The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

বাকৃবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

শিক্ষক ফোরামে একাংশের সংবাদ সম্মেলন

বাকৃবি প্রতিনিধিঃ নিয়োগে এবং শিক্ষা সংক্রান্ত অনিয়ম, উপাচার্যের একসঙ্গে দুটি বাসভবন ব্যবহার, ডিপিপি বাস্তবায়নে ব্যর্থতাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্যসহ প্রশাসনে নিয়োজিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে । বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশ এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলাম, উপদেষ্টা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমানসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ড. পূর্বা ইসলাম জানান, বাকৃবিতে বিগত ৩ বছর ধরে উপাচার্যের পছন্দের গুটিকয়েক ব্যক্তি প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো দখল করে রেখেছে। ওই গুটিকয়েক অনুপ্রবেশকারী, অসৎ ও আদর্শহীন ব্যক্তি দ্বারা প্রশাসন পরিচালনা করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লালিত ঐতিহ্য দিনের পর দিন নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের ব্যর্থতায় দীর্ঘ সেশনজট সৃষ্টি হয়েছে। করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ না নিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা বার বার পেছানো হয়েছে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা একটি দীর্ঘ সেশন জটে পড়েছে যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে কখনও ঘটে নি। অন্যদিকে প্রশাসনিক ঢিলেমির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ জন পিএইচডি শিক্ষার্থীকে সকল প্রক্রিয়া শেষ করার পরও ডিগ্রি অর্জন করতে প্রায় দেড় বছর বসে থাকতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে এবছর চরম অরাজকতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি ছাড়াই শিক্ষক বদলি, একই ব্যক্তিকে একাধিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া, এমনকি বাছাই কমিটির আপত্তি সত্ত্বেও নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ড. ইয়াহিয়া বলেন, বাকৃবি উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই উপাচার্যের বরাদ্দকৃত বাসভবন ছাড়াও পূর্বের বাসাটিও একই সাথে ব্যবহার করে আসছে। তবে উপাচার্য নিয়োগের সময়ই যেখানে বরাদ্দকৃত বাসাটি ব্যবহারের জন্য নিয়োগপত্রে বলা হয়ে থাকে। সেখানে তিনি একই সাথে দুটি বাসা ব্যবহার করে আসছেন যেটি নিয়ম বহির্ভূত। এছাড়াও উপাচার্য কাগজে কলমে নানা ধরনের কাজের অযুহাতে প্রায় সময় ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকেন। উপাচার্যের অনুপস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্ধকারে নিপতিত করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়নের জন্য ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজালের (ডিপিপি) কাছ থেকে ২০১৮ সালে ৬শ’ ৫৯ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে উপাচার্যের ব্যর্থতায় প্রকল্পের ৩ বছর মেয়াদকালে কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। মোট অর্থের মাত্র ৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের এই দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বাকি টাকা ফেরত চলে গেছে পুণঃপ্রস্তাবণার জন্য।

সংবাদ সম্মেলনে ড. অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়রানিসহ একাধিক ঘটনার কোনো বিচার না হওয়া, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি ও আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠনে বিভাজন সৃষ্টি, বাসা বরাদ্দ কমিটির অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির কারণে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বাসা বরাদ্দে অনিয়মের জন্য দায়ী উপাচার্য ও তার ঘনিষ্ট প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গরা।

দুটি বাসভবন ব্যবহারের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, একটি তদন্ত কমিটি ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে দেখেছে উপাচার্যের বাসভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। আমি ও আমার পরিবার পুরাতন বাসায় থাকি। আমি বা আমার পরিবারের কেউই ওই বাসায় থাকে না। শীঘ্রই সংস্কার করা হবে।

ডিপিপির বিষয়ে বলেন, অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের টাকাটি ফেরত যায়নি। ক্যাম্পাসে অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মিটিং ব্যতিত কখনো ক্যাম্পাসের বাইরে যাই না।

বাসা বরাদ্দে অনিয়ম নিয়ে বলেন, এগুলোর আলাদা কমিটি আছে তারা দেখবে বিষয়গুলো।

বিচারহীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, এই সকল বিষয়ে আলাদা আলাদা কমিটি আছে। তারা কাজ করছেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের উপর হামলা বিচার করবেন বলেও আশ্বাস দেন।

শিক্ষকদের বিভক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি দুই পক্ষের সাথে ৫ বার বসে আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনো সমঝোতা হয়নি। তাদের দলীয় নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে নিজেরাই বিভক্ত হয়েছে।

নিয়োগের অনিয়মের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, নিয়োগ এবং বদলি নিয়ম মেনেই হয়েছে। আমার কোনো আত্মীয়-স্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেই নি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.