রাবি প্রতিনিধি: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে গত ৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্য হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীবকে। তাঁর নিয়োগের একমাস হলেও এখনো দুই উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন ও শিক্ষা) নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর ৮ আগস্ট একযোগে পদত্যাগ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ৭৬জন উর্ধ্বতন প্রশাসক ও কর্মকর্তা। যার ফলে অচল হয়ে পড়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে দুই উপ-উপাচার্যের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন উপাচার্য একাই৷ সবকিছু সামাল দিতে অমানসিক চাপ পড়ছে তার উপর।
এর আগের প্রশাসনে এই দুই পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম (প্রশাসন) এবং হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, উপ-উপাচার্যের দু’টি পদ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদ। একজন উপাচার্যের পক্ষে তিনটি পদের কাজ করা অসম্ভব। আমরা চাই খুব দ্রুত আমাদের উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সৎ, দক্ষ, আদর্শ, যোগ্যতাসম্পন্ন, শিক্ষার্থী বান্ধব ও নিরপেক্ষ মানসিকতার উপ-উপাচার্য আমরা চাই। যারা কোন বিশেষ দলকে সুবিধা না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কাজ করবে।
জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার জানান, এমনিতেই প্রশাসনবিহীন প্রায় দেড় মাস বিশ্ববিদ্যালয় অচলাবস্থায় ছিল। তাই অনেক কাজ জমে ছিল। উপাচার্য দিনরাত কাজ করে এগুলো সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাই উপ-উপাচার্য না থাকায় উপাচার্যের উপর অনেক বেশি চাপ পড়ছে৷ আশা করছি খুব দ্রুত দুইজন উপ-উপাচার্য পেয়ে যাব। পদগুলো ফাঁকা থাকায় উপাচার্যই সব বিষয় দেখছেন। তিনি বিশ্রামের সময়ও পাচ্ছেন না। তবে আমাদের কোন কাজ থেমে নেই, দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা থাকায় উপাচার্যের উপর বেশি চাপ পড়ছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, গুরুত্বপূর্ণ দু’টি পদ ফাঁকা থাকায় সমস্যা হচ্ছেই। প্রচন্ড রকমের কাজের চাপ রয়েছে এবং সবকিছু সামলে উঠতে আমাদের দিনরাত একাকার হয়ে পরিশ্রম করতে হচ্ছে। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ পদে মানুষ থাকলে যেভাবে আমরা কাজগুলো করতে পারতাম সেভাবে করতে পারছি না। আমি কর্তৃপক্ষকে অনেকবার বলেছি যত দ্রুত সম্ভব এই পদগুলো পূর্ণ করে দিতে। এটা অনেক বেশি প্রয়োজন। এর কোন বিকল্প নেই। আমরা আশা করছি খুব তারাতাড়ি দুজন উপ-উপাচার্য পেয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো জায়গাতেই থেমে নেই এবং প্রত্যেকটা কাজ সঠিক সময়ে করার চেষ্টা করছি। উপ-উপাচার্যদ্বয় কবে আসবে সে জন্য আমরা আমাদের কর্মকাণ্ড স্থবির করিনি। আমরা পুরো দমে চালানোর চেষ্টা করছি। তবে তাদের অনুপস্থিতিতে অসুবিধা হচ্ছে। এইটা খুবই ডিফিকাল্ট একটা সিচুয়েশন। অমানবিক কাজের চাপ পড়ছে।
‘কেমন উপ-উপাচার্য তিনি চান’ জানতে চাইলে উপাচার্য আরও বলেন, আমার প্রত্যাশা খুব পরিষ্কার। তাদের অবশ্যই ন্যায়নিষ্ঠ হতে হবে এবং যোগ্যতা নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকবে না। তারা সবকিছুর উপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যান এবং অগ্রগতিকে প্রাধান্য দিবেন৷ অন্য কোন ধরনের কনসিডারেশন চাইবেন না। তারা শুধু দেখবে যে কিসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কল্যান হয়। আমি অত্যন্ত যোগ্য এবং ন্যায়পরায়ন মানুষকে উপ-উপাচার্য হিসেবে চাই।