শিরোনাম
সরকারি তিতুমীর কলেজে রিসার্চ ক্লাবের উদ্যোগে SPSS কোর্স সম্পূর্ণ
পাপ্পু, তিতুমীর কলেজঃ রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের রিসার্চ ক্লাব ( GTCRC) কর্তৃক আয়োজিত ৮ ঘন্টা ব্যাপী " Beginner Course On Date Analysis Using SPSS " কোর্স সম্পূর্ণ হয়েছে প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেবার মধ্য দিয়ে। যা গত ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ থেকে শুরু হয়ে২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ পর্যন্ত। দৈনিক ২ ঘন্টা করে মোট ৪ দিনে ৮ ঘন্টা ব্যাপী এই কোর্সটি অনুষ্ঠিত হয়।
SPSS সমাপনী সেশন ও সার্টিফিকেট বিতরন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের মাননীয় উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো মহিউদ্দিন। আরো উপস্থিত ছিলেন রিসার্চ ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.মালেকা বিলকিস, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যপক ড. নিলুফা ইয়াসমিন এবং রিসার্চ ক্লাবের মডারেটরগণ।
উক্ত কোর্সের চিফ ইন্সট্রাকটর ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো গালিব হোসেন এবং দুজন কো- ইন্সট্রাকটর ছিলেন মো রাকিব আকন ও আতিকুর রহমান রনি।
উপাধ্যক্ষ মহোদয় ক্লাসরুম ঘুরে ঘুরে প্রশিক্ষণার্থীদের ডাটা পর্যবেক্ষন করে বলেন " রিসার্চ ক্লাবের ছেলে- মেয়েরা গবেষণার মত গভীর জ্ঞান অন্বেষণের পথে এত চমৎকার ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এবং সবচেয়ে বড় দিক হলো এদের নিয়ে আমাদের কখনো টেনশনে থাকতে হয় না! কারন এরা সব সময় তাদের পড়াশোনা গবেষণা এগুলো নিয়েই থাকে "।
তিনি আরো বলেন, " যেখানে অনেক পাবলিক বিশ্বিবদ্যালয়ে এ পর্যন্ত ঠিকঠাক মতো গবেষণার হয় না, সেখানে আমাদের রিসার্চ ক্লাবের ছেলে - মেয়েরা এত আগ্রহের সাথে গবেষণা লিখছে, ডাটা এনালাইসিস সহ বিভিন্ন স্কিল অর্জন করেছে! এই বিষয় গুলো আমাদের গর্বিত করে"।
পাশাপাশি কোর্স ইন্সট্রাকটর মো গালিব হোসেন সহ রিসার্চ ক্লাবের উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা সহ রিসার্চ ক্লাবের সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষকের ভূয়সি প্রশংসা করেন।
সরকারি তিতুমীর কলেজের রিসার্চ ক্লাবের SPSS কোর্সে মোট ৫৬ জন আবেদন করেন এবং ৫৬ জন আবেদনকারী থেকে বাছাইকৃত ৩০ জনকে উক্ত কোর্স টি সম্পূর্ণ ফ্রিতে অফার করা হয়। এবং শতভাগ উপস্থিত ও হোমওর্য়াক করার উপর ভিত্তি করে অবশেষ ২৭ জনকে SPSS " Beginner Course On Data Analysis Using " কোর্সের সার্টিফিকেট প্রধান করে।
উপাধ্যক্ষ মহোদয়ের মাধ্যমে সার্টিফিকেটের বিতরন শুরু হলেও পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য অতিথিরা সকল শিক্ষার্থীদের হাতে SPSS কোর্সের সার্টিফিকেট তুলে দেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রশীক্ষণার্থীদের পক্ষ থেকে চিফ ইন্সট্রাকটর মো গালিব হোসেন ও কো - ইন্সট্রাকটরদের রাকিব আকন ও আতিকুর রহমান রনির হাতে উপহার সরুপ ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
নবীন শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিক ভাবে বরণ করে নিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে নবীন শিক্ষার্থীদের গোলাপ ফুল বরণ করে নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার।
নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে উপাচার্য বলেন, তোমরা তোমাদের মেধার পরিচয় দিয়ে এখানে এসেছো। বাংলাদেশে যত বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে তার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য।জ্ঞানের যতগুলো শাখা রয়েছে সব শাখাতেই তোমাদের বিচরণ থাকতে হবে। শিক্ষার কোনো মুহূর্তই যেন তোমাদের জীবন থেকে হারিয়ে না যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা পথ ও মত রয়েছে। সেগুলো থেকে তোমাদের ভালো পথ বেছে নিয়ে এগোতে হবে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অবাইদুর রহমান প্রামাণিক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক, ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূর, জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষবৃন্দ, সহকারী প্রক্টরবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ তিন হাজারের অধিক নবীন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় নবীন বরণ।
চবিতে লেখক ফোরামের দ্বিতীয় দিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত
সাইফুল মিয়া, চবিঃ বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখার আয়োজনে মাসব্যাপী লেখালেখি বিষয়ক প্রশিক্ষণের ২য় দিনের কর্মশালার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ২নং গ্যালারিতে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় দ্বিতীয় দিনের আলোচ্য বিষয় ছিল সাহিত্য ও শুদ্ধ বানান চর্চা। আজকের এই কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদান করেন বাংলা একাডেমি পুরষ্কার প্রাপ্ত ও দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শেখ সাদী।
ফোরামের সভাপতি আকিজ মাহমুদ এর সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক মো. মুরাদ হোসেন এর সঞ্চালনায় এদিনে কর্মশালায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সোমবার (৬মার্চ) তৃতীয় দিনের কর্মশালা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কলাম লেখা বিষয়ের উপর অনুষ্ঠিত হবে।
জাবি সায়েন্স ক্লাবের ক্যারিয়ার প্লানিং ও ওরিয়েন্টেশন ২০২৩ অনুষ্ঠিত
জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নবীন শিক্ষার্থীদের (৫১ ব্যাচের) বরন এবং তাদের ক্যারিয়ার প্লানিং সম্পর্কে সম্যক ধারনা দিতে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাব (জেইউএসসি) আয়োজিত "ক্যারিয়ার প্লানিং এন্ড ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম ২০২৩" অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় তিন শতাধিক নবীন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার প্লানিং সম্পর্কে ধারনা দিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও ক্লাবের উপদেষ্টা কবিরুল বাশার বলেন,স্বপ্ন শুধু দেখলেই চলবে না, বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। আমি যখন কোনকিছু টর্গেট করি সেটা থেকে পিছুপা হই না। জীবনের লক্ষ্য স্থির রাখতে হবে এবং আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। তাহলেই নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে। জীবনে কী হতে চাই এ সিদ্ধান্ত আজকেই নিতে হবে। জীবনে সফল হওয়ার জন্য অধ্যবসায়ের কোনো বিকল্প নেই।
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদেরকে বেশি বেশি বই পড়ার প্রতি শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেন।
এর আগে, নবীন শিক্ষার্থীদের বরন উপলক্ষে বেল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে 4D মুভি শো, দুপুর ২টা থেকে ২.৩০ পর্যন্ত চলে নবীন শিক্ষার্থীদের ইনভারনমেন্টাল অলিম্পিয়াড এবং দুপুর ২.৪৫ থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত চলে ক্যারিয়ার প্লানিং অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে জাবি সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি শাকিল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব আন্তর্জাতিকভাবে সম্মান কুড়িয়েছে। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক পোস্টার প্রতিযোগিতায় জাবি সায়েন্স ক্লাব গোল্ডেন এওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে। দেশের অন্যতম শীর্ষ বিজ্ঞান ক্লাব হিসেবে আমরা বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে গণিত অলিম্পিয়াড, সায়েন্স অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞান বিষয়ক নানা সভা-সেমিনার আয়োজনসহ নানা রকম সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকে। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিজ্ঞান চর্চায় মনোনিবেশ করার প্রতি আহবান জানান।
এ সময় জাবি সায়েন্স ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা ও বিশেষ অতিথি অধ্যাপক আলমগীর কবীর বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার প্লানিং এর ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, সময় ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে। সন্তানের সফলতা বাবাকে সম্মানিত করতে পারায়।
বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. শরিফ হোসাইন বলেন, একজন কোয়ালিটি হিউম্যান হতে পারলে ভালো ছাত্রও হতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব সুযোগ রয়েছে। এখানে স্বাধীনতার পরিধি বেশি থাকায় স্বাধীনতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে। বিনয়ী হওয়ার উপর জোর দিয়ে তিনি আরো বলেন, যে মানুষ যতবেশি জ্ঞানী সে ততো বেশি বিনয়ী।
এছাড়াও নবীনদের মাঝে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ঋতু ঘঢ়ামি বলেন, বর্তমান বিশ্ব বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। ইনভারনমেন্টাল অলিম্পিয়াড এবং আমাদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা ৫১তম আবর্তনের বন্ধুরা একসাথে হতে পেরেছি। জাবি সায়েন্স ক্লাবের সঙ্গে বিজ্ঞান চর্চায় আমাদের ৫১ব্যাচের পথচলা সুগম হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ক্লাবের উপদেষ্টা কবিরুল বাশার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান সনেট, ফার্মাসি বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ দিদারে আলম মুহসিন।
এ সময় অন্যান্যর মাঝে উপস্থিত ছিলেন জাবি সায়েন্স ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শাকিল হোসাইন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম এবং ক্লাবের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, জাবি সায়েন্স ক্লাব প্রতি বছর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রসারতায় গণিত অলিম্পিয়াড, জাতীয় বিজ্ঞান মেলাসহ বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, সভা ও সেমিনারের আয়োজন করে থাকে। ক্লাবের নিজস্ব প্রকাশনা ‘নিউক্লিয়াস’ এবং ‘অরবিটাল’ এর মাধ্যমে ক্লাবটি বিজ্ঞানের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। তাছাড়া, আন্তর্জাতিক পোস্টার প্রতিযোগিতায় জাবি সায়েন্স ক্লাব গোল্ডেন এওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে।
ইবিতে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় হল থেকে বহিষ্কার ৫ শিক্ষার্থী
মোস্তাক মোর্শেদ, ইবিঃ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলে র্যাগিং এর নামে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা পেয়েছে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল গঠিত তদন্ত কমিটি। এর প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা সহ আরো ৪ অভিযুক্ত তাবাসসুম, মিম, উর্মী, মুয়াবিয়ার হলের আবাসিকতা স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) বিকালে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম তার অফিস কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান। এসময় তিনি হল কমিটির গৃহিত লিখিত সিদ্ধান্তগুলো পাঠ করে শোনান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রভোস্ট কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে অভিযোগকারী শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনের এর আবেদনে উল্লিখিত র্যাগিংয়ের নামে মানসিক ও শারীরিক অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। প্রাপ্ত সত্যতার ভিত্তিতে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা হালিমা আক্তার উর্মি, ইসরাত জাহান মিম, তাবাসসুম ইসলাম, মুয়াবিয়া জাহান কে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের আবাসিকতা বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো। তাদেরকে আগামী ১ মার্চ বেলা ১২.০০ টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হলো।
এছাড়াও গৃহিত সিদ্ধান্ত গুলোর মধ্যে ছিলো অভিযুক্ত ৫ জনকে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের হল সংযুক্তি বাতিলের সুপারিশ করা এবং অভিযুক্ত হালিমা আক্তার উর্মির বিবৃতিতে উল্লেখিত হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
এর আগে হল তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. আহসানুল হক ও কমিটির সদস্য ড. নূরুল ইসলাম, ইসরাত জাহান, আসমা সাদিয়া রুনা ও মৌমিতা আক্তারের উপস্থিতিতে দুপুর সাড়ে ১২ টায় জরুরী সভা ডেকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং গতকাল সন্ধ্যায় ৮০ পৃষ্ঠার অধিক তদন্ত প্রতিবেদনটি হল প্রভোস্ট বরাবর জমা দেয় এবং তিনি আজ প্রতিবেদনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দেন। এছাড়াও রবিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেদন জমা দেয় ছাত্রলীগের তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে কি আছে সেটি না জানা গেলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে ঘটনার আংশিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা যায়। তবে ব্যাপারটি অস্বীকার করে তদন্ত কমিটির সদস্যরা বলেন, আমরা প্রতিবেদনটি কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত কেন্দ্র থেকেই গ্রহণ করা হবে।
হল তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, ফুলপরীকে শারীরিক এবং মানষিক নির্যাতনের ঘটনায় হল তদন্ত কমিটি ৫ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে। প্রায় ত্রিশ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে ৮০ পৃষ্ঠার অধিক বিস্তৃত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। নির্যাতনের ঘটনাটি রাত ১২ টা থেকে আনুমানিক রাত সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে ১২ টা থেকে ২টা পর্যন্ত দোয়েল ১ রুমে নির্যাতন করা হয়েছে। তারপর সেখান থেকে বের করে ডাইনিং রুমে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নির্যাতন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বিবস্ত্র করার নির্যাতন এবং শরীরে আলপিন ফুটানোর বিষয়টিও উঠে এসেছে।
হল তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আহসানুল হক জানান, আমরা হল তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন গতকাল সন্ধ্যায় জমা দিয়েছি। আজকে দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে। তদন্ত কমিটি সত্যতা পেয়েছে। সত্যতার আলোকে ৫ অভিযুক্তের আবাসিকতা বাতিল করা হয়েছে। এই হলের সাথে তারা কোনো সংশ্লিষ্টটা থাকবে না এই সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বিবস্ত্র করার নির্যাতন, মোবাইলে ভিডিওধারণ এবং শরীরে আলপিন ফুটানোর বিষয়টির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলোরও সত্যতা পাওয়া গেছে এছাড়াও যে ভিডিও করেছে সে দাবি করেছে তার মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে। মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য প্রক্টর বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে মোবাইল ফোন যদি লুকিয়ে রাখে তবে সেটি পাওয়া দুষ্কর।
সময় বেশি লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন এত বিস্তৃত তদন্ত প্রতিবেদন লেখা এবং সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে যাচাই বাছাই করার কারণে একটু সময় লেগেছে। পুরো ঘটনার সারসংক্ষেপ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লিখিত আকারে দিয়েছি। সেই সাথে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ও সংযুক্ত করেছি। কোথায় কোথায় কোন কোন ঘটনাগুলো ঘটেছে, সত্যতা পেয়েছি এর আগে প্রকাশ করিনি সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গুলো বাস্তাবায়ন করা কঠিন হতো।
এ বিষয়ে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, তদন্ত কমিটির কাছ থেকে আমরা যে প্রতিবেদন পেয়েছি তা গতকাল কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। ছাত্রলীগ তার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্টতা পায়নি এমন কথা বলা যাবে না। আমরা প্রতিবেদন কেন্দ্রে পাঠিয়েছি সিদ্ধান্ত তারাই নিবে।
ঘটনার সত্যতা পাওয়া প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, উপাচার্য মহোদয় আসলে আমরা বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিষয়ক যে আইন কানুন আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের কোনো সদস্যকে অসম্মান করা বা লাঞ্ছিত করা কখনই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিধিবিধান আছে সেটা পর্যালোচনা করেই প্রতিপালন করা হবে। নিয়মশৃঙ্খলা সংক্রান্ত একটি কমিটি রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমিও চাই সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।
হল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফুলপরী বলেন, এই সিদ্ধান্তে আমার সন্তষ্টি অসন্তষ্টির কিছু নেই তাদের যা প্রাপ্য শাস্তি তারা সেটাই পাবে। তদন্ত কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে অই অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হবে এমনটাই প্রত্যাশা করি।
সর্বশেষ সংবাদ
সর্বাধিক পঠিত


মন্তব্য