বেরোবি প্রতিনিধি: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ১০৮ তম সিন্ডিকেটে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করার পরও ক্যাম্পাসের ভিতরে বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তাদের দলীয় কর্মসূচির পোস্টার লাগিয়েছে।
বুধবার ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগিয়েছে।
গত সোমবার (২৮ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় লেজুরবৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়। উক্ত দিনে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে ব্রিফ করেন।
কিন্তু তারপরেও ছাত্রদল প্রকাশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায় তাদের পোস্টারের লাগিয়েছে। এর ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসবের বিপরীত প্রতিক্রিয়া জানায়।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সঞ্জয় রায় বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী রাজনীতি খেলার পুতুল হিসেবে অনেক বর্তমানে খোলস মুক্ত কিছু রাজনৈতিক দল এখনো সরব।আমরা চেয়েছিলাম রাজনীতি মুক্ত করে, ক্যাম্পাসের পরিবেশ ভ্রাতৃপ্রেমী করার জন্য আন্দোলন করে শতশত প্রাণ বলি দান দিয়েছে।আমরা চাই না বারংবার অশ্রুসিক্ত এমন পরিস্থিতি আসুক। সাধারণ শিক্ষার্থী হয়ে রাজনীতির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘রাজনীতির দোসররা হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান দিয়ে হুশিয়ার করতেছি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইতিহাস ও প্রত্নতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী গোলাম রহমান শাওন বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মহল পুনরায় রাজনীতি চালুর চেষ্টা যেখানে এই অপরাজনীতির ফলে আমাদের ভাই আবু সাঈদ কে হারিয়েছি । অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে । যেখানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীর চাওয়া ও গণস্বাক্ষরের ভিওিতে সিন্ডিকেট মিটিয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে । ছাত্র সংসদ খুব দ্রুত চালু হওয়ার প্রসেস চলমান । এজন্য সাধারন শিক্ষার্থী আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরন করেছে । যেহেতু দলীয় লেজুড় ভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ তাই যারা ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক পোষ্টার লাগিয়েছে । তারা অপরাধ করেছে । তাই যারা পোস্টার লাগিয়েছে, দ্রুত শাস্তির আওয়াত আনতে হবে।
এ বিষয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন,এটা ছাত্রদলের পোস্টার না, এটা বিপ্লব ও সংহতি দিবসের পোস্টার।আমাদের সংগঠনের ১৪ টা উইংস আছে এর মধ্যে ছাত্রদল, যুবদল সহ সকলে এই কর্মসূচি পালন করবে। এটা কেন্দ্র থেকে দেওয়া।এই দিবস আগে জাতীয় দিবস ছিলো।আওয়ামীলীগ এই দিবস বন্ধ ঘোষণা করেছে। জিয়াউর রহমান কে আবার স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অন্তবর্তীকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় পরও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নামে পোস্টার লাগানোর বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি আরও বলেন, এখানে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে মিছিল ও শোডাউন, শ্লোগান কিছুই হয়নি। এটা শুধু এখানে না, সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্কুল, কলেজ, মাদরাসাতে লাগানো হচ্ছে। এটা কেন্দ্র থেকে দেওয়া।তাই এটাতে আমি মনে হয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি দেখতেছি না। এখানে প্রশাসনের কোনো মাথা ব্যথা দেখতেছি না। প্রশাসন অনুমতি নিয়েছেন কি না এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, প্রশাসনের সাথে প্রাথমিক কথা বলেছি কিন্তু তারা কোনো সিদ্ধান্ত জানায় নি। তবে প্রশাসন বলেছে সারাদেশে যদি লাগায় তাহলে দেখেন আপনারা কি করবেন।প্রশাসনের কোন লোক বলেছে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয় টা এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.শওকাত আলী বলেন,আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না।পোস্টারের বিষয় টা দেখার জন্য প্রক্টরের সাথে এখনি কথা বলতেছি।