আড়াই বছর পর ডিসি সম্মেলন শুরু হচ্ছে আজ। মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ডিসি সম্মেলনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সোমবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে সম্মেলনে অতিথিদের কম দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১৫ জন মন্ত্রী ও ১৫ জন সচিবকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। কার্য অধিবেশনগুলোতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিব মঞ্চে বসবেন, ডিসিরা গ্যালারিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ আড়াই বছর পর জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সম্মেলন হচ্ছে। বছরের শুরুতেই ১১, ১২ ও ১৩ জানুয়ারি ডিসি সম্মেলনের তারিখ নির্ধারিত হলেও পরে তা পেছানো হয়েছে। নির্দিষ্ট করা হয়েছে ১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি (মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার) ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এবারের সম্মেলনে দেশের ৬৪ জেলার ডিসি ও ৮ বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিলেও ৫ জেলার ডিসি ও ২ বিভাগের বিভাগীয় বিভাগীয় কমিশনার এবারের এই সম্মেলনে অংশ নিতে পারছেন না। তারা কোভিড আক্রান্ত।
তিনি বলেন, ‘এবার সম্মেলনে মোট ২৫টি অধিবেশন হবে। এরমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য অধিবেশন ২১টি। এছাড়া একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, রাষ্ট্রপতির দিকনির্দেশনা গ্রহণ নিয়ে একটি, স্পিকারের শুভেচ্ছা বক্তব্য নিয়ে একটি ও প্রধান বিচারপতির শুভেচ্ছা বক্তব্য নিয়ে একটি অধিবেশন হবে।
খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, ‘সম্মেলনে মোট ৫৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অংশগ্রহণ করবে। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।
ডিসি সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়গুলো তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, কোভিড ম্যানেজমেন্ট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম জোরদার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন, স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসৃজন ও দারিদ্র্যবিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আরো ব্যবহার ও ই-গভার্ন্যান্স আরো নিশ্চিত করা, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্হ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণরোধ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন। এ বিষয়গুলোই মূলত আলোচনায় আসবে।
এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ২৬৩টি প্রস্তাব পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পাওয়া গেছে ভূমি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত। এ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রস্তাব ১৮টি। এরপর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় (১৬টি প্রস্তাব) ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত (১৫টি) প্রস্তাব বেশি পাওয়া গেছে।’
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির আগে সর্বশেষ ডিসি সম্মেলন হয়েছিল ২০১৯ সালে। সে সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ছিল ৭৫ শতাংশ।