সরকারি কার্যালয়ে গেলে প্রয়োজনীয় সেবা না পাওয়ার অভিযোগ অনেকেরই। বিশেষত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীর রূঢ় আচরণের শিকার হওয়ার অভিযোগও করেন অনেকে। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলেও এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
এমন পরিস্থিতিতে কঠোর নিয়ম চালু করেছে ফিলিপাইনের একটি শহর কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার সময় সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মুখে হাসি ধরে রাখতে হবে। এর ব্যত৵য় হলে গুনতে হবে জরিমানা। এমনকি চাকরিও হারাতে হতে পারে।
ব্যতিক্রমী এই নিয়ম চালু করেছে ফিলিপাইনের লুজন দ্বীপের কুয়েজন প্রদেশের মুলানি শহর কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মে মাসে শহরটিতে মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মেয়র হন অ্যারিস্টটল আগুইরে। গত জুনে তিনি দায়িত্ব নেন। আর চলতি মাসে শহর কর্তৃপক্ষ ‘স্মাইল পলিসি’ (হাসি নীতি) চালু করে।
অ্যারিস্টটল আগুইরের এই ‘স্মাইল পলিসি’ মুলানি শহরের সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য। মেয়র আগুইরে জানান, সরকারি সেবা দেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীরা মুখ গোমড়া করে রাখেন। এটা মোটেও উচিত নয়। এতে তাঁরা যেমন কাজের আগ্রহ হারান, তেমনি সেবাগ্রহীতারাও অসন্তুষ্ট হন। তাই শহরের সব সরকারি কার্যালয়ের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের কাজের সময় মুখে হাসি ধরে রাখতে বলা হয়েছে।
শুধু নির্বাহী আদেশ দিয়েই ক্ষান্ত হননি আগুইরে। এই নিয়ম মানতে কড়া অবস্থান নিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, কোনো কর্মকর্তা–কর্মচারী এই নিয়ম ভাঙলে জরিমানা হবে। সর্বোচ্চ ছয় মাসের বেতনের সমপরিমাণ জরিমানা গুনতে হতে পারে। শুধু তাই নয়, নিয়ম ভাঙার অপরাধ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারী চাকরি হারাতে পারেন।
সমুদ্রঘেঁষা শহর মুলানির নারকেল উৎপাদনকারী ও জেলেদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, টাউন হলে কর দিতে কিংবা সহায়তা আনতে গেলে কর্মকর্তা–কর্মচারীরা রূঢ় আচরণ করেন।
মেয়র নির্বাচিত হলে এই সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আগুইরে। এ জন্য শহরটির সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার সময় মুখে হাসি বজায় রাখার নিয়ম চালু করেছেন তিনি। এখন আগুইরের আশা, কর্মচারীরা নিয়মটি পালন করবেন এবং এই নিয়মের আওতায় কাউকে শাস্তি দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।