The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪

ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা সন্তানের বটবৃক্ষ হয়ে

মো: হৃদয় ইসলামঃ বাবা! এমন একটি শব্দ যেটি শুনলেই শরীরে এক অন্যরকম ভাবনা, এক অদ্ভুত অনুভূতির সৃষ্টি হয়। যেমন বাবা মানেই বীর, বাবা মানেই সাহসী যোদ্ধা, বাবা মানেই জীবন নেপথ্যের নায়ক, বাবা মানেই আলাদা এক সম্মান, আলাদা এক মর্যাদা, আলাদা এক অস্তিত্ব।

বাবা যেমন প্রচণ্ড রাগী হন তেমন সরলও হন। অর্থাৎ সন্তানের প্রতি বাবা যেমন কঠোর অবস্থান নেন তেমনি হৃদয় চূর্ণ করে হলেও সন্তানের চাওয়াগুলো পূর্ণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। বাবা আগে থেকেই অনুধাবন করতে পারেন যে সন্তান কি চায়। কারণ সন্তান বাবারই এক অংশ। তাই কঠোরতা ও কমলতার সংমিশ্রণে বাবা সর্বদা নিজেকে সন্তানের ভালোর জন্য বিলীন করে দেন।

বাবা সম্পর্কে দিমিত্রি থে স্টোনহার্ট বলেছেন, “একজন বাবা বলে না যে সে সন্তানকে ভালোবাসে বরং তিনি দেখিয়ে দেন যে তিনি তোমাকে ভালোবাসেন।” সন্তানের ভালোর জন্য বাবা দিনরাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে যান। তার এই পরিশ্রম স্বার্থহীন। তিনি বিনিময়ে কোন প্রতিদাব চান। শুধু চান তার সন্তান ভালো থাকুক।

আমার বাবা একজন কৃষক। তিনি গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা শীতে ক্লান্তিহীন পরিশ্রম করেন। পীঠে রক্তজবার মতো ক্ষত কিংবা পা ফেটে চৌচির হয়ে গেলেও কখনো থেমে যায় না আমার বাবার পরিশ্রমী হাত। কারণ, তিনি আমাকে ও আমার ভাইবোনকে সফল হিসেবে দেখতে চান। তিনি কখনো আমাকে মুখে বলে প্রকাশ করেননি, কিন্তু তিনি কখনো আমার চাওয়াগুলোকে অপূর্ণ রাখেন নি। যেমনটি স্টোনহার্ট বলেছেন।

আজকে আমি দেশের একটি সনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এ পর্যন্ত আসতে আমার বাবা ও মায়ের ভূমিকা শোধহীন ঋণ। আমার বাবা আমার জীবন নেপথ্যের সৈনিক। আমার বাবা মানে এলাকায় আমার এক বিশেষ সম্মান, বিশেষ মর্যাদা। আমার বাবা আমার অহংকার, আমার জীবনের নেপথ্যের নায়ক। আমার বাবা আমার দেখা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অভিনেতা। তিনি নিজেকে বদলে ফেলতে পারেন মুহূর্তেই। আমার হাসিমাখা মুখের জন্য তিনি হাসিমুখে করতে পারেন সবকিছু-তার সাধ্য থাকুক বা না থাকুক।

আমার বাবার এই চেষ্টায় থাকে মলিনতার মাঝে ঝলকানো হাসি। তিনি কখনো বুঝতে দেন না যে তিনি কষ্টে আছেন। তিনি দুঃখের সময়েও হাসেন আবার সুখের সময়ও হাসেন। তবে বাবার জীবনে দুঃখের অধ্যায়টাই বড়। সময় পেলেই চেষ্টা করি বাবার কাজে সহায়তা করার। এক্ষেত্রে বাবার কষ্ট অনেকটা লাঘব হয়ে যায়। বাবার সাথে ধানক্ষেতের পাশে বসে ভাত খাওয়ার সেই জীবন্ত মুহূর্তগুলো মনে পড়ে যায়। সেই খাওয়ার আর ঘরে বসে বা কোনো রেস্টুরেন্টে খাওয়ার মধ্যে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। আমার বাবা আমাকে কখনো অবিশ্বাস করেন নি। তিনি আমার প্রতি একনিষ্ঠ বিশ্বাস রেখেছেন যা সকলে সবার প্রতি রাখতে পারে না। আমার প্রতিটি সিদ্ধান্তেই আমার বাবা ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।

আমার বাবা আমার কাছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা। তিনি আমার জন্য পাড়ি দিতে পারেন সাত সমুদ্র তের নদী, করতে পারেন সর্বোচ্চ ত্যাগ। বাবার এত এত পরিশ্রম, ত্যাগ আর ভালোবাসা লাভের পরেও বাবাকে কখনো বলা হয় নি যে বাবা তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।

আজকে বাবা দিবসে বাবার কাছে অঙ্গীকার করতে চাই, বাবা, আমি কখনো নষ্ট হব না, তোমার মন মতো নিজেকে গড়ে তুলতে আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করব। আর তোমাকে বলছি, তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল বাবা সন্তানের বটবৃক্ষ হয়ে।।

শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.