ঢাবি প্রতিনিধি: “তামাক বিরোধী ক্যাম্পেইনে তরুণ প্রতিনিধিদের অ্যাডভোকেসি” শীর্ষক সেমিনারে সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য কঠোরতর তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রবর্তন করতে হবে বলে মন্তব্য করে ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডব়্প)।
আলোচনায় তরুণরা আরও কঠোর তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রবর্তনের জন্য তাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় অবস্থিত ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডব়্প) অফিসে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
উক্ত কর্মশালাটি ডব়্প এর সাত দিনব্যাপী কর্মশালা পরিচালনা উদ্যোগের অংশ। ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩০ জন শিক্ষার্থী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। সপ্তম দিনে অংশগ্রহণকারীরা সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাসের জন্য তাদের জরুরি দাবি প্রকাশ করেন।
ডব়্প প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর রুবিনা ইসলাম কর্মশালাটি পরিচালনা করেন।
সংশোধিত আইন প্রয়োগের গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, একটি স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের তরুনদের প্রাপ্য, এর শুরুটা হবে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের মধ্য দিয়েই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৭০% মানুষ কম টাকার সিগারেট খায়। তামাকের মূল্য বৃদ্ধি পেলে সিগারেট কেনা তাদের জন্য গুরুতর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করবে।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা প্রস্তাব দেন যে এই নিম্ন স্তরের সিগারেটের দাম বাড়ালে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কার্যকরভাবে কমে যাবে। ফলে তাদের মধ্যে তামাক সেবনের হার হ্রাস পাবে।
তামাক পণ্যের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৬টি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করে ডব়্প।
এই প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে: খুচরা সিগারেটের বিক্রয় নিষিদ্ধ করা, বিক্রয় স্থানে তামাক পণ্যের দৃশ্যমানতা সীমিত করে বিজ্ঞাপন কমানো, তামাক কোম্পানির কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্ব (CSR) উদ্যোগ নিষিদ্ধ করা, ইলেকট্রনিক সিগারেট এবং অন্যান্য নতুন তামাক পণ্যের আমদানি, উৎপাদন এবং বিপণন নিষিদ্ধ করা, তামাকের সমস্ত রকম খুচরা এবং খোলা বিক্রয় নিষিদ্ধ করা, তামাক প্যাকেজিংয়ের গ্রাফিক স্বাস্থ্য সতর্কীকরণ ৫০% থেকে ৯০% বাড়ানো এবং তামাক ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
কর্মশালায় বর্তমান তামাক করের কার্যকারিতা, এই কর বাড়ানোর স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক সুবিধা, তামাক ব্যবহারের বিরুদ্ধে কৌশল এবং তামাক সেবনের সাথে সম্পর্কিত বিস্তৃত স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
আলোচনা শেষে কীভাবে তামাকমুক্ত সমাজ গঠন করা যায় এবিষয়ে মতামত তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত, ডব়্প দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিষ্ঠানটি এর উদ্ভাবনী মাতৃত্ব ভাতা কর্মসূচির জন্য পরিচিত। বর্তমানে ডব়্প তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এবং তামাক পণ্যের উপর কর বৃদ্ধির জন্য প্রচার ষাচালাচ্ছে, যা সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDGs) অর্জনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।