কুবি প্রতিনিধিঃ নিয়োগ নীতিমালা বহির্ভূত অবৈধ ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বিজ্ঞপ্তি বাতিল, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা এবং বর্তমান উপাচার্যের আমলে ইতিপূর্বে নিয়োগ, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণে যত অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্য হয়েছে সেগুলোর নিষ্পতি করার পর নীতিমালা অনুসরণ করে পুন:বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে যথাযথভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করার দাবি জানিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
৫ মার্চ (মঙ্গলবার) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান উপাচার্য যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণে সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও বৈষম্য তৈরী করেছেন। যার কারণে শিক্ষকরা পদে পদে বঞ্চনা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মার্কেটিং, ইংরেজিসহ আরো কয়েকটি বিভাগে নিয়োগ নীতিমালার শর্ত উপেক্ষা করে বিদ্যমান শিক্ষকদেরকে বঞ্চিত করে অবৈধভাবে নতুন নিয়োগ প্রদান করে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। শিক্ষকদের মতামতকে অগ্রাহ্য করে একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা না করেই অভিন্ন নীতিমালা শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। বিশেষ প্রার্থীকে নিয়োগ দানের জন্য অবৈধ শর্ত আরোপের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নীতিমালা কিংবা অভিন্ন নীতমালার কোনটিই অনুসরণ করা হয়নি। শিক্ষকরা আশংঙ্কা প্রকাশ করছেন এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অযোগ্য প্রার্থীদেরকে নিয়োগ দিয়ে যোগ্য প্রার্থীদেরকে বঞ্চিত করা হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পদোন্নতির যে প্রচলিত নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান আছে সেই নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষকরা আবেদন করলেও ব্যক্তি বিশেষকে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে আবার কাউকে পদোন্নতি বঞ্চিত করা হচ্ছে। যাদেরকে পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে নীতিমালা বহির্ভূত অবৈধ শর্ত আরোপ করা হচ্ছে। এমনকি কারো কারো ক্ষেত্রে পদোন্নতিতে কোন শর্তই আরোপ করা হচ্ছে না। শুধু তাই নয় স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রেও উপাচার্য মারাত্মক বৈষম্য তৈরী করছেন। দুর্বল গবেষণা প্রকাশনার কাল্পনিক দোহাই দিয়ে কাউকে স্থায়ী করছেন আবার কাউকে প্রতিহিংসাবশত বঞ্চিত করছেন।
আবার একই প্রতিষ্ঠানের প্রকাশনা দিয়ে কাউকে পদোন্নতি দিচ্ছেন, কাউকে স্থায়ীকরণ ও করছেন না। এতে প্রায় প্রতিটি বিভাগেই শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং শিক্ষকরা চরমভাবে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন। এমন ঘটনাও ঘটেছে যে, কোন কোন বিভাগে শিক্ষকরা উচ্চতর পদের বিপরীতে কিংবা অস্থায়ী পদে থাকলেও তাদেরকে স্থায়ী না করে স্থায়ী পদে নতুন শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে বৈষম্য তৈরী করা হচ্ছে। শিক্ষকরা এসব বৈষম্য দ্রুত নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য শিক্ষক সমিতির কাছে দাবী জানিয়েছেন।
এবিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবু ড. মো. আবু তাহের বলেন, এমনিতে উপাচার্যের অনিয়ম, দূর্নীতি ও বৈষম্য নিয়ে শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপচার্য যে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে সেটি আইনবহির্ভূত। আমরা শিক্ষক সমিতি থেকে দাবি জানিয়েছি বৈধ নীতিমালা অনুসরণ করে পুনরায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য। অন্যথায় শিক্ষকরা প্রতিহত করবে।