The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪

উন্নয়ন বরাদ্দে বৈষম্যমুক্ত হবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়: উপদেষ্টা নাহিদ

বেরোবি প্রতিনিধিঃ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে। সুতরাং উন্নয়ন বরাদ্দে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আর বৈষম্যের শিকার হবে না। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান এখনো শেষ হয়নি, এর বিপ্লব ঘটাতে হবে। আমরা বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা চাই।
আজ শনিবার (১২ অক্টোবর, ২০২৪) বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।

গত দুই মাসে সরকারের প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমি মন্ত্রীত্ব উপভোগ করতে আসিনি। যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন করতে না পারলে কিংবা গণঅভ্যুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে না পারলে, আবার জনতার কাতারে দাঁড়াবো। গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করতে তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।

তিনি আরও বলেন, দেশের সকল আন্দোলন সংগ্রামে শিক্ষার্থীরা রক্ত দিলেও তারা পরবর্তীতে এর সুফল পায়নি। শিক্ষার্থীরা ইতোপূর্বে দাসত্বের জীবন পেয়েছে। আমরা আর দাসত্বের জীবনে ফিরে যেতে চাই না। সারাদেশে ফ্যাসিস্ট কাঠামো ভেঙ্গে দিতে হবে। লেজুড়বৃত্তির  ছাত্র রাজনীতির পরিবর্তে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিদ্রুত ছাত্র সংসদ চালু করা হবে।

নাহিদ ইসলাম তাঁর বক্তব্যে শহীদ আবু সাঈদকে সহযোদ্ধা উল্লেখ করে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সেই সময়ের স্মৃতি চারণ করেন এবং শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এবং বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে প্রথম শহীদ বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদের পিতা মোঃ মকবুল হোসেন।

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, বিগত সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়নের খেসারত দিচ্ছে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। নতুন বাংলাদেশে নতুন নেতৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

শহীদ আবু সাঈদের পিতা মোঃ মকবুল হোসেন বলেন, শহীদ আবু সাঈদের হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি চাই। দ্রুত বিচার দেখতে চাই। শহীদ আবু সাঈদের নামে এক নম্বর গেটের নামকরণ এবং একটি আবাসিক হলের নামকরণ চাই।

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ শফিকুর রহমান, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন মোঃ ফেরদৌস রহমান, জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মোঃ এমদাদুল হক, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. ইলিয়াছ প্রামাণিক, ঢাবির মার্কেটিং বিভাগের প্রফেসর ড. এবিএম শহিদুল ইসলাম, কাউন্সিল শাখার অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মোঃ ময়নুল আজাদ, গণিত বিভাগের কর্মচারী রেজাউল করীম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক শিক্ষার্থী শামসুর রহমান সুমন, শিক্ষার্থী সাবিনা ইয়াসমিন এবং শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি এবং শিক্ষকদের মাঝে ইউজিসি প্রদত্ত গবেষণা প্রকল্পের চেক প্রদান করা হয়। গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনজন শিক্ষককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। তারা হলেন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু রেজা মোঃ তৌফিকুল ইসলাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ কামরুজ্জামান এবং ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ ফেরদৌস রহমান।

এর আগে অনুষ্ঠানে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রযোজনায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

উল্লেখ্য, দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে “ধন্য বেরোবি, গড়বো দেশ, আবু সাঈদের বাংলাদেশ” শ্লোগানকে ধারণ করে দিন ব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মোঃ নাহিদ ইসলাম এবং ইউজিসির পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলী। পরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অনুষ্ঠানের অন্যান্য অতিথিবৃন্দকে সাথে নিয়ে নাম ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী উপলক্ষে ক্যাম্পাসে বর্ণিল আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। বাদ্যের তালে তালে শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শুরু করে পার্কের মোড় প্রদক্ষিণ করে ক্যাম্পাসে ফিরে এসে শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ বর্ণিল এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

শোভাযাত্রা শেষে দিবসটি স্মরণীয় করে রাখতে অতিথিবৃন্দ বৃক্ষরোপণ করেন।

এছাড়া বিকেলে স্বাধীনতা স্মারক মাঠে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাদ আসর কেন্দ্রীয় মসজিদে দুআ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোকসজ্জ্বাসহ নানাভাবে সাজানো হয় ক্যাম্পাস।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.