প্রবল ইচ্ছা আর অদম্য জেদ থাকলে সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে হেলায় উড়িয়ে দেওয়া যায়, এমন দৃষ্টান্ত মাঝেমধ্যেই আমাদের আশপাশে দেখাতে পাওয়া যায়। সেই তালিকায় নতুন একটি সংযোজন ভারতের কেরলের বিনিশা। বিনিশা এখন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
বিনিশার বাবা দিনমজুরের কাজ করেন। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বাদাম ফেরি করে বেড়ান মা। ফলে ছোট থেকেই অভাবের সংসারে বেড়ে উঠেছে বিনিশারা। বিনিশারা দুই বোন। বিনিশা ছোট।
বাবা-মায়ের উপার্জনে সংসার কোনওরকমে চললেও, তাদের দুই বোনের পড়াশোনার খরচ চালাতে নাভিশ্বাস ওঠার মতো অবস্থা হয়। ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়েই বিনিশার বোনকে মাঝপথেই পড়াশোনা ছাড়তে হয়।
অর্থের অভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হচ্ছে বোনকে, এটা মেনে নিতে পারছিল না ছোট্ট বিনিশা। স্থির করেছিল, যেকরেই হোক সংসারের হাল ধরতেই হবে তাকে। ইতিমধ্যেই, বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল। ধারদেনা করেই সেই বিয়ের পর্ব মেটানো হয়। কিন্তু সেই ধারের বোঝা দিন দিন পাহাড়সম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। চিন্তায়, উদ্বেগে বিনিশার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পায়ে ব্যথার কারণে পাড়ায় পাড়ায় বাদাম বিক্রি করা বন্ধ হয়ে যায়।
ফলে এক দিকে দেনার বোঝা, অন্যদিকে এক জনের আয় কমে যাওয়া—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে। কিন্তু এই প্রতিকূলতার কাছে হার মানেনি বিনিশা। সংসারের বোঝা নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। মাকে রেহাই দিয়ে নিজেই বাদাম বিক্রি করা শুরু করে। পাশাপাশি চলছে পড়াশোনাও।
বিনিশা জানান, সকালে স্কুল যাওয়া, স্কুল থেকে ফিরে বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বাদাম বিক্রি করেন তিনি। তারপর বাড়ি ফিরে পড়াশোনা করেন। তিনি কখনোই চান না, দিদির মতো তারও পড়াশোনা মাঝপথেই বন্ধ হয়ে যাক। তাই তার এই অদম্য জেদ আর ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছে আর্থিক অনটন। সূত্র: আনন্দাবাজার
নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেই ঝালমুড়ি বেচেন: বিসিএসের পাশাপাশি বিদেশে পড়তে যাওয়ার বাসনা