The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪

চার দফা দাবিতে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে তালা

রাবি প্রতিনিধি : সেশনজট নিরসন, চার মাসে সেমিস্টারসহ চার দফা দাবিতে বিভাগে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল নয়টায় বিভাগে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের চার দফা নিয়ে কথা বলতে থাকেন।

অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা, পরীক্ষা কেন ধীরগতি, কি করছেন সভাপতি, রেজাল্ট কেন দশ মাসে, রেজাল্ট চাই এক মাসে, দুই বছরে দুই সেমিস্টার ,ধিক্কার ধিক্কার, শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা, রুখে দাও, গুড়িয়ে দাও, ১২ মাসে সেমিস্টার, চলবে না, চলবে না, পরিবারের নামে প্রতারণা চলবে না, চলবে না, মিষ্টি কথা বাদ দেন, আমাদের ছেড়ে দেন, আমরা কেন আদু ভাই, জবাব চাই জবাব চাই স্লোগান দিতে থাকেন।

বিভাগের ৩০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী কামরুজ্জামান ফাহাদ বলেন, আমরা আজকের মধ্যেই পরিক্ষার ডেট চাই। আর কোনো সময় দিতে রাজি না। আর এক্সাম পূজার ছুটির আগেই শেষ হওয়া চাই। না হলে এক্সাম দিবো না। আমাদের নেক্সট সেমিস্টারগুলা ৪ মাসে করতে হবে এবং এটার ক্যালেন্ডার ২-১ দিনের মধ্যেই তৈরি করতে হবে। আর আমাদের নিশ্চয়তা দিতে হবে এটা মেনে চলা হবে৷ ( কেননা বিগত সময়গুলাতে দেখেছি যে ক্যালেন্ডারে একটা পরিক্ষার ডেট থাকলে ও ঠিক মতো ক্লাস হয়নি, পরিক্ষা ও হয়নি)

এসময় মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শেখ ফাহিম আহমেদ বলেন, আমরা চাই না ছোট ভাই-বোনেরা আর আমাদের মতো সেশন জোটের মতো মানসিক যন্ত্রণায় থাকুক। কতটা ধীরগতি হলে একটা সেমিস্টার শেষ করতে ১২ মাস লেগে যায়। আমরা চার দফা দাবিতে আজ এখানে দাড়িয়েছি। গত ২২ সেপ্টেম্বর আমরা বিভাগের সভাপতি বরাবর চার দফা পেশ করে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেই। এই চার দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় আমরা বিভাগে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।

চার দফা হলো-
১. ৩০ ব্যাচের ২০২৩ সালের ৩ ডিসেম্বরে কোর্স শুরু হয়। এরপরে ৬ জুন, ২০২৪ সালে ২য় বর্ষ, ২য় সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হয়৷ পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে পরীক্ষা বন্ধ হয়৷ এরপর বিভাগ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা শুরুর কথা বলা হয়। কিন্তু সেটি হয় নি। এরপর আমরা ১৮ সেপ্টেম্বর বিভাগের মত বিনিময় সভায় জানতে পারি, একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রাপ্ত অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ এই পরীক্ষা কমিটির সভাপতি। তিনি প্রশ্ন এবং পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র নিজের কাছে রেখেছেন বলে জানিয়েছে বিভাগের সভাপতি। যার ফলে পরীক্ষা শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরীক্ষা কবে শুরু হবে সেটিও বিভাগ আমাদের স্পষ্ট করে নি।

একজন অন্যায়কারী কত শক্তিশালী হলে একাই একটা ব্যাচের পরীক্ষা বন্ধ করে রাখতে পারে! দিনের পর দিন কেটে যাচ্ছে অথচ কোন সমাধান আসছে না। আমাদের এই এক সেমিস্টার প্রায় ১০ মাসেও শেষ হয় নি। একজন শিক্ষকের কারণে একটা ব্যাচের পরীক্ষা থেমে আছে। যেখানে আমরা ৪ মাসে সেমিস্টার শেষের দাবি জানাচ্ছি সেখানে ১০ মাস হয়ে যাচ্ছে। ব্যাপারটি অযৌক্তিক এবং কোন ভাবে গ্রহণ যোগ্য নয়।

২. ৩১ ব্যাচের ২য় বর্ষ, ১ম সেমিস্টারের ক্লাস শুরু হয় গত বছরের ২৫ নভেম্বর। ক্লাস শুরুর পর প্রায় ১০ মাস হয়ে যাচ্ছে অথচ কোন অদৃশ্য কারণে পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপের ডেট পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে না সেটিও বিভাগ স্পষ্ট করে নি। অথচ রাবির কয়েকটি বিভাগ এবং ঢাবিতে ১২ মাসে ৩টি করে সেমিস্টার শেষ হয়। আমাদের অবস্থা কত করুণ সেটার বোঝার জন্য এর থেকে বেশি কিছু প্রয়োজন হয় না।

৩. অধ্যাপক মোসতাক আহমেদের চারটি গুরুতর অভিযোগ ডকুমেন্টস সহ এনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমরা তার অপসারণের আবেদন করি। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে আমাদের পরে চারুকলার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিলে, প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে। এর মূল কারণ সেই বিভাগের শিক্ষকদের সহযোগিতা। আমাদের বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কি ধরনের সহযোগিতা বা কি কাগজপত্র দেওয়া হয়েছে তা আমাদের স্পষ্ট ভাবে জানাতে হবে।

৪. আমরা প্রত্যেক বর্ষের শিক্ষার্থী ভয়াবহ সেশন জটে পড়েছি৷ বিভাগের কাছে কয়েক দফা আলোচনা করলেও তারা শুধু আমাদের আশ্বাস ই দিয়ে গেছে। কোন কার্যকর পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাই নি। তাই সব সেমিস্টার এখন থেকে পরীক্ষা সহ চার মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। অর্থাৎ এক বছরে তিন সেমিস্টার যাতে শেষ হয় সেটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিভাগের সভাপতির নিকট চার দফা দাবি দিয়ে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থী। তবে তাদের দাবি মেনে না নেওয়া অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.