১০ থেকে ১৫ মে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিরত থাকার অনুরোধ

মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কার কথা বিবেচনায় নিয়ে ১০ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত সেন্টমার্টিন ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে পর্যটকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ফেসবুকে এক পোস্টে এ অনুরোধ জানান।
ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সতর্ক করে তিনি লেখেন, ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমার ও বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানলে ১১ থেকে ১৩ তারিখের মধ্যে আঘাত হানবে। সেক্ষেত্রে এটি খুবই শক্তিশালী ঝড় হিসেবে আঘাত করবে। এর গতি হতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার।
আর ঘূর্ণিঝড়টি যদি বাংলাদেশ ও ভারতের উপকূল দিয়ে যায় তাহলে সেটি আঘাত করবে ১৩ থেকে ১৫ তারিখের মধ্যে। সেক্ষেত্রেও এটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই আঘাত হানবে। তবে গতি কিছুটা কমে ১২০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার হতে পারে।
তাই, আগামী ১০ মে থেকে ১৫ মে পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে বিরত থাকতে বলেছেন মোস্তফা কামাল পলাশ।
বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে এর নাম হবে ‘মোচা’। নামটি দিয়েছে ইয়েমেন।
এদিকে রোববার (৩০ এপ্রিল) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে দুইতলা ছাদ থেকে পড়ে মাদরাসাছাত্রের মৃত্যু

রাজধানীর ডেমরার ডগাইর ইসলামবাগ নতুন পাড়া এলাকায় দুইতলা বাসার ছাদে ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে নিচে পড়ে মো. আব্দুল্লাহ (১১) নামের এক মাদরাসা শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। শনিবার (২৯ এপ্রিল) বিকেল চারটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ডেমরা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আওয়াল জানান, আমরা রাত সাড়ে ১২টার দিকে খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ২০৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করি। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, নিহতের দুলাভাই মো. কাউছারের মুখে জানতে পারি নিহত ডেমরা ডগাইর ইসলামবাগ নতুন পাড়ার একটি দুইতলা বাসার ছাদে ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে ওপর থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানান তিনি।
সন্তানের জন্য চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিলেন 'মা'

তিমির বনিক, মৌলভীবাজারঃ ছেলে ট্রেনে উঠতে না পারায়, ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিলেন মা। ঢাকাগামী আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকায় যেতে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন মা। ট্রেন এসে স্টেশনে থামতেই তড়িঘড়ি করে উঠে পড়েন মা, কিন্তু তখনও উঠতে পারেনি ছেলে। দুই মিনিটের মধ্যেই ট্রেন ছেড়ে দিলে মা তাকিয়ে দেখলেন ছেলে ট্রেনের সঙ্গে দৌড়াচ্ছে। প্ল্যাটফর্ম থেকে উঠতে পারেনি তার সন্তান। তাই নিজের ছেলের জন্য চলন্ত ট্রেন থেকেই প্ল্যাটফর্মে ঝাঁপ দেন মা।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনায় প্ল্যাটফর্মে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন মা শারমিন আক্তার মিতু (৩৫)। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তিনি বরিশালের কাজীরহাট এলাকার তন্ময় আহমদের স্ত্রী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী কমলগঞ্জের রাকিব আহসান বলেন, শনিবার ভানুগাছ থেকে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দেই ট্রেনযোগে। ট্রেনে দরজায় দাঁড়িয়ে যখন নিজের বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে আছি, ঠিক তখন একটা ছেলে ট্রেনে উঠতে ট্রেনের নিচ থেকে অনেক চেষ্টা করে। ওই সময় ছেলের মা দৌড়াতে দৌড়াতে আমার ছেলে কোথায় বলে ট্রেন থেকে প্ল্যাটফর্মে ঝাঁপ দেন। সাথে সাথেই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। সে সময় স্টেশনে অবস্থানরত কয়েকজনের সাথে যোগাযোগ করে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করি।
ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমেদ বলেন, আহত নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রাসেদুল করিম বলেন, ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে আহত হওয়া নারীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি হাত, পা ও কোমরে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
ঈদের ছুটিতে ৬ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত। এখানে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন দেশি-বিদেশি লাখ লাখ মানুষ।
এবার ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে অন্তত ছয় লাখ পর্যটকের আগমনে চিরচেনা রূপে প্রাণের ডানা মেলেছে সৈকতের সব কটি পয়েন্ট সহ পর্যটন স্পটে।
ঈদের প্রথম দিন ২২ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজারে ছিল পর্যটকের চাপ।
শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সৈকতের লাবণী, সি গাল, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টের বালিয়াড়িতে দেখা মিলেছে পর্যটকসহ স্থানীয় মানুষের আনাগোনা। পর্যটন ব্যবসায়ীরা বলছে, গত সাত দিনে অন্তত ছয়লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছে কক্সবাজারে ।
তীব্র গরমের মাঝেও কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ঢল নেমেছে লাখো পর্যটকের। যান্ত্রিকতার জীবন ছেড়ে সাগরজলে আনন্দ আর উল্লাসে মেতেছেন তারা। পর্যটকরা বলছেন, তীব্র গরমের মাঝে সাগরজলে স্বস্তি মিলছে। এদিকে পর্যটকের ভিড়ে ব্যস্ততা বেড়েছে সৈকতপাড়ের ফটোগ্রাফার, বিচ বাইক, জেড স্কি ও ঘোড়াওয়ালাদের। আর সমুদ্রস্নানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ৩ স্তরের ব্যবস্থা নিয়েছে লাইফ গার্ড সংস্থা।
দেখা যায়, সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউয়ে শরীর ভিজিয়ে টিউব নিয়ে সাঁতার কেটে উপভোগ করছেন স্বচ্ছ সাগরের জলরাশি। আবার অনেকেই জেড স্কিতে চড়ে ঘুরে আসছেন ঢেউয়ের তালে তালে। সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘোরাফেরা, কিটকিটে (বিচ ছাতা) বসে সাগরের শীতলতা উপভোগেও ব্যস্ত ছিলেন অনেকে। ঈদ উৎসব ঘিরে কক্সবাজার সৈকতে ছিল সব বয়সী মানুষের আনন্দ-উল্লাস।
ভ্রমণে আসা বরিশাল থেকে মদিনা আহমেদ অপ্সরী বলেন, ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার এসে ভিন্ন এক সৈকত উপভোগ করতে পারছেন। স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে সাগর একটু উত্তাল। স্ব-পরিবারে এসে ভালো লাগছে।
খুলনা থেকে আসা মোতাহার হোসেন বলেন, তিন দিনের জন্য কক্সবাজারে আসা। আজকে লাখের কাছাকাছি পর্যটক হবে। অন্যবারের চেয়েও এবার ভ্রমণে এসে বাড়তি আনন্দ পাচ্ছি। তবে অসম্ভব গরম।
সৈকতে দায়িত্বরত বিচ কর্মী ভুট্টা মজুমদার জানিয়েছেন, কক্সবাজারের সৈকত ছাড়াও পর্যটকরা ঘুরছেন হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ার টেক ও মেরিন ড্রাইভে। বেলা ১২টা দেখা যায়, সৈকতের উত্তপ্ত বালুচরে খালি পায়ে হাঁটা যাচ্ছে না। দৌঁড়ে কোনরকমে বালুচর পেরিয়ে সাগরজলে নেমে পড়ছেন পর্যটকরা। সাগরতীর জুড়ে মানুষ আর মানুষ। তীব্র গরমের কারণে পর্যটকরা ভিড় করেছেন সাগরজলে। মেতে রয়েছেন সমুদ্রস্নানে। টিউব নিয়ে গা ভাসানোর পাশাপাশি একে অপরকে পানি মারার খেলায় মেতেছেন। আর এসব মুহুর্তে বন্দি করা হচ্ছে ক্যামেরার ফ্রেমে।
এদিকে লাখো পর্যটকের সমাগমে ব্যস্ত সৈকতপাড়ের ফটোগ্রাফার, বিচ বাইক ও জেড স্কি চালক এবং ঘোড়াওয়ালা। বলছেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটকের সমাগমে ভালো ব্যবসা হচ্ছে তাদের।
গরমে সাগরজলে সমুদ্রস্নানে স্বস্তিতে পর্যটকরা। তাই পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে লাইফ গার্ড সংস্থা।
সি সেফ লাইফ গার্ডের কর্মী জয়নাল আবেদীন ভুট্টো জানান, বৈশাখের তীব্র রোদ, তার সঙ্গে উত্তাল সাগর। তাই লাখো পর্যটকের সমুদ্রস্নানে তিন স্তরের নিরাপত্তা দিচ্ছেন সৈকতপাড়ের লাইফ গার্ড কর্মীরা। পর্যটকদের সতর্ক করার পাশাপাশি সজাগ দৃষ্টি রাখছেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো: জিল্লুর রহমান জানান, পর্যটন স্পট, হোটেল-মোটেল জোন ও সৈকতে রয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা। পোশাকধারীর পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। পর্যটকরা নিরাপদে ভ্রমণ করে ঘরে ফিরতে পারবেন। আর তীব্র গরমের কারণে সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা ধরণের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
সাগরে ইঞ্জিন বিকল, ৯৯৯-এ কল পেয়ে ১৯ জেলে উদ্ধার

কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন অঞ্চলে মাছ আহরণের সময় ইঞ্জিন বিকল হয়ে ভাসতে থাকা ১৯ জেলেকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। তবে তাৎক্ষণিক তাদের পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি।
শনিবার দুপুরে সেন্টমার্টিন এলাকার গভীর সাগর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড সদরদফতরের মিড়িয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুর রহমান।
তিনি জানান, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসমান আবস্থায় থাকা ট্রলারসহ ১৯ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথম দিকে বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার এলাকার কথা বলা হলেও শেষে ১৯ জেলেসহ ভাসমান ট্রলারের খোঁজ মেলে সেন্টমার্টিন অঞ্চলের গভীর সাগরে।
তিনি আরো বলেন, মালিক পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জেলেদেরসহ ট্রলারটি হস্তান্তর করা হবে। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।
মন্তব্য