নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিচালক বিহীন দীর্ঘ এক মাস ধরে চলছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইসিটি সেল। গত ৪ এপ্রিল ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. আহসানুল হক আম্বিয়া। এরপর থেকে এক মাসের অধিক সময় ধরে পরিচালক ছাড়া চলছে আইসিটি সেল। এদিকে, মাস পেরিয়ে গেলেও তার পদত্যাগপত্র প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত হয়নি বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন। ভিসি স্যার পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করা পর্যন্ত আইনানুযায়ী তিনিই ওই সেলের পরিচালক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে র্যাগিংয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটির কাছে সিটিটিভি ফুটেজ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছিল কর্তৃপক্ষ। পরে এ বিষয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে থাকা ক্যামেরাগুলোর প্রতি নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর প্রেক্ষিতে গত ৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত একটি চিঠি সূত্রে জানা গেছে, হল কর্তৃপক্ষের ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা এবং কীভাবে সিসিটিভি ক্যামেরা সিস্টেম আরো কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যায় সে বিষয়ে আইসিটি সেলের পরিচালক ড. আহসানুল হক আম্বিয়াকে দায়িত্ব দিয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করেন ভিসি। একই দিনে অপর একটি চিঠিতে আইসিটি সেলের অধীনে পরিচালিত সিসিটিভি ক্যামেরা সিস্টেমের পাসওয়ার্ড ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের চাবি জরুরি ভিত্তিতে প্রক্টরকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়।
এ বিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, চিঠি পাওয়ার পর আমরা প্রক্টরিয়াল বডি মিটিং করেছিলাম। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, আমরা যেহেতু টেকনিক্যাল জ্ঞানসম্পন্ন না তাই টেকনিক্যাল জ্ঞানসম্পন্ন কাউকে এটার দায়িত্ব দেওয়া হোক। পরে আমি মিটিংয়ের রেজুলেশনসহ কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছিলাম।
এরপর ১লা এপ্রিল রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আইসিটি সেলের অধিনে পরিচালিত সিসিটিভি ক্যামেরা সিস্টেমের পাসওয়ার্ড ও নিয়ন্ত্রণ কক্ষের চাবি দপ্তরটির সিস্টেম এনালিস্ট ড. নাঈম মোরশেদকে বুঝিয়ে দিতে বলা হয়। এর তিনদিন পর ৪ এপ্রিল দফতরটির পরিচালক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। উর্ধ্বতন হয়ে অধস্তনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জের ধরেই তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
তবে পদত্যাগপত্রে তিনি পদত্যাগের কারন হিসেবে ‘ব্যক্তিগত কারণ’ উল্লেখ করেছেন। এ বিষয়ে সেলের পরিচালক প্রফেসর ড. আহসানুল হক বলেন, ব্যক্তিগত কারণটা ব্যক্তিগতই থাক। আমি পদত্যাগের পর থেকে আর ওই দায়িত্ব পালন করিনি। ভিসি স্যার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন কিনা এ বিষয়ে আমি জানিনা। কিন্তু পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পরে আমি এখনো কোনো রিপ্লাই পাইনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ওই ঘটনার সময় (ছাত্রী নির্যাতন) আইটির নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব উনার কাছে ছিল। পরে যারা এই নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিল তাদের অবহেলার কথা বলেছিল। পরে ওই নিয়ন্ত্রণ কক্ষের চাবি উনার কাছ থেকে নিয়ে নেন। অনেকটা অভিমানও হতে পারে। এ বিষয়ে উনার সাথে এখনো আমার খোলামেলা আলাপ হয়নি। এই মূহুর্তে আমাদের সবাই ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। গতমাসে অতিরিক্ত ব্যস্ততার কারণে বিষয়টি নিয়ে ভাবা হয়নি। আমি এটা মূলত আমাদের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর সাহেবের দায়িত্বে দিয়েছি। অচিরেই আমরা বিষয়টির সমাধান করবো।