বাকৃবি প্রতিনিধি: বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩তম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপিত হয়েছে । দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, ব্রহ্মপুত্র নদে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ এবং ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণসহ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস বাস্তবায়ন কমিটি।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যালিপ্যাডে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী ও ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ। এরপর পায়রা অবমুক্ত করার মাধ্যমে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন ঘোষণা করেন উপাচার্য । শোভাযাত্রাটি হ্যালিপ্যাড থেকে শুরু হয়ে আমতলা ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দিয়ে বঙ্গবন্ধু চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক ও বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করে। এরপর কৃষি শিক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন করা হয়।
পরবর্তীতে ব্রহ্মপুত্র নদে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে এরপরে আবাসিক হল গুলোতে বৃক্ষরোপণের জন্য হল প্রাধ্যক্ষদের কাছে বৃক্ষের চারা হস্তান্তর করা হয়।
পরবর্তীতে সকাল ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশবিদ্যালয়ের অর্জন, ‘শিক্ষা,গবেষণা ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি’ শিরোনামে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় স্ব স্ব অনুষদীয় গবেষণা, অর্জন ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা বিষয়ে উপাস্থাপনা করেন অনুষদীয় ডিনবৃন্দ।
এসময় দেশের কৃষির উন্নয়নে বাকৃবির অবদান তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আগে সাত কোটি মানুষ খাবার পেতো না এখন ১৮ কোটি মানুষ পেট ভরে খেতে পারে। এই অবদান বাকৃবি এবং তার গ্রাজুয়েটদের। আগে বছরে ধান উৎপাদন হতো দুইবার এখন ৩ বার উৎপাদন হয়। পূর্বে খড়া, অতিবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি এবং বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হতো। এখন কৃষকরা জানেন এগুলো কিভাবে মোকাবেলা করতে হয়। এই মোকাবেলা তাদের শিখিয়েছেন বাকৃবির কৃষিবিদরা। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা সূচকে ক্ষুধামুক্ত দেশ গঠন এবং বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে বিশে্বর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষ দশে অবস্থান করে। এসবই বাকৃবির অবদান। বাকৃবি থেকে প্রকাশিত গবেষণাপত্রগুলো বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে হলে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত থিসিস জমা দিতে হবে। খুব দ্রুতই গ্যালারি শ্রেণীকক্ষগুলোতে শীততাপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদের সভাপতিত্বে সভার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক ও মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল মনসুর, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল আলম, কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রব্বানী, ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আউয়াল, পশুপালন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খন্দকার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা কমিটির সহ-সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. মো. আবু হাদী নীর আলী খান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মো. অলিউল্লাহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাদ জুম্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মসজিদ ও উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।