শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা এবং পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে হামলাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) হামলার ঘটনার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্দোলনরত শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। আজ রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফন্ট জাবি শাখার আহ্বায়ক শোভন রহমান বলেন, এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলতেন, 'শিক্ষার্থীদের গায়ে গুলি করার আগে আমাদের গায়ে করতে হবে।' অথচ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও পুলিশ ডেকে এনে নিরীহ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করাচ্ছেন। এটা আমাদের জন্য অত্যান্ত দুঃখজনক।
এদিকে এ ঘটনায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সংসদ। বিক্ষোভ মিছিলটি জিয়া মোড় এলাকা থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে সমবেত হয়ে। এরপর সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের নেতৃবৃন্দ বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছিল। সে আন্দোলনে গতকাল (শনিবার) ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন শিক্ষার্থীদের উপর যে হামলা চালিয়েছিল সেখানে সরাসরি শাবির প্রক্টর জড়িত ছিল। আজকে সেই হামলার প্রতিবাদে আজ পুনরায় আন্দোলন করার সময় ভিসির মদদে পুলিশ নিয়ে এসে ছাত্রীদের উপর হামলা করা হয়। এর চেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা আর হতে পারে না। যাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা তারাই ক্যাম্পাসে পুলিশ নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। অনতিবিলম্বে এই হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এর আগে রোববার বিকাল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিল শেষে সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেন তারা। এসময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দেব ভট্টাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীরা হলের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার বিষয়ে তাদের হল প্রভোস্টকে বলেছিল। কিন্তু তাদের দাবি কেউ মাথায় নেয়নি। বাধ্য হয়ে ছাত্রীরা যখন আন্দোলন নামে তখন ছাত্রলীগ সেখানে হামলা চালায়। তখন প্রক্টরিয়াল বডির লোকজন ছিল। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন ছাত্রলীগ নাকি সেখানে হামলা করে নাই। শিক্ষার্থীরা নাকি নিজেরাই আহত হয়েছে। ছাত্রলীগ এই হামলার দায় স্বীকার করলেও প্রক্টর সেটা ঘুরিয়ে অন্যদিকে নিচ্ছেন। ।
এছাড়া আন্দোলনরত শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বর পুলিশি হামলায় দোষীদের শাস্তি ও ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে পুলিশ ঢুকিয়ে টিয়ারশেল-রাবার বুলেট-সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ার নির্দেশনা দেওয়ায় মত জঘণ্য অপরাধ করায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ভিসির পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
সংবাদ বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সুজয় শুভ ও সদস্য সচিব আলিসা মুনতাজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মত জায়গায় যৌক্তিক দাবীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বর পুলিশী হামলা আমাদের আতঙ্কিত করেছে। আমরা মনে করি এহেন কর্মকান্ডের পরে শাবিপ্রবি ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এর আর একদিনও বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার নৈতিক অধিকার নেই।
উল্লেখ্য, শাবিপ্রবির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল প্রভোস্ট বডির সকল সদস্যের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সব বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ হামলার প্রতিবাদে আন্দোলন নামলে শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ ঘটনারই প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আবার নারায়ণগঞ্জের মেয়র আইভী

টানা তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। ১৯২টি কেন্দ্রের ভোট গণনা শেষে দেখা যায়, সেলিনা হায়াৎ আইভী পেয়েছেন ১ লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট। তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৭১ ভোট।
রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রাত ৮টায় নাসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার ফল ঘোষণা করেন। বিকেল ৫টায় ভোট গণনার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী এগিয়ে ছিলেন।
ঘোষিত ফল অনুযায়ী, ১৯২ কেন্দ্রে নৌকাপ্রার্থী আইভী এক লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার হাতি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৭১ ভোট।
এ নিয়ে আইভী তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে তৎকালীন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এক লাখ ৮০ হাজার ৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
এর আগে, ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসাবে সেলিনা হায়াৎ আইভী এক লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোটে আবার নির্বাচিত হন।
এবারে নির্বাচনে আইভী ও তৈমূর আলম ছাড়া মেয়র পদে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসিম উদ্দিন (বটগাছ) ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)।
সিটি করপোরেশন হওয়ার আগে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন আইভী। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন (এখন পৌর মেয়র বলা হয়)। সেলিনা হায়াৎ আইভীর বাবা আলী আহাম্মদ চুনকা নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর দুবার নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি আবদুল মঈন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈনকে আগামী চার বছরের জন্য ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬–এর ১০ (১) ধারা অনুসারে নিয়োগ পান তিনি।
আজ রোববার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপসচিব মো. মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সপ্তম উপাচার্য।
বর্তমান উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিয়োগ পান এ এফ এম আবদুল মঈন। ৩১ জানুয়ারি বর্তমান উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরীর মেয়াদ শেষ হবে। এরপর নতুন উপাচার্য যোগদান করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। তিনি বরিশালে বেড়ে ওঠেন। তিনি ২৩ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ২০০৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেশন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেশন ইউনিভার্সিটিতে ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাওয়ার্ড ফর লার্নিং অ্যান্ড টিচিংয়ের জন্য মনোনীত হন তিনি। দেশ–বিদেশে প্রকাশিত জার্নালে তাঁর লেখা ৩৭টি নিবন্ধ রয়েছে। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাবেক সভাপতি ও শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের একজন অভিজ্ঞ দক্ষ শিক্ষককে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া হলো। তাঁর নেতৃত্বে এ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবক্ষেত্রেই সুশাসন, ন্যায় ও সমতা হবে। এ জন্য চ্যান্সেলর (রাষ্ট্রপতি), প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
নতুন উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈন বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় আছেন। আগামী মঙ্গলবার তিনি দেশে ফিরবেন। ৩১ জানুয়ারির পর তিনি উপাচার্য পদে যোগদান করবেন।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের ছাত্রীদের সড়ক অবরোধ, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের ছাত্রীদের তিন দফা দাবি আদায়ে চলমান কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনরত ছাত্রীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ রোববার সকাল পৌনে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে ছাত্রীরা আগের দিনের মতো ফের সড়ক অবরোধ করে নতুন এই কর্মসূচির কথা জানান। এ সময় সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে আন্দোলন করেন ছাত্রীরা।
আজ সকাল পৌনে নয়টার দিকে অর্ধশতাধিক ছাত্রী গোলচত্বরে এসে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ প্রধান রাস্তা ‘কিলো সড়ক’ অবরোধ করে তিন দফা দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ চেয়ে প্ল্যাকার্ড হাতে অনেক ছাত্রী অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন। আন্দোলনরত ছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী ও বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিদের একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা গেছে। এরও আগে গতকাল শনিবার রাত ১২টার দিকে আন্দোলনের সঙ্গে নৈতিকভাবে একাত্মতা প্রকাশ এবং শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সংগঠনের ফেসবুক পেজে বিবৃতি দিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
অবরোধ শুরুর পর থেকে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সিলেট শহর ও শহরতলির বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার সময় নয়টি বাস ছাত্রীরা কিলো সড়কে আটকে দেন। একই সময়ে শিক্ষকদের ব্যক্তিগত গাড়িও শিক্ষার্থীরা ভেতরে ঢুকতে দেননি। সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নানা স্লোগান দিচ্ছিলেন। এর মধ্যে ‘প্রক্টরের উপস্থিতিতে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘সাস্টিয়ান সাস্টিয়ান, এক হও লড়াই করো’, ‘ছাত্রলীগের হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘তিন দফা তিন দাবি, মানতে হবে মেনে নাও’, ‘প্রভোস্ট বডির পদত্যাগ, করতে হবে করতে হবে’ উল্লেখযোগ্য।
কয়েক ছাত্রী কাছে অভিযোগ করেছেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দমাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে গতকাল সন্ধ্যায় হামলার ঘটনা ঘটিয়েছেন। এতে অনেকে আহতও হয়েছেন। তিন দফা দাবি আদায় না হলে ছাত্রীরা আন্দোলন থেকে সরবেন না।
চতুর্থ দিনের মতো ছাত্রীদের আন্দোলনে নামার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গতকালও দেখা করে কর্মসূচি থেকে সরে আসার অনুরোধ করেছি। এর আগে উপাচার্য স্যার আন্দোলনরত ছাত্রীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করে প্রাধ্যক্ষ কমিটির পদত্যাগের বিষয়টি ছাড়া সব কটি দাবি এক মাসের মধ্যে সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু ছাত্রীরা বলছেন, পুরো প্রাধ্যক্ষ কমিটির পদত্যাগ করতে হবে। আসলে খুঁজে খুঁজে সব ম্যাডামকে এনে অনুরোধ করে করে হলগুলো পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নিজেদের সংসার-কাজ ফেলে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনও করছেন। এখন প্রাধ্যক্ষ কমিটি যদি বাদ দিতে হয়, তাহলে কাদের দিয়ে কমিটি করব? আমরা ছাত্রীদের বলেছি, ছাত্র-শিক্ষকের যে সম্পর্কের জায়গা, তাতে যদি তোমরা কষ্ট পেয়ে থাকো, দেখবে সেটা আন্তরিকতার মধ্য দিয়েই কেটে যাবে। আর বাকি সমস্যাগুলো তো দ্রুততার সঙ্গেই সমাধান করা হচ্ছে।’
মো. আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘অমিক্রন নিয়ে আতঙ্ক আছে। এভাবে ছাত্রীরা সমাবেশ করলে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। এ কারণে ছাত্রীদের হলে ফিরে যাওয়ার জন্য আবারও অনুরোধ জানাচ্ছি।’
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের শতাধিক ছাত্রী প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ ওরফে লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে উপাচার্য গত শুক্রবার দুপুরে ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষোভ স্থগিত করে তাঁরা হলে ফেরেন। এরপর গত শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে আন্দোলনরত ছাত্রীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে উপাচার্য বৈঠক করেন।
বৈঠকে ছাত্রীদের প্রতিনিধিদল উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ উত্থাপন করে তিন দফা দাবি তুলে ধরে। এরপর শুক্রবার বিকেলে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। তখন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেছিলেন, প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ অসুস্থতার কারণে ছুটিতে থাকায় হলে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ হিসেবে আরেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তাঁদের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।
তবে উপাচার্যের সঙ্গে ওই বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি জানিয়ে আবার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ছাত্রীরা। পরে শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে ছাত্রীরা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি মানতে গতকাল সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। গতকাল বিকেল সোয়া পাঁচটা থেকে ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা জহির উদ্দীন আহমেদ ও প্রক্টর আলমগীর কবিরের সামনেই ছাত্রীদের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর গতকাল রাত দেড়টা পর্যন্ত ছাত্রীরা গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে তিন দফা দাবিতে স্লোগান দেন।
এ সময় ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে মশাল মিছিলও করেন। রাত দেড়টার দিকে ছাত্রীরা হলে ফেরেন। এর আগে তাঁরা জানান, হামলার প্রতিবাদে আজ থেকে আন্দোলনরত ছাত্রীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি সকাল আটটা থেকে গোলচত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।
সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তির আবেদন শেষ কাল

সুইডেনের সবচেয়ে প্রাচীন উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ঘোষণা করেছে। এই প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য কাল সোমবারের মধ্যেই অনলাইনে আবেদন করতে হবে। কিং কার্ল গুস্তাফ স্কলারশিপ নামের এই প্রোগ্রামের আওতায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইজারল্যান্ডের বাইরের দেশের শিক্ষার্থীদের এই বৃত্তি দেওয়া হবে। এর আওতায় টিউশন ফি সম্পূর্ণ মওকুফ করা হবে। তবে আবাসন ও দৈনন্দিন খরচ নিজে বহন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে যেকোনো বিষয় নিয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা যাবে। যেসব বিষয়ে স্নাতকোত্তর করা যাবে তা এই লিংক থেকে জেনে নিতে হবে। উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মাস্টার্স প্রোগ্রাম আগামী ২৯ আগস্ট শুরু হবে।
সুযোগ-সুবিধা
এই বৃত্তির আওতায় টিউশন ফি একদম ফ্রি
যেকোনো বিষয় নিয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা যাবে
আবেদনের যোগ্যতা
আবেদনকারীদের বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, আজারবাইজান, কঙ্গো, হন্ডুরাস, মালি, ফিলিপাইন, সোমালিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া বা ইয়েমেনের নাগরিক হতে হবে।
এই বৃত্তি আর্থিকভাবে অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। তাই আর্থিক অসচ্ছলতার বিবরণ দিতে হবে।
উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য এই কিং কার্ল গুস্তাফ স্কলারশিপ দেওয়া হবে।
মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
আবেদন ফি ও অন্য সব নথিপত্র ভর্তির নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিতে হবে।
আবেদনের প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য ১৭ জানুয়ারির মধ্যে অনলাইনে এই ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে। ভর্তি ফি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানোর শেষ তারিখ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি। মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদনের পর ১৮ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বৃত্তির জন্য অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
আবেদনের আগে এই ওয়েবসাইট থেকে আবেদন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে জেনে আবেদন করতে হবে। বৃত্তিসংক্রান্ত তথ্য এই লিংক থেকে জানা যাবে। এ ছাড়া বৃত্তিসংক্রান্ত তথ্যের জন্য uitiongrants@uadm.uu.se ঠিকানায় ই–মেইল করা যাবে।
মন্তব্য