ইরানের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ নিষেধাজ্ঞা

ইরানের একজন তেল বিক্রেতা এবং চারটি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ব্রিটেন। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) এই ঘোষণা আসে। খবর রয়টার্সের।
খবরে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তরা এমন একটি নেটওয়ার্কের অংশ যারা তেহরানের বিদেশের কার্যকলাপকে সমর্থন করে। ইউক্রেন এবং ইসরায়েলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতেও কাজ করে তারা।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদ হোসেইন শামখানির সম্পদ জব্দ এবং ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা। তার এবং নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কোম্পানির জাহাজ, পেট্রোকেমিক্যাল এবং আর্থিক খাতের কোম্পানিগুলোর সম্পদ জব্দ। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে ব্রিটেনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক মন্ত্রী হামিশ ফ্যালকনার বলেছেন, বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক এবং সংযুক্ত সংস্থাগুলো থেকে আয়ের ওপর নির্ভর করে ইরান আরও সক্ষম হয়ে উঠছে। এ অর্থ তারা অস্থিতিশীল কার্যকলাপ পরিচালনা করতে ব্যবহার করে। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে প্রক্সি এবং অংশীদারদের সহায়তা করা, যুক্তরাজ্যের মাটিতে রাষ্ট্রীয় হুমকিকে সহায়তা করাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িত ইরান।
লন্ডনে ইরানি দূতাবাস জানিয়েছে, তারা ব্রিটেনের একতরফা এবং অবৈধ পদক্ষেপের নিন্দা করছে। যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টার ছেলে শামখানি। মন্তব্যের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
গত মাসে শামখানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বিশ্বজুড়ে ইরানি ও রাশিয়ান তেল এবং অন্যান্য পণ্য বিক্রি করে এমন একটি মধ্যস্থতাকারী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কন্টেইনার জাহাজ এবং ট্যাঙ্কারের একটি বিশাল নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ব্রিটেন কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত কিছু কোম্পানিকে শামখানির পক্ষে বা তার নির্দেশে কাজ করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। জুলাই মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নও শামখানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন ফাঁদ তৈরি করছে উত্তর কোরিয়া

এবার গোপন সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করেছে উত্তর কোরিয়া। যেখানে দেশটি তাদের সর্বশেষ দীর্ঘপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষিত করে রেখেছে। ঘোষণাহীন এই ঘাঁটির নাম সিনপুং-ডং মিসাইল অপারেটিং বেস।
এটি চীনের সীমান্ত থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার দূরে উত্তর পিয়ংআন প্রদেশে অবস্থিত। ওয়াশিংটনভিত্তিক থিঙ্কট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বা সিএসআইএসের এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই স্থাপনায় ৬ থেকে ৯টি পারমাণবিকসক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা আইসিবিএম এবং তাদের লঞ্চার রাখা আছে। এগুলোকে পূর্ব এশিয়া এবং মার্কিন মূল ভূখণ্ডের জন্য সম্ভাব্য পারমাণবিক হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর থেকে উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি আরও জোরদার করেছে। সম্প্রতি দেশটির নেতা কিম জং-উন পারমাণবিক সক্ষমতা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সিনপুং-ডং ঘাঁটি হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার ১৫-২০টি অঘোষিত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি, রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র, মিসাইল ও ওয়ারহেড সংরক্ষণাগারের একটি। এগুলোর কোনোটি অতীতে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে হওয়া নিরস্ত্রীকরণ আলোচনার অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
বিশ্লেষকদের মতে, সংকট বা যুদ্ধের সময় এই ঘাঁটি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও লঞ্চারগুলো বেরিয়ে বিশেষ ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এবং দেশের অন্য অংশ থেকে গোপনে উৎক্ষেপণ চালাতে পারে। এসব ঘাঁটি মিলে উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান ক্ষেপণাস্ত্র কৌশল ও কৌশলগত স্তরের পারমাণবিক প্রতিরোধ সক্ষমতার মূল ভিত্তি গড়ে তুলছে।
হাসিনাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে মোদিকে ওয়েইসির প্রশ্ন

ভারতের হায়দরাবাদের এমপি ও অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি মন্তব্য করে বলেছেন, ‘যদি ভারতের সরকার সত্যিই দেশ থেকে “অবৈধ বাংলাদেশিদের” ফেরত পাঠাতে চায়, তাহলে প্রথমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই ফেরত পাঠানো উচিত। যিনি ২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ভারতে বসবাস করছেন।’
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দেশটির ইংরেজি দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ‘আইডিয়া এক্সচেঞ্জ’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ভারত থেকে ‘অবৈধ বাংলাদেশিদের’ ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ওই মন্তব্য করেছেন আসাদউদ্দিন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আমরা কেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে (শেখ হাসিনা) দেশে রাখছি? তাকে ফেরত পাঠানো হোক। তিনিও তো বাংলাদেশি, তাই না?’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় যে জনপ্রিয় গণঅভ্যুত্থান ঘটে গেছে ভারতকে সেটি মেনে নিতে হবে এবং বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।’
‘ভারতে একজন বাংলাদেশিকে রাখা হয়েছে, যিনি বিবৃতি ও বক্তব্য দিয়ে সমস্যা তৈরি করছেন; অথচ মালদা ও মুর্শিদাবাদের দরিদ্র বাংলা ভাষাভাষী ভারতীয়দের পুনে থেকে কলকাতায় বিমানে পাঠিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ডে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’
অভিযোগ করে আসাদউদ্দিন বলেন, ‘ভারতে যিনিই বাংলা ভাষায় কথা বলবেন, তিনিই বাংলাদেশি হয়ে যাচ্ছেন? এ থেকে বোঝা যায়, এখানে বিদেশাতঙ্ক কাজ করছে।’
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, পুলিশ কীভাবে এসব মানুষকে আটক কেন্দ্রে রাখছে। এখানে সবাই যেন স্বঘোষিত আইনরক্ষক হয়ে উঠেছেন।
ওয়াইসি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বিহারে চলমান ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় অনেক প্রকৃত নাগরিক; বিশেষ করে মুসলমানরা বাদ পড়তে পারেন।
তিনি বলেন, ‘যদি এসআইআর হয় এবং প্রকৃত ভোটারদের নাম অন্তর্ভুক্ত না হয়, তাহলে তাদের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এ সময় তিনি বিহারে তার দলের অতীত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।’
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় বলা আছে, যদি কোনো নির্বাচনী রেজিস্ট্রেশন অফিসার (ইআরও) কাউকে সন্দেহজনক মনে করেন বা তিনবার গিয়ে তাকে না পান, তাহলে তিনি নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন। তার অভিযোগ, এ প্রক্রিয়ায় মুসলিম ভোটারদের নামই বেশি বাদ পড়ছে।
জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ৭ মে সন্ত্রাসী হামলার পর বিজেপি নেতা বৈজয়ন্ত পান্ডার নেতৃত্বাধীন গঠিত সংসদীয় তদন্ত দলে ওয়াইসিও ছিলেন। সেই ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত সরকার আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ নষ্ট করেছে।
‘আমাদের প্রতিনিধিদলকে ভালোভাবে গ্রহণ করা হলেও বিভিন্ন দেশ আমাদের জিজ্ঞাসা করেছে, কেন আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলি না। আমরা বলেছি, বহুবার কথা হয়েছে, কিন্তু কোনো ফল আসেনি। আমরা ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে এবং পাকিস্তানকে ভারত ধ্বংস করতে চাইছে, এমন প্রোপাগান্ডা ভাঙতে পেরেছি।’
দেশটিতে সংখ্যালঘুদের নিয়ে সরকার ও বিরোধী দল উভয়ের নীরবতারও সমালোচনা করে ওয়াইসি বলেন, এই রাজনীতি নতুন নয়। তবে ২০১৪ সালের পর থেকে এটি ভিন্ন রূপ নিয়েছে।
ওয়াইসি বলেন, অনেক তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দল সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কথা বলতেই ভয় পাচ্ছে। ৭/১১ ট্রেন বিস্ফোরণের রায় বা ২০০৮ সালের মালেগাঁও বিস্ফোরণ; এসব নিয়ে তারা মুখ খোলে না। এটা কেবল সংখ্যালঘুদের বিষয় নয়, বরং অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলার প্রশ্ন।
মধ্যপ্রাচ্যের প্রসঙ্গ টেনে ওয়াইসি গাজায় চলমান যুদ্ধ নিয়ে মোদি সরকারের নীরবতার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার পরোক্ষভাবে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে সমর্থন করছে।
‘আমরা শুধু চুপ করে আছি। গাজায় যে গণহত্যা চলছে, সে বিষয়ে এই সরকার কিছুই বলছে না। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বর্ণবাদী সরকার এরই মধ্যে ৬৫ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে ২০ হাজার শিশু। প্রধানমন্ত্রী মোদি একটি শব্দও বলেননি। এরপর আবার বলেন, আপনি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে। যখন প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা হচ্ছে, তখন সেই রাষ্ট্র কোথায় দাঁড়াবে? প্রধানমন্ত্রী মোদির সরকার আসলে নীরব থেকে নেতানিয়াহুকে এই গণহত্যায় সমর্থন করছে।’
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের পর প্রথম সামরিক মহড়ায় ইরান

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর প্রথমবারের মতো বড় ধরনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী দেশ ইরান। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সাসটেইনেবল পাওয়ার ১৪০৪’। এতে গালফ অব ওমান ও ভারত মহাসাগরে ইরানি নৌবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অনুশীলন করছে। এই খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইরানে এই সামরিক মহড়া নিয়মিত হলেও এবারের মহড়ার বিশেষ তাৎপর্য আছে। কারণ সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইসরায়েল ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা ও বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। তাই যুদ্ধোত্তর সময়ে নিজেদের শক্তি ও প্রস্তুতি দেখাতেই এই মহড়া আয়োজন করেছে তেহরান। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইরানি টেলিভিশন জানিয়েছে, মহড়ায় অংশ নেওয়া নৌযানগুলো সমুদ্রে লক্ষ্যভেদে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। পাশাপাশি ড্রোন ব্যবহার করে পানিতে সামরিক সক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে। তবে এখনও মহড়ার কোনও আনুষ্ঠানিক ভিডিও প্রচার করেনি রাষ্ট্রীয় টিভি।
মহড়ার প্রাক্কালে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসিরজাদেহ ঘোষণা দিয়েছেন, ইরান তাদের সেনাদের নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করেছে। তিনি বলেন, কোনো শত্রুপক্ষ যদি অভিযানে নামে, আমাদের বাহিনী এসব নতুন ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে প্রস্তুত।
প্রায় ১৮ হাজার সদস্য নিয়ে ইরানের নৌবাহিনীর প্রধান ঘাঁটি দক্ষিণের বান্দার আব্বাস শহরে অবস্থিত। এই বাহিনী সাধারণত গালফ অব ওমান, ভারত মহাসাগর ও কাস্পিয়ান সাগরে টহল দেয়। তবে পারস্য উপসাগর ও হরমুজ প্রণালির মতো কৌশলগত এলাকা মূলত নিয়ন্ত্রণ করে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড। পশ্চিমা দেশগুলোর জাহাজ আটকানো এবং মার্কিন নৌবাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য এই বাহিনী বিশেষভাবে পরিচিত।
রয়টার্স ও ইপসোসের জরিপে
স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮ শতাংশ নাগরিক

যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ নাগরিক চান ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসোসের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, মার্কিনিদের ৫৮ শতাংশ মনে করেন জাতিসংঘের সব দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩৩ শতাংশ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন এবং ৯ শতাংশ কোনো মত দেননি।
ছয় দিন ধরে পরিচালিত এই জরিপটি শেষ হয় গত সোমবার। এর কিছুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ—কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আরও বেড়েছে। বিশেষ করে গাজায় যখন অনাহার ও মানবিক বিপর্যয় মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ও মানবিক সহায়তা
জরিপ চলাকালেই আশা করা হচ্ছিল, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে পারে। তাতে বন্দী বিনিময় ও গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সহজ হতো। মঙ্গলবার ইসরায়েলের দুই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা হামাসের দেওয়া প্রস্তাব পর্যালোচনা করছেন। ওই প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের অর্ধেক মুক্তির বিষয় অন্তর্ভুক্ত আছে।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সংকট ‘অকল্পনীয় মাত্রায়’ পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে যে, গাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ও অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে না, ফলে সাধারণ মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। তবে ইসরায়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, হামাসই ত্রাণ আত্মসাৎ করছে। হামাস অবশ্য এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
মার্কিনিদের সহানুভূতি গাজার মানুষের প্রতি
জরিপে আরও উঠে এসেছে, মার্কিনিদের ৬৫ শতাংশ মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত গাজার ক্ষুধার্ত ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করা। ২৮ শতাংশ এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন। যারা সহায়তার বিরোধিতা করেছেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ—প্রায় ৪১ শতাংশ—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের সমর্থক।
রয়টার্স/ইপসোস পরিচালিত অনলাইন জরিপে মোট ৪ হাজার ৪৪৬ জন মার্কিনি প্রাপ্তবয়স্ক অংশ নেন। জরিপের ফলাফলে সর্বোচ্চ ±২ শতাংশ পর্যন্ত ভিন্নতা থাকতে পারে।
মন্তব্য