বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি: নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির ফলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিউজ হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেন রাবির কেন্দ্রীয় ক্যাফেটারিয়া কর্তৃপক্ষ।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাতে একটি জরুরি নোটিশের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক এ কে এম আরিফুল ইসলাম খাবারের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন।
নোটিশে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মূল্যবৃদ্ধির নোটিশ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হলো। পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত পূর্বের মূল্যতালিকা অনুযায়ী খাবার সরবরাহ অব্যাহত থাকবে
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে গত ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়াসহ ১৭টি হলে প্রতিবেলায় খাবারের পূর্ব মূল্য থেকে ৪টাকা বাড়ানো হয়েছিল। ফলে দুপুরের খাবার ২৪টাকা থেকে ২৮টাকা ও রাতের খাবার ১৮ টাকা থেকে ২২টাকা করা হয়েছিল। দাম বাড়ানোর ফলে খাবারের মান বৃদ্ধি করা হবে বলা হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দাম বৃদ্ধির পরেও খাবারের কোন মান বৃদ্ধি করা হয়নি। পরিমাণটা সামান্য বেশি দিলেও আগের তুলনায় মানের কোনো বৃদ্ধি হয়নি। এ যেন শুভঙ্করের ফাঁকি।
দ্রব্যমূলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ফের সাধারণ মিলে ২টাকা ও অন্যান্য মিলে ৫টাকা বৃদ্ধির নোটিশ জারি করেছিলেন ক্যাফেটারিয়া কর্তৃপক্ষ। নতুন দাম এ মাসের ২০ তারিখ থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছিল। খাবারের মান না বাড়িয়ে এভাবে কয়েক দফা খাবারের দাম বাড়ানোর ফলে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। ক্ষোভের মূখে পড়ে দামবৃদ্ধির নোটিশ স্থগিত করেন ক্যাফেটেরিয়া কর্তৃপক্ষ।
দাম বৃদ্ধির ঘোষণা স্থগিত করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বকুল ইসলাম বলেন, দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করায় ক্যাফেটেরিয়া কর্তৃপক্ষকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কিছুদিন আগে খাবারের দাম বাড়িয়েছে এখন আবার দাম বাড়ালে শিক্ষার্থীদের উপর একধরনের চাপ সৃষ্টি হবে। আমরা অনেকেই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা। আমাদের জন্য বর্তমান দামই অনেক কষ্টসাধ্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাফেটেরিয়ার প্রশাসক ড. এ.কে.এম আরিফুল ইসলাম বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আমরা দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আগের মূল্যে খাবার বিক্রি করায় আমাদের কিছুদিন ধরে একরকম লোকসান হয়েছে। কিন্তু খাবারের দাম বাড়ানোর পর এটা শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে নেননি। তাঁদের অসুবিধা হবে, বিষয়টি মাথায় রেখে বর্ধিত মূল্যের নোটিশটি স্থগিত করেছি। শিক্ষার্থীরা আগের মূল্যেই ভালো খাবার পাবেন।
তিনি আরও বলেন, শুক্র ও শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হচ্ছে। এগুলোর খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পেলে ক্যাফেটেরিয়ার অল্প কিছু লাভ হয়। সেই লাভের অংশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভালো খাবার পরিবেশন করানো সম্ভব। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ ধরনের অনুষ্ঠানের অর্ডার পেলে ক্যাফেটেরেয়া আরও উন্নয়নের দিকে যাবে বলে আমি আশাবাদী।
রাবি কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় ফের খাবারের দাম বৃদ্ধিঃ শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ