কর্মচারী নিয়োগ: মাউশির ‘অনিয়ম’ তদন্তে দুদকের অভিযান

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) চার হাজার কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম।
রোববার (৯ জানুয়ারি) দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার এবং রনজিৎ কুমার কর্মকারের সমন্বয়ে গঠিত একটি টিম মাউশি কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেন।
জানা গেছে, দুদক টিম অভিযোগ যাচাই ও সততা উদঘাটনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলেন এবং সংশ্লিষ্ট অভিযোগ সম্পর্কে তার বক্তব্য রেকর্ড করেন।
দুদক জানায়, নিয়োগ বিধি ১৯৯১ অনুযায়ী তাদের নিয়োগের অনুমোদন নিয়ে প্রথমে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের জন্য পদক্ষেপ নিলেও পরে ৭০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয় মাউশি। ‘প্রদর্শক’ শ্রেণির ক্যাটাগরির দশম গ্রেডের পদগুলোকে তৃতীয় শ্রেণি দেখিয়ে নিজেরা (মাউশি) নিয়োগ দেয়। কিন্তু পদোন্নতির বেলায় পিএসসির মাধ্যমে দ্বিতীয় শ্রেণি বা দশম গ্রেড দেখিয়ে ক্যাডার সার্ভিসের সঙ্গে আত্মীকরণ করা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, আমাদের কাজ নিয়োগ দেওয়া, আর পিএসসি’র দায়িত্ব প্রমোশন দেওয়া। সেখানে আমাদের কিছু করার নেই।
এ সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, নথির নোটশিটে দশম গ্রেডের পদগুলোকে দ্বিতীয় শ্রেণি উল্লেখ করা হলেও মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ অনুমোদনের ক্ষেত্রে তা তৃতীয় শ্রেণি দেখিয়ে অনুমোদন নেওয়া হয় এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে নিয়োগবিধি এবং কমিটির কার্যবিবরণীসহ আরও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর অনুরোধ করা হয়।
দুদক আরও জানায়, পরে সরবরাহকৃত কাগজপত্র যাচাইপূর্বক বিস্তারিত অনুসন্ধানের সুপারিশসহ কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম। এছাড়া শেরপুরের জেলা কারাগারের সহকারী কারারক্ষীসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে জামিনপ্রাপ্ত বন্দিদের নিকট থেকে ঘুস দাবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযোগ চালিয়েছে দুদকের আরেকটি এনফোর্সমেন্ট টিম।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় টাঙ্গাইলের উপসহকারী পরিচালক লতিফ হাওলাদারের নেতৃত্বে আজ অপর একটি অভিযান পরিচালনা করেছে এনফোর্সমেন্ট টিম। দুদক টিম সরেজমিনে শেরপুর কারাদপ্তর পরিদর্শন করে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে অভিযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলে। তিনি দুদক টিমকে জানান, অভিযোগকারী এরই মধ্যে তার টাকা বুঝে পেয়েছেন। তার দুজন স্ত্রী দাবিদার থাকায় এ অর্থ পরিশোধে বিলম্ব হয়। কারাদপ্তরের একটি অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন নথিপত্র সংগ্রহ করেছে দুদক টিম।
গ্যাং নেতার সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ গেল ২ সাংবাদিকের

হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের কাছে লেবোল টুয়েলভ এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে দুই সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। ওই এলাকায় সশস্ত্র গ্যাং নেতার সাক্ষাৎকার নিতে যাওয়ার সময় তাঁদের গুলি করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই গ্যাংয়ের প্রতিপক্ষের সদস্যরা সেখানে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের ওপর গুলি চালিয়েছেন। এক পুলিশ কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব তথ্য জানিয়েছে। লেবোল টুয়েলভ এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিতে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গ্যাং সক্রিয়। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার এ এলাকাতেই সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা রয়টার্সের কাছে নিহত সাংবাদিকদের পরিচয় প্রকাশ করেছেন। তাঁর তথ্য অনুযায়ী নিহত সাংবাদিকেরা হলেন এমাডি জন ওয়েসলি ও উইলগুয়েনস লুইসেন্ট। মন্ট্রিলভিত্তিক রেডিও স্টেশন ইকুট এফএমের সংবাদকর্মী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন ওয়েসলি। আর লুইসেন্ট ছিলেন স্থানীয় প্রতিবেদক। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ওই দুজনের সঙ্গে আরও এক সাংবাদিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি হামলার ঘটনায় অক্ষত অবস্থায় পালাতে সক্ষম হন।
ইকুট এফএম কর্তৃপক্ষ ওয়েসলির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। এক বিবৃতিতে এ হত্যাকাণ্ডকে ‘অপরাধমূলক ও বর্বর’ কর্মকাণ্ড বলে উল্লেখ করেছে তারা।
ওমিক্রন প্রতিরোধে পুলিশ সদস্যদের জন্য যেসব নির্দেশনা

করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেছে পুলিশ সদরদপ্তর।
বুধবার বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর এআইজি (অপারেশনস্-২) মোহাম্মদ উল্ল্যা স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
নির্দেশনাগলো হলো...
১. প্রত্যেক পুলিশ সদস্য ডিউটি পালনের সময় অবশ্যই মাস্ক, গ্ল্যাভস, হেডকভার, ফেসশিল্ড প্রভৃতি পরিধান করবেন।
২. ডিউটি পালনকালে কিছু সময় পর পর হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে এবং নিয়মিত ডিউটি শেষে সাবান/হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
৩. কোডিড-১৯ (ওমিক্রন) উপসর্গ দেখা দিলে আইসোলেশন সেন্টারে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে দ্রুত সময়ের মধ্যে কোডিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে ইউনিট ইনচার্জ কর্তৃক অধীন পুলিশ ও নন-পুলিশ সদস্যদের ভ্যাকসিন গ্রহণ নিশ্চিত করা।
৫. পুলিশের সকল ইউনিটে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ এবং ’নো মাস্ক নো এন্ট্রি’ নির্দেশনা প্রতিপালন করা এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মাস্কের ব্যবস্থা রাখা।
৬. ডিউটিরত সকল ক্ষেত্রে শারীরিক দুরত্ব (কমপক্ষে ৩ ফুট বা ১ মিটার), হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
৭. সেবা গ্রহীতা ও দর্শনার্থীদের পুলিশ স্থাপনায় প্রবেশের ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় ও হাত ধোয়া/স্যানিটাইজ নিশ্চিত করা।
৮. প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী (মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি) ব্যবহার নিশ্চিত করা।
৯. অপারেশনাল কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র, হ্যান্ডকাফ, রায়ট গিয়ার, হ্যান্ডমাইক, মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে ইত্যাদি যথাযথভাবে জীবাণুমুক্ত করা।
১০. ডিউটি শেষে আবাসস্থলে প্রবেশের পূর্বে ইউনিফর্ম ও জুতা ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করা এবং সাবান দিয়ে গোসল করা।
১১. ডাইনিং রুম, ক্যান্টিন, বিনোদন কক্ষ, রোল কল, ডিউটিতে যাবার পূর্বে ও ডিউটি হতে ফেরার পরে, সমাবেশস্থলে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবহার নিশ্চিত করা।
১২. কোভিড-১৯ উপসর্গ দেখা দিলে কিংবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে ছিল বা এসেছে এমন পুলিশ সদস্যদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোভিড পরীক্ষার ব্যবস্থা করা।
১৩. কোভিড-১৯ পজেটিভ সদস্যদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কেন্দ্রীয়/বিভাগীয়/জেলা পুলিশ দাসপাতাল ও স্থানীয় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
১৪. জরুরি প্রয়োজনে রোগীকে অন্যত্র স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ইউনিট ইনচার্জ কর্তৃক তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১৫. ইউনিট ইনচার্জ ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের নিজ ইউনিটের আক্রান্ত সদস্য ও তার পরিবারের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা এবং সার্বিক সহায়তা প্রদান করা।
১৬. হাজতখানা সর্বদা জীবাণুমুক্ত রাখা এবং হাজতে থাকাকালীন কোন ব্যক্তির কোডিড-১৯ এর লক্ষণ প্রকাশ পেলে অবিলম্বে তাকে পৃথক করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া।
১৭. রেশন সামগ্রী, ঔষধ ইত্যাদি সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিতরণের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব নিশ্চিত করা।
১৮. কোডিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স কর্তৃক প্রণীত SOP এর নির্দেশনাসমূহ অনুসরণ এবং রোলকলে সচেতনতামূলক ব্রিফিং প্রদান করা।
১৯. কোডিড-১৯ সংক্রাতে ইতোপূর্বে প্রেরিত নির্দেশনা যথাযথ ও আন্তরিকভাবে প্রতিপালন করবেন।
২০. প্রত্যেক পুলিশ ইউনিটে কর্মরত সকল সদস্যদের স্থানীয় স্বাস্থ্য প্রশাসনের সাথে সমন্বয়পূর্বক কোভিড-১৯ (বুস্টার ডোজ) ভ্যাকসিন গ্রহণে নিশ্চিত করতে হবে।
২১. কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী বিধায় সকল পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারবর্গকে অবশ্যই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
মুরাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ স্ত্রীর

পদ হারানো সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ৯৯৯ এ কল করে নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া।
ওসি বলেন, ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের ১৫ নম্বর সড়কের বাসায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ দিয়েছেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান।
এ বিষয়ে ধানমন্ডি জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) আরএম ফয়জুর রহমান জানান, মুরাদ হাসানের স্ত্রী ৯৯৯-এ ফোন করে একটি অভিযোগের কথা জানান। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করার জন্য মুরাদের স্ত্রী এখন থানায় এসেছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, অশালীন বক্তব্য ও ফোনের রেকর্ডিং ফাঁসের ঘটনায় প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানোর পর গত বৃহস্পতিবার রাত ১টা ২০ মিনিটে কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন মুরাদ হাসান। এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ইকে ৮৫৮৫-এ তিনি প্রথমে দুবাই যান, এরপর সেখান থেকে আরেকটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয় কানাডীয় কর্তৃপক্ষ। মুরাদ হাসান এরপর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢোকার চেষ্টা করেন। দুবাই ইমিগ্রেশনও আটকে দেয় সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীকে। এরপর তিনি বাধ্য হয়ে আবার দেশে ফিরে আসেন।
মন্তব্য