নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে নিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে (ইবি) নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। বৃহস্পতিবার ইউজিসি’র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে (কৃষি ও জিএসটি) গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণের সঙ্গে কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর-এঁর সভাপতিত্বে কমিশনে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গুচ্ছ পদ্ধতি একটি প্রমাণিত সফল পদ্ধতি, এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষা মন্ত্রীর অভিপ্রায় রয়েছে, এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে বিধায় গুচ্ছ থেকে বের না হয়ে গুচ্ছের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। ফলে মোট ২৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে জিএসটি গুচ্ছভুক্ত করা হয়।
এদিকে ভর্তির কার্যক্রম শুরু করার জন্য ইবির উপস্থিতিতে জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যায়সমূহের ভর্তি কমিটির একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে পরবর্তীতে গুচ্ছে না থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলে সেটা কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়। ফলে বিষয়টি নিয়ে কমিশন হতে জিএসটি গুচ্ছভুক্ত ভর্তি কমিটির আহবায়ক এঁর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বিষয়টি অবহিত নন মর্মে মৌখিকভাবে জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ০৬ জন শিক্ষক প্রতিনিধির সঙ্গে কমিশন কর্তৃপক্ষ এক মতবিনিময় সভার আহবান করেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ০৬ জন শিক্ষক প্রতিনিধির স্বাক্ষরিত পত্রে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত না হতে পারার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে কমিশনকে অবহিত করা হয়। যেটি কমিশনের নিকট খুবই অনাকাঙ্খিত মনে হয়েছে।
তবে গত ১৪ জানুয়ারি কমিশনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছভুক্ত হয়ে পূর্বের তিনটি ভর্তি পরীক্ষার ধারাবাহিকতায় জিএসটি গুচ্ছের আওতায় ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের ৬ শিক্ষক নেতাকে শনিবার ডেকেছেন। সেখানে আলোচনার উপর ভিত্তি করে আমরা গুচ্ছের বিষয়ে জানাব।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমি নির্দেশনা টা দেখেছি। আমি এখন বাইরে আছি আগামীকাল এসে সবার সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিব। আর সরকার কোন নির্দেশ দিলে এর বিরুদ্ধে যাওয়া আমাদের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মুশকিল হয়ে যায়।
নির্দেশনার বাইরে গিয়ে স্বতন্ত্র ভর্তি পরিক্ষা নিতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আসলে আমি জানি না। যেখানে আমরা শতভাগ সরকারের উপর নির্ভরশীল সেখানে বিচার-বিশ্লেষণ না করে আমি সিদ্ধান্ত বলতে পারি না।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি গুচ্ছের বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে ভর্তি কার্যক্রমে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। পরে সভার সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে উপাচার্যকে জানানো হয়। পরে ২৯ জানুয়ারি একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।