দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের ‘আগাছা-পরগাছা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাদের বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় যুক্ত হন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা একটা কথা বলতেন—বাংলাদেশের মাটি এত ঊর্বর, এখানে যেমন ফসল হয়, তেমনই অনেক পরগাছা-আগাছাও জন্মে। এই আগাছা থাকবে, এটা ঠিক। কিন্তু এই আগাছাকে কী করতে হবে, সেটা বাঙালিদের নিজেদেরই ভাবতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই। মানুষের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা-দীক্ষায়, সংস্কৃতি চর্চায় সবদিক থেকে এই বাঙালি নিজের মর্যাদা নিয়ে স্বমহিমায় স্বগৌরবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে, এটাই আমাদের কামনা। ভাষা আন্দোলনে শহিদ, স্বাধীনতাযুদ্ধের শহিদ এবং জাতির পিতার প্রতি এটাই আমাদের অঙ্গীকার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের মধ্যেই কিছু লোক আছে, যাদের কাছে অর্জনটা মনঃপুত হয় না। কারণ, পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ থাকতেই তারা পছন্দ করে। এই শ্রেণিটা কখনো আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে জানে না। তারা মর্যাদা বিকিয়ে দিয়েই আত্মতুষ্টি পায়। সেই শ্রেণিটা এখনও আমাদের সমাজে রয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘যতই আমরা উন্নতি করি, সারা বিশ্ব সেই উন্নয়ন দেখলেও দেশের কিছু মানুষ যেন অন্ধই থাকে। তারা কোনো উন্নয়ন দেখে না। এ অর্জনের কথা বলতে গেলেও তাদের দ্বিধা। এ ধরনের মানসিকতা কেন, নিজের কাছেই তা অবাক লাগে এবং প্রশ্ন আসে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছে। স্বাধীন হয়েছি বলেই যারা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছেন তারা মর্যাদা পেয়েছেন। আজকে ২১ ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের এখানে নয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তাদের আত্মত্যাগের জন্যই আমাদের এই মহৎ অর্জন সম্ভব হয়েছে। জাতির পিতা সব সময় বলতেন, মহান অর্জনের জন্য মহান আত্মত্যাগ দরকার।’
আলোচনা সভায় অংশ নেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, আব্দুর রহমান ও এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি গণভবন প্রান্ত থেকে সভা সঞ্চালনা করেন।