ববি প্রতিনিধি: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) মতিউর রহমান নামে দৈনিক মজুরিভিত্তিক এক কর্মচারীর বিরূদ্ধে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম রানাকে তার কক্ষে প্রবেশ করে জুতা পেটা করার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টায় শহিদুল ইসলাম রানা নামে এক কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর অফিস চলাকালীন সময় তার কক্ষে প্রবেশ করে দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারী কর্তৃক অসদাচরণ ও গায়ে হাত তোলার সুষ্ঠ বিচারের আবেদন প্রসঙ্গে একটি অভিযোগ পত্র জমা দেন।
অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, অদ্য ০৪/০২/২০২৫ইং তারিখ অফিস চলাকালীন আনুমানিক ১২:৩০ ঘটিকায় দৈনিক মজুরী ভিত্তিতে নিয়োজিত জনাব মতিউর রহমান আমাদের অফিস কক্ষের জনাব মোঃ মাহবুব আলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তার টেবিলের সামনে বসা অবস্থায় আমাকে অশালীন ভাষায় কথোপকথন ও শারীরিক লাঞ্জনার শিকার হই। তিনি কোন কথা বলার আগেই তার পায়ের জুতা খুলে আমাকে বেশ কয়েকবার আঘাত করে দ্রুত কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। একজন অফিসারের রুমে এসে এমন জঘন্য কাজ করতে পারে কিনা তা আমার বোধগম্য নয়। পরবর্তীতে আমার অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) তাকে ডাকা সত্ত্বেও সে তার সাথে দেখা না করে চলে যায়। উল্লেখ্য যে, উক্ত ঘটনার সময় আমাদের অফিস রুমের সহকর্মীগণ যথা জনাব মো: মাহবুব আলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনাব শাহিদা বেগম, অফিস সহ: কাম: কম্পিউটার অপারেটার, জনাব অমিত কুমার, একাউন্ট এসিস্ট্যান্ট, জনাব মো: নাসির উদ্দীন, অফিস সহায়ক উপস্থিত ছিল।
জানা যায়, মতিউর রহমানের সাথে শহিদুল ইসলামের টাকার লেনদেন নিয়ে দীর্ঘদিন ঝামেলা চলছে। এছাড়াও প্রতারণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কমকর্তা কর্মচারীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শহিদুল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে বলেও জানা যায়। এসব অভিযোগের কারনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শহিদুল ইসলাম রানার আপগ্রেডেশনও আটকে রেখেছেন।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত কর্মচারী (দৈনিক মজুরিভিত্তিক) মতিউর রহমান বলেন, রানা আমার কাছে থেকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ৩২ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে। আমি টাকা পামু। টাকা তো দেয়ই না আবার আমার নামে থানায় জিডি করছে। আমি তারে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করায় বলে আপনিও আমার নামে ডিজি করেন। দীর্ঘদিন পাওনা টাকা নিয়ে তালবাহানা করতেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম রানা বলেন, মতিউর আমাকে কয়েকদিন আগে হুমকি দিছে। সে আমার কাছে চাঁদা দাবি করছে। আমি তার বিরূদ্ধে এ নিয়ে মামলা করেছি। আজকে অফিসে এসে আমাকে বলে আমি কেনো মামলা করেছি। এ বলেই আমাকে সে জুতা পেটা শুরু করে।টাকার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তাকে প্রমান দেখাতে বলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার নাদিম মল্লিক বলেন, একজন কর্মকর্তাকে একজন কর্মচারী তার অফিসে গিয়ে এভাবে জুতা পেটা করা কোন ধরনের নিয়মের মধ্যে পড়ে আমার জানা নেই। একজন কর্মকর্তা হিসেবে আমি খুবই লজ্জিত। আমি এর যথাযথ বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি ইতোমধ্যে অভিযোগ পেয়েছি। তার উপর ভিত্তি করে আমি মাননীয় উপাচার্যের সাথে কথা বলেছি। তিনি তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত কর্মচারীকে ক্যাম্পাস ত্যাগের নির্দেশনা প্রদান করেছেন ৷ উপাচার্য মহোদয় অসুস্থ। তিনি ক্যাম্পাসে ফিরলেই এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন।