বেরোবি প্রতিনিধি : রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) প্রক্টর অফিসের সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) মো. রাফিউল হাসান ওরফে রাসেলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।
রংপুর নগরীর পশ্চিম গণেশপুর বাস টার্মিনাল শাপলা রোডে এক রড-সিমেন্টের দোকানে গিয়ে চাঁদা দাবি করে সেই দোকান বন্ধ করে তালা দিয়েছেন উল্লেখ করে কতোয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মো. রুহুল আমিন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে রাত সাড়ে ১১টার সময় অভিযুক্ত রাসেল তার একজন সহযোগীকে নিয়ে রুহুল আমিনের বাস টার্মিনাল এলাকার বাসায় যান। সেসময় রুহুল আমিন বাড়িতে না থাকায় স্ত্রী খুশি আরা বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং নানা ধরণের হুমকি দেয়। রুহুল আমিনের কাছে ৫০-৬০ হাজার টাকা পাবে বলে তার স্ত্রী খুশি আরা বেগমকে জানান রাসেল।
তবে রাসেল কোনও টাকা পাবেন না বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন রুহুল আমিন।
পরে গত রবিবার (১২ মে) সন্ধ্যা ৭টায় রাসেল তার সাঙ্গপাঙ্গকে সাথে নিয়ে রুহুল আমিনের রড-সিমেন্টের দোকানে গিয়ে টাকা দাবি করেন। সেসময় রুহুল আমিন দোকানে না থাকায় তার ম্যানেজার আজিজুল ইসলামকে দোকান থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেন রাসেল। এ সময় টাকা না দেওয়া পর্যন্ত দোকান খোলা যাবে না বলে হুমকি দেন তিনি। দোকান খুললে রুহুল আমিনকে মারপিট করাসহ খুন ও জখমেরও হুমকি দেন রাসেল।
রুহুল আমিন তার জানমালের নিরাপত্তার জন্য আইনের আশ্রয় নিয়ে রংপুর কতোয়ালী থানায় সোমবার অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত বেরোবি কর্মকর্তা রাসেল অভিযোগ হওয়ার বিষয়ে তিনি জানেন না উল্লেখ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আপেল মাহমুদ রুহুল আমিনের কাছে টাকা পান। কিন্তু তিনি সেই টাকা দিচ্ছিলেন না। এজন্য আমি গিয়ে সেই টাকা দেওয়ার কথা বলে আসছিলাম। এর বেশি কিছু না। এখন অভিযোগ হয়েছে কি না সে বিষয়ে আমি জানি না।
রাসেলকে টাকা তুলতে পাঠিয়েছেন কি না এ বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক আপেল মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি যে টাকা পেতাম সেটা তো পেয়ে গেছি। আর রাসেলকে আমি টাকা আনতেও পাঠাইনি এমনকি তার সাথে আমার এ বিষয়ে কোনও কথাও হয়নি। যদি সে গিয়ে থাকে তাহলে এটা স্বপ্রণোদিত হয়েই গেছে।
তিনি কখন টাকা পেয়েছেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে আপেল মাহমুদ বলেন, গত শনিবার (১১ মে) আমাকে চেক দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা আমার একাউন্টে রবিবার (১২ মে) বিকালে আসে। এখন যে অভিযোগ হয়েছে এটার সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তাছাড়া আমি টাকা পেয়েছি রবিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায়। আর রাসেল সিমেন্টের দোকানে গেছেন সন্ধ্যা সাতটায়।
রংপুর কতোয়ালী থানার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজালাল অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও বিবাদী রাসেল থানায় এসেছিলেন। তারা নিজেরাই বিষয়টির মিমাংসা করে নেবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন। পরে আমি বাদির সাথে কথা বলে তাদেরকে সময় দিয়েছি। এরপর কি হলো এখন পর্যন্ত আর জানি না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো: শরিফুল ইসলাম জানান, এই বিষয়ে আমার জানা নেই।
রেজিস্টার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী বলেন,এই বিষয়ে অবগত না। প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নেন তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।