The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ২২শে অক্টোবর, ২০২৪

পারিবারিক এবং সামাজিক সম্পর্কগুলি পুনরুদ্ধার করে ঈদ-উল আজহা

পবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ ঈদুল আজহা আত্মত্যাগের প্রেরণায় উজ্জীবিত এক অনন্য আনন্দ উৎসব। শিক্ষার্থীদের কাছে এই উৎসব সারাবছরের ব্যস্ততায় ভরা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে একটুখানি স্বস্তির বার্তা নিয়ে আসে। ক্লাসে ক্লাসে ছুটোছুটি আর অ্যাসাইনমেন্টের ডেডলাইনের চিন্তা সাময়িক মাথা থেকে ফেলে শিক্ষার্থীরা ফিরে যায় তাদের নিজ নিজ বাড়িতে। সবকিছু গুছিয়ে টিকেট কেটে সুদূর এক পথ পাড়ি দিয়ে তবেই শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফেরে। তারপরও দিনশেষে ফেরার যে এই এক শান্তি, পরিবারের সাথে উৎসবের খুশি ভাগাভাগি করে নেয়ার যে তৃপ্তি, তার কাছে অন্য সব কষ্টই ম্লান হয়ে যায়।

ছুটিতে পরিবারের সঙ্গে কেমন সময় কাটছে এবং ঈদ-উল আজহার মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করছে পবিপ্রবিয়ানরা।

“সম্প্রীতির বন্ধনে ঈদ”

মুসলমানদের জীবনে ঈদুল আজহার গুরুত্ব ও আনন্দ অপরিসীম। আমাদের দেশে কোরবানির ঈদে নতুন করে সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হয়। ঈদুল আজহা এলেই মানুষ সব ভেদাভেদ ভুলে ও পূর্বশত্রুতা মিটমাট করে এক হয়ে যায়। নিজেদের আনন্দে অন্যদের শরিক করা ঈদুল আজহার শিক্ষা। উৎসব হিসেবে পবিত্র ধর্মীয় অনুভূতি এর সাথে সম্পৃক্ত। তাই ঈদ শুধু আনন্দের উৎস নয়; বরং এর সাথে জড়িয়ে আছে কর্তব্যবোধ, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের বৈশিষ্ট্য। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সম্পৃক্ততার ভাবটি এখানে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এলাকার লোকেরা ঈদের নামাজের জন্য নির্দিষ্ট ঈদগাহে সমবেত হয়। এতে সবার মধ্যে একাত্মতা ও সম্প্রীতি ফুটে ওঠে- ইসলামের মহান ভ্রাতৃত্ববোধে সবাই উদ্দীপ্ত হয়। পরস্পর কোলাকুলির মাধ্যমে সব বিভেদ ভুলে গিয়ে পরস্পর ভাই বলে গৃহীত হয়। ধনী-গরিবের ব্যবধান তখন প্রাধান্য পায় না। ঈদের আনন্দ সবাই ভাগ করে নেয়। এর ফলে ধনী-গরিব, শত্রু-মিত্র, আত্মীয়স্বজন সবাই পরস্পর ভ্রাতৃত্বের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে থাকে। ঈদ মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভোলার জন্য, মানুষের মধ্যে প্রীতির বন্ধন সৃষ্টি হওয়ার জন্য পরম মিলনের বাণী নিয়ে আসে। পরোপকার ও ত্যাগের মহান আদর্শে অনুপ্রাণিত হয় মানুষের মন।

মোঃ ফাহিম, এএইচ, পবিপ্রবি।

“কোরবানি ঈদের শিক্ষা ও তাৎপর্য”

ঈদ-উল-আজহা, যা কোরবানি ঈদ নামেও পরিচিত, ইসলামের একটি প্রধান উৎসব যা হজরত ইবরাহিম (আ.) এর আল্লাহর প্রতি অটল বিশ্বাস এবং তাঁর পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.) কে কোরবানি দেওয়ার প্রস্তুতির স্মরণে পালিত হয়।

কোরবানি আমাদের শেখায় যে, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা এমন কিছু যা আমাদের সবকিছুর উপরে থাকা উচিত। কোরবানি আমাদের আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের গুরুত্ব স্মরণ করায়। আমাদের উচিত আমাদের সম্পদ গরিব এবং অভাবীদের সাথে ভাগ করে নেওয়া। কোরবানি আমাদের মনের মধ্যে থাকা অহংকার এবং স্বার্থপরতা দূর করার প্রতীক। কোরবানি আমাদের শেখায় যে, আমাদের উচিত ধৈর্য ধরে আল্লাহর প্রতি আমাদের প্রতিজ্ঞা রক্ষা করা।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন: “হে নবী (সা.)! আপনি আপনার রবের উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন।”

সুমাইয়া আমিন, এএইচ, পবিপ্রবি।

“ঈদুল আজহা: কোরবানির মহিমা”

ঈদুল আজহা, বা কোরবানির ঈদ, মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব, যা হজরত ইব্রাহিম (আঃ) এর ত্যাগের স্মরণে পালিত হয়। এই দিনে মুসলমানরা পশু কোরবানি দেন এবং মাংস পরিবার, প্রতিবেশী ও দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করেন। এটি আত্মত্যাগ ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের প্রতীক এবং সমাজে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা ছড়ায় এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলে। দিনটি ঈদের নামাজ, শুভেচ্ছা বিনিময়, কোরবানি, ও বিশেষ খাবারের মাধ্যমে উদযাপিত হয়। এই উৎসব আমাদের মানবিক মূল্যবোধকে সমৃদ্ধ করে এবং একটি সুখী, শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সহায়তা করে। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে।

মোঃ শাহরিয়ার হোসাইন মেরাজ, এএইচ, পবিপ্রবি।

“কোরবানির শিক্ষা”

কোরবানির মূল শিক্ষা কি শুধু পশু জবাই করা? মূল শিক্ষা হলো চতুষ্পদ জন্তু জবাইয়ের সাথে সাথে নিজের অন্তরের পশুকেও জবাই দেওয়া। অন্তরের পশু বলতে- হিংসা, বিদ্বেষ, ক্রোধ, লোভ লালসা এসবের জবাই দেওয়া। কোরবানি মানে সুনাম বা খ্যাতি অর্জন নয়- পূর্ণ আন্তরিকতা, একাগ্রতা ও ভক্তি সহকারে আল্লাহ তায়ালার আদেশ পালন করা। পবিত্র কুরআনের সূরা হজ্ব এ আল্লাহ তায়ালা বলেন- “পবিত্র মক্কা মুআজ্জমায় কোরবানি করা জন্তুকে আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর একটি নিদর্শন করেছি। এর মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ”। আমাদের এমনও প্রতিবেশী থাকে যারা হয়তবা গোশত ক্রয়ও করতে পারে না, কোরবানির মাধ্যমে তাদের ঘরেও গোশত পৌঁছে দেওয়া যায়। এতে প্রতিবেশীর হকও পালন করা হয়ে যায়। সর্বোপরি মুসলিম বিশ্বে এক ভ্রাতৃত্ব ও শান্তির হাওয়া বিরাজ করে। কোরবানি পরবর্তী শিক্ষা হলো আমাদের চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। পশুর রক্ত, চামড়া বা উচ্ছিষ্ট অংশ যেখানে সেখানে না ফেলে ডাস্টবিন বা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে আমাদের পরিবেশ সুন্দর রাখা। তাই আসুন আমরা সবাই সচেতন হই এবং কোরবানির মাহাত্ম্য ও যথার্থতা উপলব্ধি করি।

মাহমুদুল হাসান, ডিভিএম, পবিপ্রবি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.