বাকৃবি প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) একটি আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক সামিনা লুৎফাকে আলোচক হিসেবে রাখাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় কেমন বাংলাদেশ চাই?’ শিরোনামের ওই আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফাকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সামিনা লুৎফাকে সমকামিতা সমর্থনকারী হিসেবে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন । এমতাবস্থায় তাকে সভার আলোচক হিসেবে দেখতে চান না বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই আলোচনাসভার পোস্টার প্রকাশ হওয়ার পরই প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আলোচক হিসেবে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিনের পাশাপাশি অধ্যাপক সামিনা লুৎফার নাম দেখে ক্ষিপ্ত হন তারা।
ইতোমধ্যেই ‘বাকৃবির আঙ্গিনায় সমকামীদের ঠাঁই নাই’ স্লোগান দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, সমাজ, সংস্কৃতি, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ নষ্ট করা যাদের লক্ষ্য তাদের স্থান বাকৃবিতে হবে না। বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তা চর্চার নামে সমকামী সমর্থনকারীদের এনে অনুষ্ঠান করা হবে, এটা বাকৃবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেনে নিবে না। অধ্যাপক লুৎফাকে বাদ দিয়ে সভা করলে সেখানে কেউ ই বাধা দিবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. মারুফ বিল্লাহ বলেন, সভার পোস্টার দেখার পরে আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারি যে অধ্যাপক সামিনা লুৎফা সমকামিতা সমর্থন করেন এবং প্রকাশ্যে সেটির প্রচারণাও করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এরকম একটি আলোচনা সভায় সকলের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিবর্গদেরই নিয়ে আসা উচিত। বিতর্কিত কাউকে আমরা চাই না। এ বিষয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা বরাবর সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি প্রদান করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা।
শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আলোচনা সভার সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজী শেখ ফরিদ বলেন, অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বাকৃবির একজন প্রাক্তন শিক্ষক। তাকে আমি ১৮ বছর ধরে চিনি। তিনি সর্বদাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও মানুষের অধিকার আদায়ের পক্ষে কাজ করেছেন। মানুষের কথা বলার অধিকারের জন্য তিনি কাজ করেছেন এবং নির্যাতিতও হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের হয়ত কোথাও ভুল হচ্ছে। আশা করছি, তারা অন্যের বাকস্বাধীনতা রক্ষায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে সচেতন হবে।