The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের সন্তানেরাই পড়ে অন্য বিদ্যালয়ে

রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনের শেরেবাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে কোনো টাকা লাগে না। মাসিক বেতনও নেই। বিদ্যালয়ের বড় একটি খেলার মাঠ আছে। ১৭ জন শিক্ষক রয়েছেন, যাঁরা সরকারের বেতনভুক্ত।

এত সব সুবিধার পরও এ বিদ্যালয়েরই সহকারী শিক্ষক আসাদুজ্জামানের সন্তান পড়ছে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের প্রাথমিক পর্যায়ে, যেখানে বছরে ব্যয় ৩০ হাজার টাকার মতো। কেন নিজে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন, সেখানে সন্তানকে পড়ান না জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক পর্যায় শেষ করে মাধ্যমিকে ভর্তি করতে অনেক ঝক্কি পোহাতে হয়। এ কারণেই তিনি ছেলেকে বেসরকারিতে ভর্তি করেছেন, যেখানে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ানো হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিরপুরের শেরেবাংলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট চার জন শিক্ষকের সন্তান পড়ে আশপাশের বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বাকিদের প্রাথমিক বিদ্যালয়পড়ুয়া সন্তান নেই। শিক্ষকেরা বলছেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পরিবেশ ভালো নয়। মান নিয়ে তাঁদেরই অসন্তোষ রয়েছে। এ কারণেই তাঁদের সন্তান বেসরকারিতে পড়ে।

ঢাকা মহানগরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা, পরিবেশ, সংকট—এসব নিয়ে জানতে গত আড়াই মাসে এই প্রতিবেদক একাধিকবার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেছেন। দেখা গেছে, একেক প্রতিষ্ঠান একেক সমস্যায় রয়েছে। কোথাও শ্রেণিকক্ষের সংকট, কোথাও মাঠ দখল, কোথাও জনবলের ঘাটতি। তবে সব ক্ষেত্রেই সাধারণ যে চিত্রটি দেখা গেছে, একান্ত বাধ্য না হলে কেউ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানদের ভর্তি করেন না। এমনকি শিক্ষকেরাও নন। ৭টি বিদ্যালয়ে এমন শিক্ষক পাওয়া গেছে, যাঁদের ১৪টি শিশুসন্তান প্রাথমিকে পড়ছে। তবে সরকারিতে পড়ছে মাত্র দুটি।

ঢাকার মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক পড়ুয়ার বলেন, ভ্যানগাড়ি চালিয়ে তাঁর স্বামীর যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসারই ভালোভাবে চলে না। সামর্থ্য থাকলে মেয়েকে কিন্ডারগার্টেন বা ভালো স্কুলে দিতেন তিনি।

বনফুলের পাশে আস্তাকুঁড়
ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের তথ্য বলছে, এই মহানগরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৩৪২টি। তার একটি মিরপুর পল্লবীর বনফুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গিয়ে দেখা যায়, মাঝারি আকারের একটি মাঠসহ টিনের ছাউনির একটি ভবনে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। তবে পাশেই স্থানীয়রা আবর্জনা ফেলতে ফেলতে একটি আস্তাকুঁড় তৈরি করেছেন। দুর্গন্ধের মধ্যে চলে পাঠদান।

শিক্ষকেরা জানান, এই বিদ্যালয়ে কয়েক বছর আগেই প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী ছিল। সর্বশেষ তা নেমেছে প্রায় ১২০ জনে। শিক্ষক রয়েছেন ৫ জন। প্রধান শিক্ষক মাজেদা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ভালো পরিবেশের অভাবে অনেকেই চলে গেছে। যারা আছে, তাদের অর্ধেক ক্লাসে আসে না।

বাংলাবাজারের বিদ্যালয়টি বন্ধ
বাংলাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরান ঢাকার ৬৩ প্যারিদাস রোড ঠিকানায় অবস্থিত। এটি ১৯৭৩ সালে সরকারি হয়। তবে এখন দেখে বোঝার উপায় নেই সেটি একটি বিদ্যালয়। নেই কোনো নামফলক। স্থানীয়রা জানান, ২০১৯ সালের ৩ মার্চ এ বিদ্যালয়ের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে। সেই থেকে বন্ধ রয়েছে। তখন ৩০ শিক্ষার্থী ও ৪ জন শিক্ষক ছিলেন।

বিদ্যালয় ভবনে ঢুকে দেখা যায়, দুটি কক্ষে কিছু চেয়ার-টেবিল এলোমেলো পড়ে আছে। চারদিকে নোংরা। দেয়ালে জমেছে শেওলা। দুজন শিক্ষক রয়েছেন। তবে তাঁদের পড়াতে হয় না। এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাদিয়া মৌ বলেন, প্রধান শিক্ষক শাহনাজ পারভীন এবং তিনি এখনো এই প্রতিষ্ঠানেই আছেন। শিক্ষকদের বাকি দুজন অন্য প্রতিষ্ঠানে প্রেষণে পাঠদান করছেন।

মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৪০০। শিক্ষক আছেন ২৩ জন। শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, সেখানে কোনো দপ্তরি, নিরাপত্তা প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী নেই। জানালার গ্রিল কেটে প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটে। করোনার ছুটি চলাকালে প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও সিসিটিভি ক্যামেরা চুরি হয়েছে। রাতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নূর জাহান হামিদা বলেন, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, নিচু পদের চাকরিজীবী, দোকানদার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সন্তানেরা এ বিদ্যালয়ে পড়ে। ধনী পরিবারের কিছু সন্তানকে বছরের শুরুতে এই বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। এটা মূলত আশপাশের কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর সুযোগ তৈরি করতে। তিনি বলেন, তাঁদের শিক্ষক দরকার। পাশাপাশি অন্তত শৌচাগারগুলো পরিষ্কার রাখতে কর্মী দরকার।

চম্পা-পারুলের মাঠে বহুতল ভবন
মিরপুর ২ নম্বর সেকশনের চম্পা-পারুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭৪ সালে স্থাপিত। শিক্ষকেরা জানান, এর মোট জমি ছিল সাড়ে ১১ কাঠা। বর্তমানে বিদ্যালয় ভবনটি আছে চার কাঠা জমির ওপর। খেলার মাঠটি বেদখল। বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক সুরাইয়া মজুমদার বলেন, মাঠ দখল হয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারে না। জমি দখল নিয়ে দুটি মামলা হয়েছে। তবে সুরাহা হয়নি। দখলদারেরা মাঠে ভবন নির্মাণ করে বসবাস করছেন।

শিক্ষকেরা আরও জানান, সেখানে কাগজে-কলমে ২০০ জনের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। তবে উপস্থিতি থাকে ৪০ শতাংশের কম। শিক্ষক সুরাইয়া মজুমদার আরও বলেন, মানুষের ধারণা, বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন ও স্কুলগুলোতে পড়াশোনা ভালো হয়। তাই অভিভাবকেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানদের ভর্তি করাতে চান না। দপ্তরি বা আয়া না থাকায় শিক্ষকদেরই সব কাজ করতে হয়। নিরাপত্তা প্রহরী না থাকায় প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটে।

এক ভবনে দুই বিদ্যালয়
পুরান ঢাকার সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের নিচতলা ও চতুর্থতলায় চলে রমনা রেলওয়ে উচ্চবিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ফলে জায়গার অভাবে প্রায়ই ক্লাস নিতে সমস্যা হয় বলে জানান শিক্ষকেরা।

সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৪৩ শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষকের পদ ১৬টি। তবে কর্মরত ১৩ জন। নিয়মিত থাকেন ১০ থেকে ১১ জন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ইশরাত জাহান বলেন, করোনাকালের আগে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার ছিল ৮৫ শতাংশ। পরে তা কমে হয়েছে ৬০ শতাংশ। যেসব শিক্ষার্থী আর বিদ্যালয়ে ফিরছে না, তাদের ফেরানোর আর সুযোগ নেই।

বিদ্যালয়টির একটি বড় মাঠ আছে। তবে তাতে বেশির ভাগ সময় ব্যক্তিগত গাড়ি, পিকআপ ও রিকশা-ভ্যান রাখা থাকে। এ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিদ্যালয়ের নিচতলার হলরুমে প্রায়ই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যাতে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হয়।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, রমনা রেলওয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু ১৯৭৫ সালে রাজধানীর ওসমানী উদ্যানে। তবে সেখানে উদ্যান প্রকল্প হওয়ায় বিদ্যালয়টি সরিয়ে নেওয়া হয়। ১৯৮৯ সাল থেকে এটি ঢাকার সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে পরিচালিত হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তালিকায় এই প্রতিষ্ঠানের নাম আছে। তবে শিক্ষকেরা বলছেন, এটি এখন বেসরকারি বিদ্যালয়।

‘পড়ার পরিবেশ নেই’
ঢাকার ধানমন্ডি ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩১০ শিক্ষার্থী ও ১৪ শিক্ষক রয়েছেন। বিদ্যালয়ের জমিতেই বসানো হয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানি উত্তোলনের পাম্প। তবে সমস্যা বিদ্যালয়টির পরিবেশ নিয়ে। শিক্ষকদের অভিযোগ, বহিরাগতদের উৎপাতে সেখানে পড়াশোনার পরিবেশ নেই।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ফাহিমা সুলতানা বলেন, যখন-তখন বহিরাগতরা বিদ্যালয়ের ভেতরে এসে ঘোরাঘুরি করে। আগে এই বিদ্যালয় থেকে দুই থেকে তিন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেত। এখন ভালো শিক্ষার্থী এখানে ভর্তি হতে চায় না।

এ বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণিকক্ষ ও একটি প্রশাসনিক কক্ষে ধানমন্ডি ল কলেজের কার্যক্রম চলে।

ঐতিহ্যবাহী, তবে ম্রিয়মাণ
খিলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯২৮ সালে স্থাপিত। এটি ওই এলাকার পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি। তবে বিদ্যালয়টি শিক্ষার দিক দিয়ে এখন ম্রিয়মাণ বলে জানান স্থানীয় ব্যক্তিরা। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ৩০০ জনের মতো। শিক্ষক রয়েছেন ৮ জন।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নাসরীন সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয়ে কোনো নিরাপত্তাকর্মী ও দপ্তরি নেই। একজন আয়া দিয়েই সব কাজ করানো হয়। জনবল চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে কোনো সাড়া মেলেনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বেশির ভাগ মানুষ সন্তানদের বেসরকারি ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল, শহীদ বাবুল একাডেমি, ফয়জুর রহমান আইডিয়াল ইনস্টিটিউট, সাউথ পয়েন্ট স্কুলের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করান। একসময় খিলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই পড়াশোনার মান অনেক ভালো ছিল। এত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল না।

তারা পড়ে বেসরকারিতে
ঢাকার খিলগাঁও গভ. কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের সন্তানদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে। তবে এখন সরকারি কর্মচারীদের সন্তানেরা সেখানে পড়ে না। তারা ভর্তি হয় আশপাশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

খিলগাঁও গভ. কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী প্রায় ৬০০। শিক্ষক ১৪ জন। প্রধান শিক্ষক খালেদা আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বিদ্যালয়ে পড়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হকার ও অন্যান্য পেশার নিম্ন আয়ের মানুষের সন্তানেরা।

একাংশ ফেরেনি
ঢাকার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি সাধারণ চিত্র ছিল, করোনাকালে এই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ আর বিদ্যালয়ে ফেরেনি। করোনাকালে দীর্ঘ ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর গত ১২ সেপ্টেম্বর দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলে। সেদিন রাজধানীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার ছিল ৬২ শতাংশ। ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর এ হার ছিল ৬৮ শতাংশ।

ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌসী প্রথম আলোকে বলেন, মহানগরীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মূল সমস্যা হলো এসব বিদ্যালয়ে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের সন্তানেরা পড়ালেখা করে। গেল বছর করোনাভাইরাসের প্রকোপে এসব অভিভাবকের অনেকেই কাজ হারিয়ে শহর ছেড়ে চলে গেছেন। একটা অংশ কাজে যোগ দিয়েছেন।

যা বলছেন বিশেষজ্ঞ ও অভিভাবকেরা
রাজধানীতে অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, যেগুলো ভবনের দু-তিনটি তলা ভাড়া নিয়ে গড়ে উঠেছে। কোনো কোনো কিন্ডারগার্টেনে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয় সামান্য। মাঠ নেই। তবু বাড়তি ব্যয় করে সেখানে শিক্ষার্থী ভর্তি করান অভিভাবকেরা। বিপরীতে নিজস্ব ভবন, মাঠ ও সরকারি বেতন পাওয়া শিক্ষক থাকার পরও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সন্তানদের ভর্তি করাতে আগ্রহ নেই নিম্নমধ্যবিত্তের পরিবারগুলোতেও। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারি বিদ্যালয়ে ঘাটতি ব্যবস্থাপনায় ও সরকারের নজরদারিতে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রাক্-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, ভালো পড়াশোনা, ভালো ফল, ভালো পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের বিশেষ যত্ন নিলেই অভিভাবকদের বিশ্বাস ও আস্থা ফিরবে।

অভিভাবকেরা বলছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের পড়াতে ব্যয় অনেক বেশি। সংসারে চাপ পড়ে। তবু সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই তাঁরা ‘ভালো স্কুলে’ ভর্তি করান। ঢাকার মিরপুরের সালমা ইসলাম বলেন, তাঁর প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া সন্তানকে ভর্তি করাতে ২১ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। মাসে বেতন দুই হাজার টাকা। এর বাইরে নানা ছুতোয় বেসরকারি স্কুলগুলো টাকা নেয়। তিনি বলেন, ‘আমি সন্তানকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিতে চাই। তবে পরিবেশ ও শিক্ষার মান ভালো করা দরকার।’ এই অভিভাবক আরও বলেন, ‘সেদিন খবরে দেখলাম দিল্লির সরকারি বিদ্যালয়গুলো বদলে গেছে। দেশেও সেই উদ্যোগ দরকার।’

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.