রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হলের ছাদ থেকে পড়ে গতকাল রাতে শাহরিয়ার হাসান নামের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। তবে এটা দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যা তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল। সুষ্ঠু তদন্তের দাবি শিক্ষার্থীদের।
এই বিষয়ে শাহরিয়ারের খুব কাছের বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, মৃত্যু মানুষের হাতে না। কিন্তু সেটার কারণ জানাটা অতি জরুরি। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী হঠাৎই আশ্চার্যজনকভাবে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক মৃত্যুর কাতারে পড়ে না। সে অসুস্থও ছিলো না। আমাদের কাছে এটা আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনা বলে মনে হচ্ছে না। কোন ষড়যন্ত্রের শিকার কিনা, তার সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য প্রশাসনের কাছে আমরা দাবি জানাচ্ছি।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী এম. হাসান হিমেল বলেন, শাহরিয়ার যখন কলের শানের উপরে পড়েছিল। তখন জোরে শব্দ হয়েছিল। পাশেই আমার রুম ছিল। জানালা দিয়ে দেখেছি পা উপুড় ছিল, প্রথমে মাথাটাই নিচে লাগতে দেখি। ৪ তলায় কিছু ছেলে ছিল তারা পড়ে গেছে বলে চিৎকার করতেছিল। তার কাছে কোনো মোবাইল ছিল না, ঘটনাস্থলেও পাওয়া যায়নি। মুখের সামনের পার্ট দাত নাক দিয়ে রক্ত, পিছনের পার্ট থেকে নাকি তেমন রক্ত পড়েনি। কীভাবে পড়েছে বা পড়তে পারে মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া সঠিক বলা যাচ্ছে না। সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাটি হৃদয়বিদারক! প্রতিটি ফ্লোরে উঁচু রেলিং আছে। নরমালি পড়ার সুযোগ নেই। যদি রেলিং এ পা তুলে বসে থাকে তাহলেই অসাবধানতাবশত পড়তে পারে। আর যদি তা না হয় তবে পরিকল্পিত হত্যাও হতে পারে। এটার তদন্ত হওয়াটা অতি জরুরি। তাহলেই আসল ঘটনাটা সবার সামনে আসবে। না হলে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়, দুর্ঘটনা নাকি হত্যা?
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, যেহেতু তার পাশে কেউ ছিলনা সেহেতু সে কীভাবে পড়ে গিয়েছে এটা জানা যায়নি। আমাদের কাছে এমন কোনো আলামত আসেনি যা দেখে আমরা বলবো যে এটা পরিকল্পিত হত্যা। তবে তার আত্মীয়স্বজন বা সহপাঠীরা যদি তদন্তের জন্য দাবি জানায় তাহলে আমরা অবশ্যই এটা নিয়ে তদন্ত করব।
উল্লেখ্য, বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হলের উপরতলা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার ৮নং ওয়ার্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মারুফ হোসেন মিশন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
২০ অক্টোবর, ২০২২
০১৪০০৪৭১৭৮১