বহুমুখী সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই বাংলাদেশের নতুন যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের অংশীদারত্ব চেয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার একটি হোটেলে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে ড. ইউনূস এসব কথা বলেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি এখানে আপনাদের কথা শুনতে এসেছি এবং আমাদের বিনিয়োগ পরিবেশ কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে আপনাদের পরামর্শ চাই। আমাদের এই নতুন যাত্রায় আপনাদের অংশীদারত্ব চাই।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের (ইউএসবিবিসি) অ্যাম্বাসেডর অতুল কেশাপ বক্তব্য দেন।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ শুধু ১৭ কোটি মানুষের বাজার নয়। এটি দ্রুত বিশ্বের শীর্ষ ১০টি ভোক্তা বাজারের একটি হিসেবে বিকশিত হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং চীনের ৩০০ কোটি মানুষের বাজার ধরার সম্ভাবনাময় জায়গায় রয়েছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফররত প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনো দেশই সমস্যামুক্ত নয়। বাংলাদেশও সমস্যামুক্ত নয়। তবে আমি একটি বিকাশমান বাংলাদেশ দেখি, যে দেশটি স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।’
ড. ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী নেতাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগী। একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের প্রধান রপ্তানির দেশ এবং আমাদের এফডিআইরও (সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ) শীর্ষ উৎস। কিন্তু বাণিজ্য অস্বাভাবিক রকমের কম।’
ড. ইউনূসের মতে, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ বিনিয়োগই হচ্ছে জ্বালানির মতো ঝুঁকিহীন কিংবা কম ঝুঁকিপূর্ণ খাতে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নীতির আওতায় সরবরাহব্যবস্থায় বৈচিত্র্য খুঁজছে, এই লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ কৌশলগভাবে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হওয়ার অবস্থানে রয়েছে।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসার বিকাশে সহায়তার জন্য সবকিছু করবেন, যেন তারা সরবরাহব্যবস্থায় বৈচিত্র্য আনতে পারে।