শিশির আসাদ তরুণ উদ্যোক্তা এবং দ্য ফিউচার বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। সম্প্রতি দ্য রাইজিং ক্যাম্পাসের সাথে আলাপে কথা বলেছেন দেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ, তার উদ্যোগ এবং শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন দ্য রাইজিং ক্যাম্পাস প্রতিবেদক সাদিয়া রাহমান।
সাক্ষাৎকারটি দ্য রাইজিং ক্যাম্পাস পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
দ্য রাইজিং ক্যাম্পাস: বেকারত্ব দূরীকরণে আপনি কি উদ্যোগ নিচ্ছেন?
শিশির আসাদ: বেকারত্ব দূরীকরণে আমাদের কাজ করার সুযোগ নাই। আমরা পড়ালেখা জায়গাটাতে কাজ করছি। ক্লাস ১ থেকে ১২ এর শিক্ষার্থীদের আমার সংগঠন পড়ায়। পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাসামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করে। আমরা মূলত বিভিন্ন সেশনের মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদ গঠনে কাজ করছি।
দ্য রাইজিং ক্যাম্পাস: শিক্ষা-ব্যবস্থার কোন সীমাবদ্ধতার কারণে আপনার এই উদ্যোগ?
শিশির আসাদ: আমি সীমাবদ্ধতার কথা বলবোনা। শিক্ষা ব্যবস্থার কথা চিন্তা করে এই কাজটি করিনি৷ অনেক শিক্ষার্থী দরিদ্রতার কারণে ঝরে পড়ছে। আমরা মূলত তাদের সাহায্য করার জন্য এবং ঢাকার বাইরে যারা আছে তারাতো ঢাকায় আসতে পারছেনা তাদের সাহায্যের জন্য এটা করেছি। অর্থনৈতিক বাধা এবং ভৌগোলিক বাধা এই দুটো সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ শুরু হয়। কিভাবে ফ্রি একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যায় সেই চেষ্টাই ছিল। যেহেতু অনলাইন ফ্রি সেহেতু অর্থনৈতিক বাধাও নেই, তাই দূর দূরান্তের সবাই সেবা গ্রহণ করতে পারছে।
দ্য রাইজিং ক্যাম্পাস: যুবকদের জন্য যে বাজেট ঘোষণা করা হয় ওটাতে আপনি কি ধরনের ঘাটতি দেখেন? যেটা বেকারত্বের মূল কারণ।
শিশির আসাদ: বাজেট থেকে কথা বলতে গেলে অনেক বেশি কিছু বলতে হবে। যেহেতু সময় কম সেহেতু ছোট করে বলছি। বাংলাদেশে ৪০ লাখ বেকার আছে। প্রতিবছর প্রায় ৭ লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে। এতো চাকরিতো আসলে দেওয়া সম্ভব না। অনেক ইন্ডাস্ট্রি এখনো উন্নতি করা বাকি৷ আমাদের দেশে যে স্কিলসেটগুলো দরকার একুশ শতকের স্কিলসেট যেগুলোকে বলে: সমস্যা সমাধান, ক্রিটিকাল থিংকিং, টিম ওয়ার্ক, ক্রিয়েটিভিটি এগুলো মানুষকে হেল্প করে বেকারত্ব থেকে যেনো বের হতে পারে। ২০২৩ সালে যে কাজগুলো আমাদের সামনে আসবে সেগুলো আমাদের এখানের তরুণেরা অভ্যস্ত না। এখন যারা ভার্সটি পড়ছে তারা বের হয়ে যখন কাজে যাবে তখন তারা দেখবে এক তৃতীয়াংশ কাজ তারা দেখে অবাক হবে যে এরকম কাজ তারা আগে কখনো করেনি৷ সুতরাং এটি সমাধানের জন্য আমি যেগুলো বলেছি সেগুলোর প্রতি জোর দিলে ঘাটতি সমাধান হবে৷
দ্য রাইজিং ক্যাম্পাস: পড়াশুনা শেষে কি করবো, এই প্রশ্নের সমাধান কি?
শিশির আসাদ: যখন কেউ অনার্স ফোর্থ ইয়ার বা মাস্টার্স করছে তারা এই সময়টাতে অনেকটা নার্ভাস থাকে। আমি নিজেও নার্ভাস ছিলাম৷ আমাদের পড়ালেখা শেখানো হয় কিন্তু কোন কাজে কি আছে,কোন কাজে গেলে কি করতে হবে সেটা শেখানো হয় না। কারো যদি উদ্যোক্তা হওয়ার শখ থাকে তাহলে যত আগে শুরু করতে পারে তত ভাল৷ কারো যদি বিসিএস দেওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে একটু আগে প্রস্তুতি নেওয়া ভাল৷
দ্য রাইজিং ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাতে অনেকে হয়তো আসন পাচ্ছে না। এদের জন্য কি বলবেন?
শিশির আসাদ: ১২ লাখ প্রায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী। পাশ করেছে নয় লাখ। ফেলের মাত্রা অনেক বেড়েছে। যারা পাশ করে বেরুচ্ছে তারা চায় যে একটা সিট তার জন্য হোক৷ কিন্তু এতোগুলো সিটতো নেই। তাই এখন যারা আসন পাচ্ছে না তাদের জন্য বলতে চাই এতবেশি পরীক্ষার্থী কিন্তু আসন কম। এটির সমাধান দ্রুত সমাধান সম্ভব না। নিজেকে যতটা আগে থেকে প্রস্তুত করা যায়, যতটুকু মানসিকভাবে প্রস্তুত করা যায় তাতেই ভাল। আমাদের দেশে এডভান্স মেন্টাল কাউন্সেলিং এর বড্ড অভাব।