The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪

হল বন্ধ করতে চায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

চলমান করোনাভাইরাসের মধ্যে আবাসিক হল বন্ধ করতে চায় দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কারিগরি কমিটি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা না আসায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও অনলাইনে ক্লাসের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ইতোমধ্যে বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া হলে অবস্থানকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীও আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় দ্রুত আবাসিক হলগুলো বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনার এই ঊর্ধ্বগামীতার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে রাখতে চান না তারা। এতে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বড় ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। আবাসিক হলগুলোতে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীরা থাকেন। এতে একজন সংক্রমিত হলে অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় ঝুঁকি নিতে চান না তারা।

তারা বলছেন, করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশে নামার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখন সংক্রমণের হার প্রায় ১৫ শতাংশ। তবুও হল বন্ধের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও হলের বাহিরে অবস্থানের সময় তাদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত হচ্ছে না। এই অবস্থায় হলে থাকা তাদের জন্য নিরাপদ নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, করোনার কারণে আমাদের শিক্ষকরা এখন সশরীরে ক্লাস নিতে চাচ্ছেন না। আমরা অনলাইনে ক্লাস নিতে চাই। এছাড়া আবাসিক হলগুলোও বন্ধ করতে চাই। তবে কারিগরি পরামর্শক কমিটি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা না আসায় এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারছি না।

এদিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। এমনকি সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণও স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে অনলাইনে নিয়মিত পাঠদান চলছে।

জানতে চাইলে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, আমাদের আবাসিক হলে অবস্থানরত ২৪ শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের গাড়ি ভাড়া করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এদের কারণে অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা আবাসিক হল বন্ধের বিষয়টি জাতীয় বিষয়। এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয় আছে। তাদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেলে আমরা আবাসিক হল বন্ধ করে দেব।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে কারিগরি পরামর্শক কমিটি, মন্ত্রণালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে নির্দেশনা না আসলে হেল বন্ধ করা হবে। আমরা সব রকম পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত আছি।

প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর কয়েক দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়। তবে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. হল বন্ধ করতে চায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

হল বন্ধ করতে চায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

চলমান করোনাভাইরাসের মধ্যে আবাসিক হল বন্ধ করতে চায় দেশের অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কারিগরি কমিটি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা না আসায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।

সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও অনলাইনে ক্লাসের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ইতোমধ্যে বুয়েটের ২৪ শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া হলে অবস্থানকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীও আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থায় দ্রুত আবাসিক হলগুলো বন্ধে সরকারের হস্তক্ষেপ চাইছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে কথা বলে জানা গেছে, করোনার এই ঊর্ধ্বগামীতার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে রাখতে চান না তারা। এতে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বড় ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। আবাসিক হলগুলোতে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীরা থাকেন। এতে একজন সংক্রমিত হলে অন্যদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই অবস্থায় ঝুঁকি নিতে চান না তারা।

তারা বলছেন, করোনা সংক্রমণের হার ৫ শতাংশে নামার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখন সংক্রমণের হার প্রায় ১৫ শতাংশ। তবুও হল বন্ধের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও হলের বাহিরে অবস্থানের সময় তাদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত হচ্ছে না। এই অবস্থায় হলে থাকা তাদের জন্য নিরাপদ নয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, করোনার কারণে আমাদের শিক্ষকরা এখন সশরীরে ক্লাস নিতে চাচ্ছেন না। আমরা অনলাইনে ক্লাস নিতে চাই। এছাড়া আবাসিক হলগুলোও বন্ধ করতে চাই। তবে কারিগরি পরামর্শক কমিটি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা না আসায় এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারছি না।

এদিকে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছে। এমনকি সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণও স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে অনলাইনে নিয়মিত পাঠদান চলছে।

জানতে চাইলে বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, আমাদের আবাসিক হলে অবস্থানরত ২৪ শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের গাড়ি ভাড়া করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে এদের কারণে অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা আবাসিক হল বন্ধের বিষয়টি জাতীয় বিষয়। এখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয় আছে। তাদের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেলে আমরা আবাসিক হল বন্ধ করে দেব।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে কারিগরি পরামর্শক কমিটি, মন্ত্রণালয় কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে নির্দেশনা না আসলে হেল বন্ধ করা হবে। আমরা সব রকম পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত আছি।

প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর কয়েক দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। দীর্ঘ দেড় বছরেরও বেশি সময় পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয়। তবে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন