। যে বা যারাই এর সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থী দাবি করে কেউ যেন পার পেয়ে যেতে না পারে। সব মিলিয়ে আমরা কোনও হামলাকারী বা নির্যাতনকারীর পুনর্বাসন চাই না। ফ্যাসিবাদ-উত্তর বাংলাদেশের প্রতিটি ক্যাম্পাস হবে জঞ্জালমুক্ত।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের পুনর্বাসনের কোনও পথ যেমন উন্মুক্ত নেই, তেমনই আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে অপরাধে অভিযুক্ত হলে তাকেও শাস্তি পেতে হবে। এ বিষয়ে প্রশাসন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে অনুরোধ করছি। পাশাপাশি স্বৈরাচারী হাসিনার ফাসিস্ট রেজিমকে পাকাপোক্ত করতে যেসব সুশীলরা কালচারালি কিংবা পলিটিকালি মদদ যুগিয়েছিল, নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আলাপে তাদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামে এক যুবককে আটক করে ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। পরে সে গণপিটুনির শিকার হয়। এরপর রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুধবার বিকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জয় বাংলা ফটক এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীমকে মারধর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রক্টরিয়াল বডি’র হাতে তুলে দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আশুলিয়া থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এরপর রাত ৯টার দিকে চিকিৎসার জন্য সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তালা ভেঙ্গে মারধরে ছাত্রলীগ নেতা পিস্তল শামীমের মৃত্যু, ছাত্রদলের ৫ জন শনাক্ত

ঢাবি সাংবাদিক সমিতির ৩৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন

সৈরাচার পতনের চল্লিশা উপলক্ষে ইবির শেখ রাসেল হলে গরু অভিযান

ইবি প্রতিনিধি: সৈরাচার হাসিনার পতনের চল্লিশা উপলক্ষে গরু অভিযান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শেখ রাসেল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সাকসেস’ ভর্তি কোচিংয়ের সহযোগিতায় এই নৈশভোজের আয়োজন করা হয়
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের ছাদে এই নৈশভোজের আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে হলের বিভিন্ন বিভাগ ও শিক্ষাবর্ষের ২ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
আয়োজকরা জানান, এই নৈশভোজ শুধুমাত্র খাবারের আয়োজন নয় বরং এর উদ্দেশ্য হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য ও পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটানো। এই আয়োজন স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে দেয় এবং যাতে ভবিষ্যতে দেশে কখনো স্বৈরাচারের জন্ম না হয় সেই বার্তা বহন করে। এসময় গরু অভিযান ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজনে হলের শান্তি বজায় রাখতে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া বিভিন্ন কার্যক্রমের উদ্যোগ হিসেবে খেলাধুলা, বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান চর্চা ও প্রতিভার বিকাশ ঘটবে এমন নিয়মিত আয়োজন করার জন্য মতামত পেশ করা হয়। হলের রিডিং রুম, ডিবেট রুম, গেম রুমের জন্য নতুন রমের ব্যবস্থা করা, মসজিদের মাইক স্থাপন, মাদক নির্মুল, বৈষম্যহীনভাবে যৌক্তিকভাবে হলের সিট বন্টন ও সিনিয়র- জুনিয়র সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপারে জোরালো আলোচনা হয়েছে৷
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগেও 'খুনি হাসিনার চল্লিশা' ভোজ আয়োজিত হয়। এতে বিভাগটির সকল শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য