The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

গাদাগাদি করে নেয়া হলো কুবি’র ভর্তি পরিক্ষা, এক টেবিলে ১৮ জন!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের ২৪টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিটের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ (৩ মে)। এরমধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) অন্তর্গত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায় বেশ কয়েকটি ডিপার্টমেন্টের সেমিনার লাইব্রেরি কক্ষে পরীক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন। তবে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, উপাচার্য ইন্টেনশনালি অনভিজ্ঞ এবং মোস্ট জুনিয়র শিক্ষকদেরকে এই দায়িত্ব দিয়ে ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি আয়োজনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের সব সেমিনার লাইব্রেরিতেই ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয় আজ। এসময় সেখানে একেক টেবিলে ১৮ থেকে ২০জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছেন বলেও দেখা যায়। এছাড়া প্রশাসনিক ভবনের হল রুমেও এবার ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পূর্বের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায়ও এভাবে সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে আসন বিন্যাস করা হয়েছে।

সেমিনার লাইব্রেরিতে পরীক্ষা দেয়া এক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায় সেমিনার কক্ষে তাদের কোন সিট প্ল্যান বসানো হয়নি। শিক্ষকরা যাকে যেখানে বসতে বলেছেন তারা সেখানেই বসে পরীক্ষা দেন। একসাথে এক টেবিলে এতোজন গাদাগাদি করে পরীক্ষা দেয়াতে মনোযোগেও সমস্যা হচ্ছিলো বারবার। আরও বিভিন্ন জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে আসলেও এভাবে ঠাসাঠাসি ভাবে বসে পরীক্ষা দেয়ার অভিজ্ঞতা এখানেই প্রথম।

এনিয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ৫ম তলার হল পরিদর্শক ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ককে প্রশ্ন করতে বলেন।

‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমি ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক। কিন্তু সিট প্ল্যানের জন্য ‘কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটি’ নামে আলাদা একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিই আসন বিন্যাসের ব্যপারে ভালো বলতে পারবে।

বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. প্রদীপ দেবনাথ বলেন, আমার অনুষদের প্রতিটি বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিতেই পরীক্ষা হয়েছে। এভাবে এক টেবিলে ১৮-২০ জন পরীক্ষা দিলে সেটার স্বচ্ছতা কতটুকু থাকবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন এটা কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটিই বলতে পারবে।

শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মো. কামাল উদ্দিন বলেন, পূর্বে যতগুলো ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে সেগুলো আমরা খুব ইমেজের সাথে শেষ করেছি। কিন্তু এই উপাচার্য এবার আসন বন্টনের যে কমিটি করেছেন সেখানে তিনি তার আস্থাভাজন একেবারে অনভিজ্ঞ, জুনিয়র শিক্ষকদেরকে তিনি দায়িত্ব দিয়েছেন। যার ফলে এরা ল্যাব, সেমিনারের মতো রুম গুলোতেও এবার পরীক্ষা নিয়েছে। যেখানে ৫জন বসতে পারবে সেখানে ১০জন বসিয়েছে। এটা আসলে এদের অনভিজ্ঞতার ফল। আর এই দায়ভার সম্পূর্ণ উপাচার্যের। তিনি ভর্তি পরীক্ষার মতো একটি আয়োজনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছেন। দেশবাসীর কাছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে হাস্যকর করে তুলছেন।

কেন্দ্র ব্যবস্থা কমিটির সদস্য সচিব আবু উবায়দা রাহিদের কাছে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এমন অদ্ভুত আসন বিন্যাসের দায়ভার তিনি নিবেন কিনা, সেই প্রশ্ন করা হলে তিনি নিজে কোন দায় না নিয়ে কমিটির আহ্বায়কের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।

কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক ও লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, এবার আমরা চেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে সর্বোচ্চ সংখ্যক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে। সেজন্যই সেমিনার লাইব্রেরি গুলোতেও পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এছাড়া এই অল্প সংখ্যক পরীক্ষার্থীর জন্য আরেকটা কেন্দ্র ব্যবস্থা করা কঠিন ছিল।

এক টেবিলে ১৮ থেকে ২০ জন একসাথে পরীক্ষা দিলে সেখানে স্বচ্ছতা থাকবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সেখানে আমাদের শিক্ষকেরা দায়িত্বে ছিলেন। তারা সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছেন। এখন যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে পরবর্তীতে এভাবে সেমিনার লাইব্রেরিগুলোতে আমরা আর পরীক্ষা নেবোনা।

প্রসঙ্গত, গুচ্ছভুক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে এবার ৪ হাজার ২৯২ জন পরীক্ষার্থীর আসনের ব্যবস্থা করা হয়। এরমধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার এই দুইটি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৩ মে (শুক্রবার) সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এই পরীক্ষা নেয়া হয়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.