খুবি প্রতিনিধি : সেশনাল ট্যুর চলাকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী কর্তৃক খুবির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও দুই শিক্ষককে লাঞ্ছিত এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে একজনের মাথায় গুরুতর আঘাতসহ অন্তত ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) বিকেলে খুবির পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের সেশনাল ট্যুর চলাকালে গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সাফারি পার্কের ভিতরে ঢোকার সময় সেখানে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী খুবির এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে। এবিষয়ে তাদের সাথে কথা বলতে গেলে তারা নিজেদের ছাত্রলীগ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেয়। ঘটনার কারণ জানতে চাইলে তারা গালিগালাজ শুরু করে। এসময় সেশনাল ট্যুরের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক বিষয়টি সমাধানের জন্য এগিয়ে গিয়ে তার পরিচয় দিলে তাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে এবং হেনস্তা করে। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ইট নিয়ে তার দিকে তেড়ে আসে। এসময় তাকে উদ্ধার করতে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে ইট দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর মাথায় আঘাত করে এবং সেখানে থাকা শিক্ষার্থীদের কিল-ঘুষি ও গাছের কাটাযুক্ত ডাল দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এতে খুবির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান সায়মন, হাসিবুজ্জামান, সাব্বির রহমান সাগর, হোসনে মোবারক, সুমিত কুমার সেন, প্রান্ত সরকারসহ ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়। সেখানে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীরা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও আক্রমণ করা হয়।
এই ঘটনার পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে হেয় করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিপার্টমেন্টর শিক্ষার্থী আবির উজ জামান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন। পরে তা সরিয়ে নেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের থেকে পাওয়া ছবি ও ভিডিও ফুটেজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী শিহাব এর নাম পরিচয় জানা যায়। শিক্ষার্থীরা জানায় শিহাব নামের ওই শিক্ষার্থী খুবির ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে এবং তার নেতৃত্বে সবাইকে নিয়ে হামলা করে।
সংশ্লিষ্ট সেশনাল ট্যুরের কোর্স শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ ইউসুফ আল হারুন বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা কিছু করে নাই। পার্কের ভিতরে আমাদের মেয়েরা যাওয়ার সময় তাদের বিরক্ত করলে তাদের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। আমি এসময় তাদের ঠেকানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সেইসময় তারা আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করে, এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. শরীফ হাসান লিমন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইভটিজিং এবং মারধরের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আশাকরি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
উপর্যুক্ত ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ফিরলে তাদের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন- উক্ত নিন্দনীয় বিষয় সম্পর্কে তিনি নিউজ দেখে অবগত হয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। লিখিত অভিযোগ পেলে ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিবেন। এছাড়াও তিনি উক্ত ঘটনার জন্য গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন। নিজ ক্ষমতাবলে হলেও এ কাজের সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।