বাকৃবি প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের নিজস্ব তত্ত্বাবধায়নে উৎপাদিত মুরগির ফাউল কলেরা ভ্যাকসিনের সিড প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ওই সিড হস্তান্তর অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মারজিয়া রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিষয়ক পরিচালক ড. মো. মোস্তফা কামাল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়ালসহ ওই বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
জানা যায়, মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের লাইভস্টক এন্ড পোল্ট্রি ভ্যাকসিন রিসার্চ এন্ড প্রোডাকশন সেন্টার ১৯৮৫ সাল থেকে ফাউল কলেরা ও ২০১২ সাল থেকে বাইভ্যালেন্ট সালমনেলা নামের দুইটি ভ্যাকসিন স্বল্পমূল্যে বিক্রি করে থাকে। ভ্যাকসিন দুটির মূল্য প্রান্তিক পর্যায়ে কম রাখার জন্য বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত না করে সরাসরি খামারিদের কাছে এটি বিক্রি করা হয়ে থাকে। ১ হাজার ডোজের দাম মাত্র ১ হাজার টাকা। মানে এক টাকায় এক ডোজ। দাম কম কিন্তু কার্যকারিতা বেশি হওয়ায় এটির গ্রহণযোগ্যতা প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক বেশি।
আরো জানা যায়, বর্তমানে দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়নে ও জাতীয় স্বার্থের কথা চিন্তা করে বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে ফাউল কলেরা ভ্যাকসিনের সিড প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ ভ্যাকসিনের সম্প্রসারণ হলে দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও উচ্চতর গবেষণা ও শিক্ষার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগ তাদের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। বিভাগের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে সারা দেশের প্রান্তিক খামারিদের কাছে স্বল্পমূল্যে কলেরা ও সালমোনেলা রোগের ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হচ্ছে। ভ্যাকসিন বিক্রির লভ্যাংশ থেকেই ছয়তলা বিশিষ্ট রিসার্চ, টেস্টিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ল্যাবটি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উচ্চতর গবেষণা, গবেষণার মান যাচাই ও একাডেমিক শিক্ষার কাজেও ব্যবহৃত হবে বলেও জানা যায়।
অনুষ্ঠানে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিদেশ থেকে ৪১ ধরণের ভ্যাকসিন আমদানি করে থাকে। আমাদের সকল ধরণের সক্ষমতা রয়েছে দেশে সব ধরণের ভ্যাকসিন উৎপাদন করার। এটা করলে দেশে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চয় করা সম্ভব। বাকৃবিকে একটা ব্র্যান্ডে রূপান্তর করতে হবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বাকৃবি একসাথে কাজ করলে দেশের প্রাণিসম্পদের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। বাকৃবির সকল ফ্যাকাল্টি যদি উৎপাদনমুখী গবেষণা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের উৎস সৃষ্টি করতে পারে তাহলে বাকৃবিকে র্যাংকিংয়ে এগিয়ে যাবে।