The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪

ছাত্রীদের তোপের মুখে জবির হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’ এ পূজার ছুটিতে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন৷ এ নিয়ে হলের আবাসিক ছাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে প্রশাসনের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে পুনরায় হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

শুক্রবার প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম পূজার ছুটিতে হল খোলা রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ব্যাপারে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) হল বন্ধের নোটিশে বলা হয়, ১ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। ৩০ সেপ্টেম্বর বিকেলের মধ্যে ছাত্রীদের হল খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা টিউশনসহ বিভিন্ন কারণে বাড়ি যেতে ইচ্ছুক না হওয়ায় হলে থাকার আবেদন জানান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে হলে থাকা আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের মাঝে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পূজার ছুটিতে আবাসিক ছাত্রীহলের শিক্ষার্থীরা কোথায় অবস্থান করবে সেটা নিয়েও নানা প্রশ্ন ওঠে।

হল বন্ধের নোটিশ পাওয়ার পর পরই ছাত্রীরা হল চালু রাখার আবেদন করেন। দাবি জানিয়ে তারা বলেন, যেকোনো ছুটি উপলক্ষে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধ হয় না। মিড ও সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় ছাত্রীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। আবার পূজার ছুটির পর অনেকের সেমিস্টার ফাইনাল, মিড থাকায় তারা হলে অবস্থান করতে চায়। সে প্রেক্ষিতে হল প্রভোস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট ও দিতে দেখা যায় হলের আবাসিক ছাত্রীদের।

এছাড়া হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ভাড়া না থাকা শিক্ষার্থীরা বাড়িতে কিভাবে যাবে এটা নিয়েও ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে কয়েকজন শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকরাও বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান।

কলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক চঞ্চল বোস ফেসবুকে মন্তব্যের মাধ্যমে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ছুটিতে বন্ধ থাকে বলে কখনো শুনিনি। ঢাবিতে ৬ বছরের বেশি মুহসীন হলে ছিলাম, এক মুহূর্তের জন্যও কোনো হল বন্ধ থাকার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। বরং ছুটিতে হলে থেকেই আমরা বেশি পড়াশুনো করেছি, লাইব্রেরি ওয়ার্ক করেছি। অনেক ছেলেমেয়ে টিউশনি, চাকরি, পত্রিকা অফিসে কাজ করতো। এরকম অদ্ভুত কথা তো শুনিনি। এদিকে দেখছি “মুজিব” আবার “মুবিজ” হয়ে গেছে। এসব কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় কনসেপ্টের সঙ্গে একেবারেই বেমানান।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রী জানান, আমরা ঢাকাতে টিউশন করানোর জন্য হওয়াতে এবার বাসায় যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিলো না। হটাৎ হল বন্ধের নোটিশ দেখে বেশ বিড়ম্বনার মাঝে পড়ে গিয়েছিলাম। দেশের অন্য কোনো হল এভাবে ছুটিতে বন্ধ রাখে বলে জানা নেয়। এছাড়া বন্ধের পরে আমাদের পরীক্ষাও ছিল। তবে হল কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারনে খুশি হয়েছি।

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, পূজার ছুটি যদি বৈষম্য সৃষ্টি করে তাহলে আমরা ঈদেও হল বন্ধ হোক সেটা চাই না। তাছাড়া যাতায়াতের ভাড়া বৃদ্ধির কারণে এবারের ছুটিতে বাসায় যাওয়ারও ইচ্ছা ছিলো না। প্রশাসনের নিকট আবেদন থাকবে পরবর্তীতে যেন এভাবে হল বন্ধ না করা হয়।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ছুটিতে হল খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে আবাসিক ছাত্রীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছুটির সঙ্গে আবাসিক হলের ছুটির কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে হলের ছাত্রীরা স্মারকলিপিও দেয়।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি সুমাইয়া সোমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশের কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো কখনো কোন ছুটিতে বন্ধ থাকেনা। অতি অত্যাধুনিক ছাত্রী হলের একমাত্র অনিয়ম, দুর্নীতিবাজ, হল ব্যবসায়ী প্রশাসন এই ধরনের নতুন নতুন নিয়ম তৈরী করে এবং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ফেলে। একদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং হল প্রশাসন মিলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নিয়মের নামে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে ফেলছে।

এ ব্যাপারে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম জানান, পূজার ছুটি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর পর কিছু বিভাগে ছাত্রীদের পরীক্ষা রয়েছে। তাদের কথা বিবেচনা করে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে হল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর আগে বিগত দুটি ঈদেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বন্ধ থাকে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.