মো. মোস্তফা (৫০) বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষক হিসাবে ৫০০ টাকা বেতনে সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন। অভাবের সংসারে হাল ফেরাতে সিদ্ধান্ত নিলেন শিক্ষাকতার পেশা ছেড়ে কৃষি কাজ করবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষাকতার পেশা ছেড়ে ফিরলেন পারিবারিক কৃষিতে। কষ্ঠের ফল ঘরে উঠতে তার বেশি সময় লাগেনি। কৃষিকাজ করে তিনি এখন সফল। মোস্তফাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর আমানউল্যা ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে। মোস্তফা এ বছর ২০ একর লবণাক্ত পতিত জমিতে সূর্যমুখী আবাদ করেছেন ।
কৃষক মো. মোস্তফা বলেন, এই মাঠে আমার দাদা কৃষি কাজ করতেন। পরবর্তীতে আমার বাবা কৃষিকাজ করেছেন। আমি ৯১ সাল থেকে কৃষি কাজ শুরু করি। এর আগে দীর্ঘদিন বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেছি। আমার কাছে শিক্ষকতা ভালো লাগতো না কেননা এখানে বেশ কিছু কৃষি জমি পড়ে থাকতো। এরপর চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজ শুরু করি। ছেলেমেয়েকে লেখাপড়া করাতে পারছি। এখন মাসে ১৫-১৬ হাজার টাকা থাকে আমার। এতে করে আমার সংসার ভালোভাবে চলছে। আলহামদুলিল্লাহ আমার জীবন ভালো কাটছে।
কৃষক মো. মোস্তফা আরও বলেন, সূর্যমুখীতে খরচ কম এবং তুলনামুলক ভাবে লাভ বেশি। প্রতি একরে সার, বীজ, চাষ সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ পড়ে। আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি একরে ১৫ মণ সূর্যমুখী উৎপাদন হয়। মণ প্রতি সূর্যমুখীর দাম ৩ হাজার হলে মোট বিক্রি করা যায় ৪৫ হাজার টাকার সূর্যমূখী। এখান থেকে খরচ বাদ দিলে ৩০ হাজার টাকার মত লাভ করা যায়।
সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনঅর রশিদ বলেন, অনাবাদি জমিকে চাষের আওতায় আনা এবং আগামী তিন বছরের মধ্যে তেল ফসলের ৪০ শতাংশ স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছি। এ বছর উপজেলা জুড়ে মোট ২১০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। আমরা ১৪০০ কৃষককে বীজ এবং সার প্রদান করে থাকি। লবণাক্ত জমিতে কোনো পানি ছাড়াই সূর্যমুখী আবাদ সম্ভব।