The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪

৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ‘বাংলাদেশ বিষয়াবলি’। এতে ২০০ নম্বরের জন্য ৪ ঘণ্টা সময় বরাদ্দ। মোট ১৬টি অধ্যায় রয়েছে। এখানে সব পরীক্ষার্থীর বেশি নম্বর পাওয়ার সুযোগ থাকে। সিলেবাস অনেক বড় মনে হলেও অনেক টপিক প্রিলিতে পড়া হয়ে যায়। তাই কিছু অধ্যায়ের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি এবং বাংলা ও ইংরেজি রচনায় সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায়।

● প্রথমেই বাংলাদেশ বিষয়াবলির সিলেবাসটি ভালো করে বুঝে নিন। এতে করে কোন কোন বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে আর কোন কোন বিষয়ে তুলনামূলক কম গুরুত্ব দিতে হবে, তা অনুধাবন করা সহজ হবে। তারপর ৮০/২০ রুল প্রয়োগ করে ভালো করে প্রিপারেশন নিতে পারলে বিষয়টিতে অনেক বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব।

● পিএসসির দেওয়া বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার বর্তমান সিলেবাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—শুধু সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধ অংশ থেকেই ৮০-৯০ নম্বরের প্রশ্ন হয়ে থাকে। সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারলে এখানে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

● আমার মতে অর্থনৈতিক সমীক্ষা হচ্ছে বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বাইবেল। অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস সম্পর্কিত ৫-৬টি অধ্যায় পড়তে পারলে প্রিলি, লিখিত ও মৌখিক সব জায়গায় ভালো করা সম্ভব।

● ম্যাপ, ডেটা চার্ট: কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তরে ম্যাপ সংযোজন করতে পারলে ১-২ নম্বর বেশি পাবেন। সঠিক ম্যাপ আঁকতে না পারলে তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই এবং সব প্রশ্নের উত্তরে ম্যাপ দেয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। ডেটা ও চার্ট হতে হবে সঠিক এবং গ্রহণযোগ্য উৎস থেকে।

● বাংলাদেশ বিষয়াবলির সিলেবাসের চার নম্বর অধ্যায় অর্থনীতি সম্পর্কিত। এই অধ্যায়ের যেকোনো প্রশ্নের উত্তরে ডেটা এবং চার্ট নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

● পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের (অধ্যায় ৬ এবং ৭) জন্য অর্থনৈতিক সমীক্ষার পঞ্চদশ অধ্যায় (পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়ন) ও দশম অধ্যায় (বিদ্যুৎ ও জ্বালানি) এবং মাধ্যমিক ভূগোল বইয়ের নবম, দশম, একাদশ ও চতুর্দশ অধ্যায় থেকে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলে এই অংশে ভালো করা সম্ভব। রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন (অধ্যায় ১০ এবং ১১) থেকে সংবিধানের উল্লেখিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট আইনগুলো সম্পর্কে অবশ্যই জেনে যাবেন। তাছাড়া এই অধ্যায় থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর সাধারণ ধারণা থেকেই লেখা সম্ভব।

● সংবিধান এবং রাষ্ট্রের নির্বাহী, বিচার ও আইন বিভাগ (অধ্যায় ৭ এবং ৮)। বাংলাদেশের সংবিধান এবং উচ্চমাধ্যমিক পৌরনীতি ও সুশাসন (২য় পত্র) বই ভালোভাবে পড়লে এই অধ্যায় দুটিতে ভালো করা সম্ভব। অধ্যায় ৪, ৬ ও ১৪ ভালোভাবে পড়তে পারলে আন্তর্জাতিক বিষয়বলির অনেক বিষয় পড়া হয়ে যায়।

নারীর ক্ষমতায়ন, নারী নীতি ও সংবিধানে নারী ইত্যাদি বিষয়গুলোর ওপর ভালো ধারণা রাখলে অধ্যায় ১৫–এর প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে যাবে।

● অধ্যায় ১৬ হলো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক। লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ৫০ নম্বর আলাদাভাবে উল্লেখ করা আছে।

● প্রিলিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অনেক কিছুই পড়া হয়েছে। আর সেটা ঠিকমতো গুছিয়ে উপস্থাপন করতে পারলে এই অধ্যায় থেকে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। মনে রাখবেন মুক্তিযুদ্ধ এবং সংবিধান অংশ থেকেই ৮০-৯০ নম্বরের প্রশ্ন পরীক্ষায় পাওয়া যায়। এই অংশে ভালো করতে হলে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সঠিক এবং সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।

● অধ্যায় ১, ২ ও ৩ এর জন্য নবম দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ এবং অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং সম্প্রতি বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত কলাম ও সংবাদ থেকে প্রস্তুতি নিলে এই অধ্যায়ে ভালো করা সম্ভব।

বেশি নম্বর পেতে অবশ্যই করণীয়
বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সময়। ৪ ঘণ্টায় অবশ্যই সব প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। যেহেতু ২৪০ মিনিটে ২০০ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, সেহেতু আপনি প্রতি ১ নম্বরের জন্য মাত্র ১ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময় পাবেন। এই সময়ের হিসাব করে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। যেমন: ৫ নম্বরের একটি প্রশ্নের উত্তর ৬ মিনিটের মধ্যে লিখে শেষ করার চেষ্টা করবেন এবং শুধু মূল পয়েন্টগুলোতে ফোকাস করবেন। এর বেশি সময় নিয়ে লিখতে যাবেন না। পরীক্ষায় সময় খেয়াল না করলে পুরো পরীক্ষায় একই ধারা অব্যাহত রাখা এবং সব প্রশ্নের উত্তর করা কঠিন হয়ে যাবে। সব প্রশ্নের উত্তর লিখে আসবেন। প্রথম প্রশ্নের উত্তর থেকেই দ্রুতগতিতে লেখার চেষ্টা করবেন। লেখা খুব সুন্দর হওয়ার প্রয়োজন নেই। বোঝা গেলেই হলো। সম্ভব হলে প্রশ্নের উত্তরগুলো সিরিয়াল করে লিখবেন। প্রতিটি পরীক্ষার আগের রাতে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে যাতে পরীক্ষার সময় আপনি সতেজ থাকতে পারেন। একটানা পরীক্ষা হওয়ায় যেকোনো একটি পরীক্ষা আপনার আশানুরূপ নাও হতে পারে বা খারাপ হতে পারে। এর প্রভাব যেন পরবর্তী পরীক্ষায় না পড়ে। সবার জন্য শুভকামনা।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা বাংলাদেশ বিষয়াবলির প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ‘বাংলাদেশ বিষয়াবলি’। এতে ২০০ নম্বরের জন্য ৪ ঘণ্টা সময় বরাদ্দ। মোট ১৬টি অধ্যায় রয়েছে। এখানে সব পরীক্ষার্থীর বেশি নম্বর পাওয়ার সুযোগ থাকে। সিলেবাস অনেক বড় মনে হলেও অনেক টপিক প্রিলিতে পড়া হয়ে যায়। তাই কিছু অধ্যায়ের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি এবং বাংলা ও ইংরেজি রচনায় সামঞ্জস্য খুঁজে পাওয়া যায়।

● প্রথমেই বাংলাদেশ বিষয়াবলির সিলেবাসটি ভালো করে বুঝে নিন। এতে করে কোন কোন বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে আর কোন কোন বিষয়ে তুলনামূলক কম গুরুত্ব দিতে হবে, তা অনুধাবন করা সহজ হবে। তারপর ৮০/২০ রুল প্রয়োগ করে ভালো করে প্রিপারেশন নিতে পারলে বিষয়টিতে অনেক বেশি নম্বর পাওয়া সম্ভব।

● পিএসসির দেওয়া বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার বর্তমান সিলেবাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—শুধু সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধ অংশ থেকেই ৮০-৯০ নম্বরের প্রশ্ন হয়ে থাকে। সংবিধান এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারলে এখানে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।

● আমার মতে অর্থনৈতিক সমীক্ষা হচ্ছে বিসিএস লিখিত পরীক্ষার বাইবেল। অর্থনৈতিক সমীক্ষা থেকে লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস সম্পর্কিত ৫-৬টি অধ্যায় পড়তে পারলে প্রিলি, লিখিত ও মৌখিক সব জায়গায় ভালো করা সম্ভব।

● ম্যাপ, ডেটা চার্ট: কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তরে ম্যাপ সংযোজন করতে পারলে ১-২ নম্বর বেশি পাবেন। সঠিক ম্যাপ আঁকতে না পারলে তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই এবং সব প্রশ্নের উত্তরে ম্যাপ দেয়ার মানসিকতা পরিহার করতে হবে। ডেটা ও চার্ট হতে হবে সঠিক এবং গ্রহণযোগ্য উৎস থেকে।

● বাংলাদেশ বিষয়াবলির সিলেবাসের চার নম্বর অধ্যায় অর্থনীতি সম্পর্কিত। এই অধ্যায়ের যেকোনো প্রশ্নের উত্তরে ডেটা এবং চার্ট নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

● পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের (অধ্যায় ৬ এবং ৭) জন্য অর্থনৈতিক সমীক্ষার পঞ্চদশ অধ্যায় (পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়ন) ও দশম অধ্যায় (বিদ্যুৎ ও জ্বালানি) এবং মাধ্যমিক ভূগোল বইয়ের নবম, দশম, একাদশ ও চতুর্দশ অধ্যায় থেকে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলে এই অংশে ভালো করা সম্ভব। রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন (অধ্যায় ১০ এবং ১১) থেকে সংবিধানের উল্লেখিত স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট আইনগুলো সম্পর্কে অবশ্যই জেনে যাবেন। তাছাড়া এই অধ্যায় থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর সাধারণ ধারণা থেকেই লেখা সম্ভব।

● সংবিধান এবং রাষ্ট্রের নির্বাহী, বিচার ও আইন বিভাগ (অধ্যায় ৭ এবং ৮)। বাংলাদেশের সংবিধান এবং উচ্চমাধ্যমিক পৌরনীতি ও সুশাসন (২য় পত্র) বই ভালোভাবে পড়লে এই অধ্যায় দুটিতে ভালো করা সম্ভব। অধ্যায় ৪, ৬ ও ১৪ ভালোভাবে পড়তে পারলে আন্তর্জাতিক বিষয়বলির অনেক বিষয় পড়া হয়ে যায়।

নারীর ক্ষমতায়ন, নারী নীতি ও সংবিধানে নারী ইত্যাদি বিষয়গুলোর ওপর ভালো ধারণা রাখলে অধ্যায় ১৫–এর প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে যাবে।

● অধ্যায় ১৬ হলো মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক। লিখিত পরীক্ষার সিলেবাসে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ৫০ নম্বর আলাদাভাবে উল্লেখ করা আছে।

● প্রিলিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অনেক কিছুই পড়া হয়েছে। আর সেটা ঠিকমতো গুছিয়ে উপস্থাপন করতে পারলে এই অধ্যায় থেকে ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব। মনে রাখবেন মুক্তিযুদ্ধ এবং সংবিধান অংশ থেকেই ৮০-৯০ নম্বরের প্রশ্ন পরীক্ষায় পাওয়া যায়। এই অংশে ভালো করতে হলে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সঠিক এবং সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন।

● অধ্যায় ১, ২ ও ৩ এর জন্য নবম দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ এবং অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং সম্প্রতি বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত কলাম ও সংবাদ থেকে প্রস্তুতি নিলে এই অধ্যায়ে ভালো করা সম্ভব।

বেশি নম্বর পেতে অবশ্যই করণীয়
বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সময়। ৪ ঘণ্টায় অবশ্যই সব প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। যেহেতু ২৪০ মিনিটে ২০০ নম্বরের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে, সেহেতু আপনি প্রতি ১ নম্বরের জন্য মাত্র ১ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময় পাবেন। এই সময়ের হিসাব করে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। যেমন: ৫ নম্বরের একটি প্রশ্নের উত্তর ৬ মিনিটের মধ্যে লিখে শেষ করার চেষ্টা করবেন এবং শুধু মূল পয়েন্টগুলোতে ফোকাস করবেন। এর বেশি সময় নিয়ে লিখতে যাবেন না। পরীক্ষায় সময় খেয়াল না করলে পুরো পরীক্ষায় একই ধারা অব্যাহত রাখা এবং সব প্রশ্নের উত্তর করা কঠিন হয়ে যাবে। সব প্রশ্নের উত্তর লিখে আসবেন। প্রথম প্রশ্নের উত্তর থেকেই দ্রুতগতিতে লেখার চেষ্টা করবেন। লেখা খুব সুন্দর হওয়ার প্রয়োজন নেই। বোঝা গেলেই হলো। সম্ভব হলে প্রশ্নের উত্তরগুলো সিরিয়াল করে লিখবেন। প্রতিটি পরীক্ষার আগের রাতে অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে যাতে পরীক্ষার সময় আপনি সতেজ থাকতে পারেন। একটানা পরীক্ষা হওয়ায় যেকোনো একটি পরীক্ষা আপনার আশানুরূপ নাও হতে পারে বা খারাপ হতে পারে। এর প্রভাব যেন পরবর্তী পরীক্ষায় না পড়ে। সবার জন্য শুভকামনা।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন