The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪

একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত, যবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

যবিপ্রবি প্রতিনিধি: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) জোরপূর্বক শিক্ষকদের পরিবহনের চাবি ছিনিয়ে নেওয়া ও লিফট বন্ধ করার অভিযোগে শিক্ষক সমিতির ঘোষিত কর্মসূচি ‘শিক্ষকদের অপমানের বিচার না হওয়া পর্যন্ত সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে কর্মবিরতি’ চলছে।শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতিতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম, তীব্র সেশনজটের আশঙ্কায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এদিকে গত ৩১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো: আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২ আগষ্ট থেকে সকল ক্লাস স্বশরীরে অনুষ্ঠিত হবে। তবে ২ আগষ্ট থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ক্লাস-পরীক্ষা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল বলেন,শিক্ষার্থীরা ক্লাস করার জন্য মরিয়া হয়ে আছে।এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় যেন সেশন জটে না পড়ে ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত না হয় সেদিক বিবেচনা করে শিক্ষকদের ক্লাস নেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। পাশাপাশি কতিপয় শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষকের লাঞ্ছিত হওয়ার গঠনার সুস্থ তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রগতিশীল শিক্ষার্থী রাশেদ খান বলেন, সরকার সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী এবং শিক্ষকদের মধ্যে চলমান সংকটের কারনে একাডেমিক কার্যক্রম কার্যত থেমে আছে। একই সাথে মানসিক এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারন শিক্ষার্থীরা। যবিপ্রবিতে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব পক্ষকেই আন্তরিক হতে হবে। মহামান্য শিক্ষকবৃন্দের প্রতি অনুরোধ, ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপনারা ক্লাসে ফিরে আসুন।

সেশন জটের আশঙ্কায় পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম বলেন, প্রথমত করোনার সময় আমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেই ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এখন যদি আমাদেরকে আবার সেশনজটে পড়ত হয় তাহলে আমরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়বো এবং আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। একটি সুন্দর ক্যারিয়ার গঠনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে এই সেশনজট।

শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ সৈকত বলেন, ঘটনাটা যেদিন ঘটলো সেদিন শিক্ষকদের কোনো প্রতিক্রিয়া ছিলো না,তাদের টনক নড়লো কয়েকদিন পর। হ্যাঁ এটা ঠিক যে, তাদেরকে অসম্মানসূচক কাজ করা হয়েছে। কিন্তু গুটি কয়েক শিক্ষার্থীর কর্মকাণ্ডের জন্য সবাই কেন সেশনজটের সম্মুখীন হবে!আর বিচারটা কে করবেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনেও তো শিক্ষকরাই দায়িত্বে আছেন। দোষীদের যে তারা চেনেন না ব্যাপারটা এমনও না। বিশ্ববিদ্যালয়টা হয়ে গেছে স্বেচ্ছাচারিতায প্রদর্শনের ক্ষেত্র।মাঝখান দিয়ে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছে।শিক্ষক লাঞ্ছিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাচ্ছি এবং শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরার আহবান জানাচ্ছি।

এদিকে শিক্ষকদের চলমান কর্মসূচি বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো: গালিব জানান , অপমানের বিচার না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকগণ ক্লাসে ফিরবেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করুক যাতে আমরা ক্লাসে ফিরতে পারি।

এ বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনার সত্যতা যাচাই ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জন্য শিক্ষকদের সম্মতিক্রমে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত প্রতিবেদন পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে শিক্ষকদের জানানো হয়েছে। তবে অনলাইন ক্লাসের সময়সীমা শেষ হলেও শিক্ষকদের ক্লাসে না ফেরায় শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়বে। শিক্ষকদের কোনো কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্ষতি ও পিছিয়ে পড়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। শারীরিক অসুস্থতার দরুণ চিকিৎসা নিতে আমি আগামী ৯ আগষ্ট পর্যন্ত দেশের বাইরে অবস্থান করবো, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে শিক্ষকরা আগামী ৯ আগষ্ট পর্যন্ত ক্লাসে ফিরতে পারতেন। আমি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানাবো তারা যেন শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু পড়ার পরিবেশ ও সেশনজটের দিক বিবেচনায় তারা যেন ক্লাসে ফেরেন।

উল্লেখ্য, সরকারী প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জ্বালানী ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য চলতি বছরের ৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ডিন, চেয়ারম্যান ও দপ্তর প্রধানদের বৈঠকে ১০ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)। সিদ্ধান্তের পরকতিপয় শিক্ষার্থী জোরপূর্বক শিক্ষকদের পরিবহনের চাবি ছিনিয়ে নেওয়া ও লিফট বন্ধ করার অভিযোগে শিক্ষক সমিতির ঘোষিত কর্মসূচি ‘শিক্ষকদের অপমানের বিচার না হওয়া পর্যন্ত সকল একাডেমিক কার্যক্রম থেকে কর্মবিরতি’ চলছে। ১৮ জুলাই এ ঘটনার বিচার চেয়ে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। অভিযোগ পত্রে বলা হয় ১৬ই জুলাই এর ঘটনায় শিক্ষকরা চরমভাবে অপমানিত বোধ করেছেন।এ অপমান ও লাঞ্ছনার তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত সকল প্রকার একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন শিক্ষকরা।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.